কেন সব স্টেশনের নাম হলুদ-কালোতে লেখা হয়? ছবি: সংগৃহীত।
ভারতে রেলের সব স্টেশনের নামই লেখা হয় হলুদ বোর্ডের উপরে কালো রং দিয়ে। দেশের যে কোনও স্টেশনে গেলেই দেখতে পাবেন, এর ব্যতিক্রম হয় না। কখনও মনে হয়েছে, কেন স্টেশনের নাম হলুদের উপর কালো রঙের অক্ষর দিয়েই লেখা হয়? রহস্যটা কী?
হলুদ বোর্ডের উপর কালো রং দিয়ে স্টেশনের নাম কেন লেখা হয়, তার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। কয়েকটি বিজ্ঞানভিত্তিক। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কারণগুলি কী কী।
প্রথমত, বলে রাখা ভাল আলোক বর্ণালিতে তরঙ্গদৈর্ঘ্যের দিক থেকে হলুদ রং তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সবুজ ও কমলার মাঝখানে। লাল রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি। অনেক দূর থেকে এই রং দেখা যায়। তাই সিগন্যালে বা বিপদ সঙ্কেত দেওয়ার সময়ে, লাল রঙেরই ব্যবহার হয়। হলুদ রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৫৭০-৫৮০ ন্যানোমিটার। হলুদ রংও দূর থেকে চোখে পড়ে। এবং অনেকটা উজ্জ্বল ও স্পষ্ট ভাবে। উজ্জ্বল রঙের এই বোর্ড ট্রেনের যাত্রীরাও দূর থেকে দেখতে এবং পড়তে পারেন। ফলে তাঁদেরও স্টেশন বুঝতে সুবিধা হয়।
সবচেয়ে বেশি সুবিধা হয় ট্রেনচালকের। স্টেশনে ট্রেন ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই হলুদ বোর্ডের উপর লেখা স্টেশনের নাম চোখে পড়ে চালকের। ট্রেনের গতিও সেই মতোই কমাতে থাকেন তিনি। দ্রুতগামী ট্রেন যদি কোনও স্টেশনে না-ও দাঁড়ায়, তা হলেও হলুদ বোর্ডটি দেখতে পেয়ে সতর্ক থাকেন চালক। দূর থেকেই চালকের বুঝতে সুবিধা হয় যে ট্রেন কোনও স্টেশন পার করছে।
হলুদ রঙের ব্যবহারের আরও কিছু কারণ আছে। বৃষ্টি, কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে গেলে এবং যে কোনও প্রতিকূল আবহাওয়ায় আলো কম থাকলেও দূর থেকে হলুদ রং সবচেয়ে আগে চোখে পড়ে। কম দৃশ্যমানতাতেও হলুদ রঙের ঔজ্জ্বল্য স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ে। সে কারণেও এই রং ব্যবহার করে রেল।