টিভি চালু রেখেই ঘুমোন? ছবি: সংগৃহীত।
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে টেলিভিশনের প্রতি আসক্তি নতুন কোনও বিষয় নয়। কিন্তু অতিমারি পর্বে ঘরবন্দি থাকতে থাকতে সমাজের একটা বড় অংশই জড়িয়ে পড়েছে এক অদ্ভুত নেশায়। পোশাকি ভাষায় অবশ্য ‘বিঞ্জ ওয়াচিং’। সোজা বাংলায়, একটানা টিভি সিরিজ দেখা, দেখেই যাওয়া। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এই বিঞ্জ ওয়াচিং কিন্তু শরীরের জন্য মোটেই ভাল নয়। পছন্দের সিরিজ় না দেখলে রাতে নাকি ঘুম আসে না, এমন কথাও শোনা যায়। আবার, বাড়িতে একা থাকতে ভাল লাগে না বলে সারা দিন টেলিভিশন চালু করে রাখার প্রবণতাও রয়েছে বয়স্কদের মধ্যে।
সম্প্রতি শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের একটি গবেষণার ফল প্রকাশ্যে এসেছে। ৫৫০ জনের বেশি স্বেচ্ছাসেবক ওই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের সকলেরই বয়স ৬৩ থেকে ৮৪। তাঁদের রাতে টিভি বা ল্যাপটপে সিরিজ় চালিয়ে ঘুমোতে বলা হয়েছিল। টিভি বা ল্যাপটপ চালিয়ে ঘুমোলে স্বাভাবিক ভাবেই বিচ্ছুরিত নীল রশ্মি চোখে এসে লাগে। এতেই তাঁদের ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে। বেড়েছে শরীরের ওজনও।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, টিভি বা ল্যাপটপের নীল আলোর সংস্পর্শে এলে শরীরে মেলাটোনিন হরমোন উৎপাদনের পরিমাণ কমে যেতে পারে। এই হরমোনই আসলে ঘুমোতে সাহায্য করে। শরীরকে জানান দেয় যে, এখন বিশ্রামের সময়। ফলে এই হরমোনের উৎপাদন কমে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটে। তাতে চোখে অস্বস্তি, কাজের প্রতি অনীহা, মানসিক নানা দোলাচল, এমনকি, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে ভবিষ্যতে।
তা ছাড়া রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অন্ধকার ঘরে বসে, একা একা ভয়ের কোনও সিনেমা দেখলে তা অবচেতনে থেকে যেতে পারে। ঘুমের মধ্যে সেই নিয়ে স্বপ্ন দেখাও অস্বাভাবিক নয়। ঘুমের মধ্যেও টেলিভিশনের আওয়াজ কানে যায়। ফলে একেবারে নিরবচ্ছিন্ন ঘুম হয় না। দীর্ঘ দিন ধরে কম ঘুমোলে নানা রকম সমস্যা হয়।