বিমান অবতরণের সময় কেবিনের মৃদু আলো ছাড়া আর কোনও জোরালো আলো থাকে না। এর পিছনে কারণ কী? ছবি: ফ্রিপিক।
বিমানে যাঁরা সফর করেছেন বা করেন তাঁরা জানেন, বিমান ওড়ার সময় নির্দিষ্ট আসনে গিয়ে সিট বেল্ট বেঁধে বসতে হয়। ঠিক সেই মুহূর্তে একবারে মৃদু হয়ে যায় বিমানের আলো। একই নিয়ম প্রযোজ্য অবতরণের সময়ও। সিট বেল্ট বেঁধে বসার নির্দেশ না হয় বোঝা গেল। বিমান ওড়ার সময় ও নামার সময় কিঞ্চিত ঝাঁকুনি হয়। নিরাপত্তার খাতিরেই এই নিয়ম।
কিন্তু আলো কমিয়ে দেওয়া হয় কেন? এর পিছনেও কি বিশেষ কারণ থাকে?
কম আলোর সঙ্গে চোখ সইয়ে নেওয়ার জন্যই এই নিয়ম। উজ্জ্বল আলোতে যখন যাত্রীরা থাকেন, তখন তাঁদের চোখে সেই আলোতেই অভ্যস্থ হয়ে ওঠে। আচমকা যদি সেই আলো নিভে যায়, চারপাশ একবারে ঘন অন্ধকারে ঢেকে যায়। কিন্তু সেই অন্ধকারে বেশ কিছুক্ষণ থাকলে আস্তে আস্তে কিছু কিছু জিনিস দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
বিমান সংস্থার যুক্ত লোকজন জানাচ্ছেন, কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে আলো নিভে যেতে পারে। সেই সময় যাত্রীদের আপৎকালীন গেট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া জরুরি। অন্ধকারের মধ্যে চোখ সইয়ে নেওয়ার জন্য বেশ কিছুটা সময় লাগে। যেমন কাউকে যদি একটি অন্ধকার ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, প্রথমে তিনি কিছু দেখতেই পাবেন না। বেশ কিছুক্ষণ পর সেই অন্ধকারেই চোখ মানিয়ে নেয়। অল্প অল্প কিছু দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। আলো থেকে অন্ধকারে চোখের মানিয়ে নেওয়ার জন্য বেশ কিছুটা সময় লাগে। সেই সময়টাই আগাম দেওয়া হয় আলো কমিয়ে দিয়ে। তবে একেবারে অন্ধকার নয়, বিমানে কেবিনের হালকা আলো সেই সময় জ্বালানো থাকে।
শুধু আলো নয়, একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, বিমান ওড়ার বা অবতরণের সময় বিমান সেবিকারা আসনের সামনের টেবিলটিও নির্দিষ্ট স্থানে আটকে রাখতে বলেন। সেই সময় যাতায়াতের পথে বিমান সেবিকারাও খাবার মজুত রাখার টেবিলটিও কিন্তু রাখেন না। এর কারণ হল, কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে যাত্রীদের আপৎকালীন দরজা পর্যন্ত পৌঁছতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্যই এই নিয়ম কানুন।
তবে কেন, ওঠা ও নামার সময়েই এই নিয়ম? মাঝ আকাশে কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে না এমনটা নয়, কিন্তু বিমান ওড়া ও নামার সময়টায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি থাকে। তা ছাড়া বিপদ হলে জরুরি অবতরণের প্রয়োজন হয়। বাইরে বের হওয়ার জন্য চারপাশ ভালভাবে দেখতে পাওয়া জরুরি।