প্রতীকী ছবি।
আলো না থাকলে ভয় করে অনেকের। রাতেও আলো জ্বালিয়ে ঘুমোন কেউ কেউ। কিন্তু এত ভয় কেন অন্ধকারে?
মানুষ অনেক কিছুতেই ভয় পায়। তার মধ্যে কিছু বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করে তাড়ানো সম্ভব হয়। কিছু ভয় মনের মধ্যে থেকেই যায়। কোনও বুদ্ধি-বিবেচনা কাজে লাগে না। তেমনই একটি হল অন্ধকারের ভয়। নিজের ঘরে বসেও অনেকে এই ভয় থেকে মুক্ত থাকতে পারেন না।
অন্ধকারে আতঙ্কিত হয়ে পড়ার এই সমস্যার একটি বৈজ্ঞানীক নাম রয়েছে। নিক্টোফোবিয়া। অনেকে বলে থাকেন অন্ধকারে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক বিষয়। কারণ আলো না থাকলে কিছু দেখা যায় না। কিন্তু কারও কারও এই ভয় থাকে অতিরিক্ত মাত্রায়। অন্ধকার হওয়া মাত্রই অস্থির হয়ে ওঠে মন। এক মুহূর্তও একা থাকতে পারেন না অন্ধকারে। তাঁদের এই অস্বস্তিকে নিক্টোফোবিয়া হিসাবে ব্যাখ্যা করে থাকেন চিকিৎসকরা। রোজের জীবনে অনেক অসুবিধায় পড়তে হয় এর কারণে।
কিন্তু অন্ধকারে কেন ভয় হয়? এ নিয়ে নানা জায়গায় গবেষণা হয়েছে। একটি কথা প্রায় সব জায়গার গবেষকরাই মানেন। তা হল, এই নিক্টোফোবিয়ার পিছনে রয়েছে মানুষের সাংস্কৃতিক ইতিহাস। প্রাচীন যুগে যখন শহর বা গ্রামে থাকার ব্যবস্থা হয়নি, এর উৎস সে সময়ে। জঙ্গল বা গুহায় বসবাসকারীরা রাতে জন্তুর ভয় পেত। কখন বাঘ-ভাল্লুক এসে আক্রমণ করবে রাতের অন্ধকারে, তা নিয়ে আতঙ্ক থাকত। সেই উদ্বেগ জিনের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। কারও বেশি সমস্যা হয়, কারও বা কম। কিন্তু মোটের উপর বেশির ভাগ মানুষই অস্বস্তি বোধ করে অন্ধকারের মধ্যে। অন্ধকারে বেশি অস্বস্তি হলে বলা হয় সেই মানুষটি নিক্টোফোবিয়ায় আক্রান্ত। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে, আমেরিকায় প্রায় ১১ শতাংশ মানুষ নিক্টোফোবিয়ায় ভোগে।
কোন উপসর্গ বলে দেয় নিক্টোফোবিয়া আছে কি না?
যে কোনও ফোবিয়ার মতো নিক্টোফোবিয়ায় উপসর্গ ব্যক্তি বিশেষে বদলে বদলে যায়। তবে অন্ধকারে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লে সতর্ক হওয়া জরুরি। হাতের তালু ঘেমে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, কাঁপুনিও নিক্টোফোবিয়ার উপসর্গ। অনেকের আবার অন্ধকার ঘরে ঢুকলে মাথা ঘোরার মতো সমস্যাও দেখা দেয় নিক্টোফোবিয়া থাকলে।