বাঁদরের থুতু দিয়ে কী ভাবে তৈরি হয় কফি? ছবি: সংগৃহীত।
কফি খেতে ভালবাসেন? ভাল কফির স্বাদ পেতে ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন ক্যাফেতে? স্বাদে খানিকটা বদল আনতে চেখে দেখতে পারেন ‘মাঙ্কি স্পিট কফি’। নামটা শুনে অবাক লাগছে তো? ভাবছেন হয়তো বাঁদরের থুতু দিয়ে কী ভাবে কফি তৈরি হয়?
না, মশকরা নয়, অনলাইনে একটু খুঁজলেই কিন্তু আপনি ‘মাঙ্কি স্পিট কফির’ সন্ধান পাবেন। তাইওয়ান আর ভারতে এই ধরনের কফির চাষ হয়। মূলত ভারতের চিকমাগালুরে এই ধরনের কফি বিন্সের হদিস মেলে। দুই জায়গাতেই বনের আশপাশের অঞ্চলে কফি বাগান রয়েছে। সেই সব বনে মূলত তাইওয়ানে ফরমোসান রক ম্যাকাক প্রজাতি ও চিকমাগালুতে মূলত রিসাস প্রজাতির বাঁদরের বাস। বনজঙ্গল থেকে বাঁদরেরা এসে কফি বাগানের সবচেয়ে ভাল প্রজাতির কফির বীজ তুলে খেয়ে, সেগুলি ভাল চিবিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। বাগানের কর্মীরা সেই চেবানো বীজগুলি স্বযত্নে সংগ্রহ করে। সংগৃহীত কফির বীজগুলি ভাল করে ধুয়ে, শুকিয়ে সেগুলিকে প্রক্রিয়া করা হয়। এই বিশেষ প্রকারের কফি বীজের রং হয় ধূসর। অনলাইনে ঢুঁ মারলেই এই ধরনের কফি বীজ পেয়ে যাবেন আপনি। ১ কেজি ‘মাঙ্কি স্পিট কফির’ দাম প্রায় ২০০০ টাকা।
বিশ্বের অন্যতম দামি কফি ‘কোপি লুয়াক’-ও তৈরি হয় পশুর মল থেকে। ইন্দোনেশিয়ায় ‘এশিয়ান পাম সিভেট’ নামের একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে, যা দেখতে অনেকটা বিড়ালের মতো। এই প্রাণীর জন্যই সাধারণ কফি বদলে যায় মহার্ঘ্য কফিতে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ওই প্রাণীর শরীরে গুণগত পরিবর্তন হয় কফির বীজের।
এশিয়ান পাম সিভেট এই কফি দানাগুলি খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে। পাচন ক্রিয়ার সময় প্রাণীর দেহ থেকে এক ধরনের উৎসেচক নিঃসৃত হয়। এর ফলে কফি দানার মধ্যে থাকা প্রোটিনের গঠন বদলে যায়। এই পরিবর্তিত কফি দানা সিভেটের মলের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। সেই মল থেকে বাছাই করা কফি দানাই ‘কোপি লুয়াক’।