লকডাউনে বাচ্চাকে সামলানো যাচ্ছে না? পরামর্শ পেতে ফোন করুন শিশু সুরক্ষা কমিশনে

কমিশনের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে দেওয়া রয়েছে একাধিক চিকিৎসক এবং মনোবিদদের ফোন নম্বর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ১৭:২৮
Share:

লকডাউনে শিশুদের সামলানোর উপায় বাতলে দিল শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশন। ছবি: এএফপি।

দেশ জুড়ে লকডাউন। হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে বাড়ির বড়রা মানিয়ে নিচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু, শিশুদের বুঝিয়েসুঝিয়ে ঘরে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অভিভাবকদের। কচিকাঁচারা বাড়িতে আটকে থেকে বিরক্ত হচ্ছে। স্কুল থেকে টিউশন, সাঁতার, গান, নাচ, আঁকার ক্লাস— সবই ছুটি। বিকেলে খেলাধুলো বা পার্কে যাওয়ার উপায় নেই। ঘরই এখন জগৎ। এই অবস্থায় ওদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন কী ভাবে নেবেন? কী ভাবে বোঝাবেন ওদের? উপায় বাতলাল রাজ্যের শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশন।

Advertisement

কমিশনের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে দেওয়া রয়েছে একাধিক চিকিৎসক এবং মনোবিদদের ফোন নম্বর। শিশু সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যায় তাঁরা সাহায্য করতে প্রস্তুত। এ প্রসঙ্গে কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বুধবার বলেন, “এই সময় শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিও আমরা খেয়াল রাখছি। আমরা যে চিকিৎসক এবং মনোবিদদের নম্বর প্রকাশ করেছি, তাঁদের সঙ্গে যে কেউ ফোন করে যোগাযোগ করতে পারেন। তাঁদের পরামর্শ মেনে চলুন।”

এই পরিস্থিতিতে সমস্যার ধরন এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। ক্ষেত্র বিশেষে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেবেন বলে কমিশন জানিয়েছে। প্রাথমিক কিছু উপায় কমিশন বাতলেছে। তাতে প্রয়োজন না মিটলে তালিকায় থাকা চিকিৎসক, মনোবিদদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতেও বলছেন তারা।

Advertisement

কমিশনের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে একাধিক চিকিৎসক এবং মনোবিদদের ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।

আরও পড়ুন: ডায়াবিটিসে ভুগছেন? করোনা থেকে বাঁচতে কী করবেন?​

প্রাথমিক উপায় হিসেবে কমিশন জানাচ্ছে, সংসারের কাজ সন্তানের বয়স ও ক্ষমতা অনুযায়ী ভাগ করে নিন। সকলের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে শিশুদের ভাল লাগবে। দায়িত্ববোধও বাড়বে। ছবি আঁকা, বাগান করা, গল্পের বই পড়া, গান করার মতো কোনও শখ থাকলে, সন্তানদের উৎসাহীত করার কথাও বলছে কমিশন। তাদের তালিকাভুক্ত মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল বলেন, ‘‘শিশুরা ঘরে বসে একঘেয়ে হয়ে যায়। দুষ্টুমি করতে পারে। মারধর এ সময়ে একদমই ঠিক নয়। তাতে মনের উপর উল্টো প্রভাব পড়তে পারে। আরও হতাশা তৈরি হবে।’’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘অনেকটা সময় হাতে আছে। সন্তানকে কাছে টেনে গল্প শোনান। যে ভাবে ঠাকুমা-দিদিমারা আগে গল্প বলতেন। বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন। এই সময় কার্টুন, মোবাইল গেমসের নেশা কাটিয়ে ফেলার সুয়োগ রয়েছে।’’

কমিশনের তালিকায় থাকা চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি মুখোপাধ্যায় যেমন বলছেন, ‘‘বাড়িতে কাগজ থাকলে, নৌকা, ফুল, পাকি নানা ধরনের জিনিস বানাতে শেখান শিশুদের। এমনকি রুটি করার সময় আটার গুলি বাচ্চাদের হাতে দিন। তা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিস বানাতে শেখান।’’ শুধু ছোটদের জন্য নয়, বড়দের জন্য শুভ্রজ্যোতিবাবুর পরামর্শ, ‘‘অনেকেই নিজের কেরিয়ার নিয়ে চিন্তিত। আপাতত একটা দিনের কথা ভাবুন। তিন মাস পর কী হবে ভেবে অযথা চিন্তা করার দরকার নেই। কারণ কেউ জানে না, কী হতে চলেছে আগামী দিনে।’’

আরও পড়ুন: বাড়িতে থাকলে বার বার হাত ধোওয়ার দরকার নেই, ধুলে ময়শ্চারাইজার লাগান​

এই সময়টায় শিশুরা মানসিক ভাবে হতাশ হয়ে পড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন শিশু চিকিৎসক নিশান্তদেব ঘটক। তাঁর কথায়, ‘‘খেলার ছলে শিশুকে হ্যান্ড হাইজিন এবং কাফ এটিকেট শেখানো যেতে পারে। তাতে পরিচ্ছন্নতা ভাল শিখবে ওরা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement