ক্রমশ হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবহারকারীরা? —ফাইল চিত্র
হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে এ বার সিগন্যাল-মুখী নেটাগরিকরা। হালে হোয়াটসঅ্যাপের জনপ্রিয়তায় টান পড়েছে তাদের নীতিগত বদলের কারণে। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য জানতে তারা অতিরিক্ত আগ্রহী পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে সব মহলেই। আর তাই তাতে হঠাৎই জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে আর এক ইন্টারনেট মেসেজিং অ্যাপ সিগন্যাল।
৭ জানুয়ারি হোয়াটসঅ্যাপের তরফে কিছু নীতিগত বদল আনা হয়। বলা হয়, এই নীতির সঙ্গে একমত না হলে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আর হোয়াটসঅ্যাপ কাজ করবে না ওই ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে। তখনই এলন মাস্ক সোশ্যাল নেটওয়ার্কে পোস্ট দেন ‘সিগন্যাল ব্যবহার করুন’। তারপর থেকেই গুগল প্লে স্টোর বা আইফোনের অ্যাপ স্টোর থেকে সিগন্যাল ডাউনলোডের হার দ্রুত বেড়ে যায়।
কেন হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে এত চটেছেন ব্যবহারকারীরা? তার সবচেয়ে বড় কারণ ব্যবহারকারীর থেকে একাধিক ব্যাক্তিগত তথ্য জানতে চাওয়া। ফোন নম্বর, লোকেশন থেকে শুরু করে অনলাইনে কেনাকাটা, টাকাপয়সা সংক্রান্ত তথ্য পর্যন্ত জানার অধিকার চেয়ে নিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। শুধু তাই নয়, কোনও ব্যবহারকারী যদি ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মুছে দেন, তারপরেও এই মেসেজিং অ্যাপের সার্ভারে ব্যবহারকারীর সেই সব তথ্য থেকে যাবে বলেও জানিয়েছে এই অ্যাপটি। অথচ, এর পাশাপাশি সিগন্যালের মতো অ্যাপ ফোন নম্বর ছাড়া প্রায় কোনও তথ্যই জানতে চাইছে না ব্যবহারকারীর থেকে। এই কারণেই বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে সেটি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সুশোভন সামন্ত যেমন বলছেন, ‘‘নতুন পলিসির নোটিফিকেশন এসেছিল। ভাল করে পড়িনি। ‘এগ্রি’ বোতামে ক্লিক করে দিয়েছি। পরে বুঝলাম, বিষয়টা খুব সহজ সরল নয়। ফোন থেকে ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং করি। সেই সব তথ্য অন্যের হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলেই মনে হচ্ছে।’’ একই মত কলেজ পড়ুয়া অগ্নিশিখা চক্রবর্তীরও। তাঁর কথায়, ‘‘এখন অন্য কোনও মেসেজিং অ্যাপের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছি। সিগন্যাল বা টেলিগ্রামেও তো অডিয়ো-ভিডিয়ো কল করা যায়। গ্রুপও হয়। তা হলে অসুবিধা কোথায়!’’
এরই মধ্যে সোমবার হোয়াটস্যাপ নিয়ে অন্য একটি জটিলতাও তৈরি হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপের বিভিন্ন গ্রুপ গুগল সার্চে হঠাৎই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল। এবং যে কেউ ইচ্ছে করলেই সেই সব গ্রুপে ঢুকে সেখানকার তথ্য জানতে পারছিলেন আর গ্রুপে থাকা সদস্যদের ফোন নম্বর পেয়ে যাচ্ছিলেন। যদিও সোমবার এই সমস্যার সমাধান করে ফেলেছে ফেসবুকের মালিকানাধীন মেসেজিং অ্যাপটি। কিন্তু তত ক্ষণে খবর ছড়িয়ে পড়েছে নানা মহলে। অবং আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বহু স্মার্টফোন ব্যবহারকারীই। তাঁরা সিগন্যাল বা টেলিগ্রামের মতো মেসেজিং অ্যাপ ডাউনলোড করতে শুরু করে দিয়েছেন ব্যাপক হারে। কমছে হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যাও।
আরও পড়ুন: হাঁড়ির খবর জানতে চায় হোয়াটসঅ্যাপ, ত্যাগ করার কথা ভাবছেন ব্যবহারকারীরা