পয়লা বৈশাখের আগে নিশ্চয়ই এক প্রস্ত আলমারি গুছিয়েছেন। স্তূপীকৃত জামার ফাঁকে হাত কি চলে গিয়েছে পছন্দের স্লিভলেস ড্রেসটার উপরে? পরবেন কি পরবেন না, ভাবতে ভাবতে হয়তো কেটে গিয়েছে আরও কয়েক দিন। ভাবনাচিন্তাকে আলমারিবন্দি করুন। আর আলমারি থেকে বার করে নিন পছন্দের ড্রেসটা। বাইরে পারদ চড়লে আপনার সাজের স্টাইল মিটার কি পিছিয়ে থাকতে পারে? গরমকাল স্লিভলেস পরার জন্য আদর্শ। শুধু মনে রাখতে হবে কয়েকটি বিষয়। তা হলেই দেখবেন, যা নিয়ে আপনার এত ভয়, কিন্তু-কিন্তু মনোভাব, তাতেই আপনাকে কত সুন্দর দেখতে লাগছে!
প্রথম গয়না আত্মবিশ্বাস
স্লিভলেস পরতে গেলে প্রথমেই ভয়কে লেস করে ফেলুন। বডিশেমিংয়ের ভয় পাবেন না। চেহারা বুঝে অবশ্যই স্লিভলেস পোশাক বেছে নেবেন। তবে যা পরবেন, তাতে যেন আপনাকে স্বচ্ছন্দ ও আত্মবিশ্বাসী দেখায়।
ফিটিং অন্তর্বাস
যে কোনও পোশাকের সঙ্গেই ফিটিং অন্তর্বাস পরা জরুরি। তবে স্লিভলেস পোশাকের ক্ষেত্রে এর বিকল্প নেই। কারণ অন্তর্বাসের সাইজ় গোলমেলে হলে, হাতের তলা দিয়ে শরীরের অবাঞ্ছিত মেদ দেখা যেতে পারে। সেটা নিশ্চয়ই কাম্য নয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
হাতের যত্ন
দিনে অন্তত তিন বার ময়শ্চারাইজ়ার লাগান, বিশেষত কনুইয়ে
রোদে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন এবং মুখের
শেডের ফাউন্ডেশন লাগান
সপ্তাহে এক দিন হাত স্ক্রাব ও ওয়্যাক্স করুন
সরু ও পাতলা অ্যাকসেসরিজ়
স্লিভলেস বা ওয়ান শোল্ডার পোশাকের সঙ্গে অ্যাকসেসরিজ় হবে সরু, হালকা। যাতে আপনার হাত রোগা দেখায়। ত্বক ও অ্যাকসেসরিজ়ের মাঝে যত বেশি ফাঁকা জায়গা থাকবে, ততই রোগা দেখাবে। ভারী ব্রেসলেট, চওড়া স্ট্র্যাপের ঘড়ি স্লিভলেসের সঙ্গে বারণ।
শেষ মুহূর্তের ওয়র্কআউট
স্লিভলেস পোশাক পরতে অনেকেই ভয় পান এই ভেবে যে, সুঠাম ও নির্মেদ হাত তৈরি করতে নিশ্চয়ই জিমে ছুটতে হবে। কিন্তু তা নিয়মিত করতে না পারলেও স্লিভলেস পরার আগে
কয়েক দফা পুশ আপ করে নিন। পেশিতে
রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। সামগ্রিক লুকে টোনড ব্যাপারটা আসবে।
দমবন্ধ আর্মহোলস নয়
এমন স্লিভলেস পোশাক পরবেন, যেখানে আপনি স্বচ্ছন্দে হাত উপরে তুলতে পারেন। আরামের দিকটা এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে আগে। আর খুব চাপা, আঁটোসাটো আর্মহোলস হলে মেদ দেখা যেতে পারে। উপরন্তু চলাফেরাতেও অস্বস্তি হতে পারে।
আন্ডারআর্মের যত্ন
শেভিং: সব সময়ে নতুন রেজ়ার ব্যবহার করবেন। রেজ়ার শেয়ার করবেন না। আন্ডারআর্মে রোম শুধু উপরের দিকে নয়, নীচেও বাড়ে। তাই সে ভাবে শেভ করুন। শেভিংয়ের আগে এক্সফোলিয়েট করতে পারেন। এটি দুর্গন্ধও দূর করে। কন্ডিশনিং শেভিং ক্রিম ব্যবহার করুন।
ওয়্যাক্সিং: যদি বারবার শেভিং সম্ভব না হয়, তবে ওয়্যাক্সিং করুন। আত্মবিশ্বাস থাকলে বাড়িতে নিজেই করতে পারেন। না হলে পেশাদারদের সাহায্য নিন।
লেসার: এর জন্য ভাল মতো খোঁজখবর নেওয়া দরকার। লেসার খরচসাপেক্ষ। সাধারণত ৬-১০টি সিটিংয়ের প্রয়োজন হয়।
দুর্গন্ধ দূরীকরণে: ডিয়োডোরেন্ট ব্যবহার করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঘাম প্রতিরোধক ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। তবে শেভিংয়ের পরেই এই জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করা ঠিক নয়।
পিগমেন্টেশন দূরীকরণে: আলট্রা ভায়োলেট রশ্মির প্রকোপে আন্ডারআর্মে পিগমেন্টেশন হতে পারে। ত্বকের রংও বদলায়। আবার হরমোনের পরিবর্তন বা প্রডাক্টজনিত কারণেও কালো ছোপ হয়। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ভি নেকের কারিগরি
যখন স্লিভলেস পরছেন, তখন নিশ্চয়ই চাইবেন যে, দর্শকের নজর থাকুক আপনার হাতের দিকে, নেকলাইনে নয়। তাই স্লিভলেস ড্রেসের সঙ্গে খুব ডিপ কাটের নেকলাইন না পরাই ভাল। বরং
ভি নেকলাইন এ ক্ষেত্রে নিরাপদ। চাইলে স্লিভলেস বোটনেকও পরতে পারেন।
স্টাইলিংয়ে ইন-কাট
সাধারণ স্লিভলেসের চেয়ে ডিপ কাটের স্লিভলেস পরতে পারেন, যেখানে আপনার কাঁধ চোখে পড়ে বেশি। এতে হাত সরু দেখায়। সাধারণ স্লিভলেসে হাত চওড়া দেখানোর ভয় থাকে। ড্রেসের কাট ভিতর দিক থেকে শুরু হলে স্টাইল, গ্ল্যামার বাড়ে।
শরীরভেদে স্ট্র্যাপস
হাতের উপরের অংশ ভারী হলে স্প্যাগেটি ও নুডল স্ট্র্যাপ টপ না পরাই ভাল। এ ক্ষেত্রে হাতের অনেকটা অংশ দেখা যায় ও তা দেখতেও ভারী লাগে। সে ক্ষেত্রে চওড়া স্ট্র্যাপের পোশাক পরাই ভাল। তবে ইচ্ছে থাকলে ভারী হাতের মেয়েরাও সরু স্ট্র্যাপের পোশাক পরতে পারেন। সে ক্ষেত্রে পাতলা শ্রাগ বা শার্টের সঙ্গে লেয়ারিং করে নিন। ইচ্ছেপূরণ হবে। সামগ্রিক লুকেও ব্যালান্স আসবে।
তাই বেশি না ভেবে এ বার চটপট কী ভাবে সাজবেন তালিকা তৈরি করে ফেলুন দেখি!
মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
মডেল: রিয়া বণিক, আয়ষী তালুকদার
ছবি: সন্দীপ দাস; পোশাক: সুমন নাথওয়ানি, কালার ওশো (শাড়ি); ব্লাউজ়: রজত
মেকআপ, হেয়ার ও স্টাইলিং: কৌশিক-রজত
লোকেশন: ভর্দে ভিস্তা কনক্লেভ, চকগড়িয়া