Hair Style Tips

সময় বাঁচাবে হেয়ার স্প্রে

কালের আবর্তনে চুলের সাজসজ্জায় এসেছে বৈচিত্র। স্টাইলিশ হেয়ার কাটে নিজের লুকে পরিবর্তন আনছে অনেকেই, আবার কেউ কেউ চুলে রং করছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৪৩
Share:

চুলের ভলিউম বাড়ানো বা টেক্সচার দেওয়া থেকে শুরু করে ফিনিশিং স্প্রে পর্যন্ত এত রকম হেয়ার স্প্রে রয়েছে, যে গুনে শেষ করা কঠিন। ছবি: অমিত দাস।

কালের আবর্তনে চুলের সাজসজ্জায় এসেছে বৈচিত্র। স্টাইলিশ হেয়ার কাটে নিজের লুকে পরিবর্তন আনছে অনেকেই, আবার কেউ কেউ চুলে রং করছেন। ছোট চুলের ট্রেন্ড চললেও লম্বা, কালো ও ঘন চুলের চাহিদা কমেনি একটুও! তবে চুল তো শুধু থাকলেই হবে না প্রয়োজন যত্ন করা। দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবনে চুলের যত্ন করার সুযোগ পাওয়া যায় কম। সেজন্যই চুল বিশেষজ্ঞ জলি চন্দ বলছেন, রোজকার সময় বাঁচাতে সবচেয়ে ভাল হেয়ার স্প্রে। ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে নানাধরনের হেয়ার স্প্রে পাওয়া যায়, প্রতিটির কাজ আলাদা আলাদা! চুলের ভলিউম বাড়ানো বা টেক্সচার দেওয়া থেকে শুরু করে ফিনিশিং স্প্রে পর্যন্ত এত রকম হেয়ার স্প্রে, যে গুনে শেষ করা কঠিন!

Advertisement

হেয়ার স্প্রের ধরন

ফিক্সিং স্প্রে: প্রচলিত হেয়ার স্প্রে এটি। যে কোনও চুলের স্টাইল করতেই কাজে লাগে এই হেয়ার স্প্রে।

Advertisement

ভলিউম স্প্রে: ঠিক কী ধরনের চুলের স্টাইল করতে চাইছেন, তার উপরে নির্ভর করবে এর ব্যবহার। যেমন রেট্রো হেয়ার লুক চাইলে এই হেয়ার স্প্রে কাজে লাগে।

থার্মাল স্প্রে: স্টাইলিং করতে পছন্দ করেন সকলেই। অনেকের হাতেই এখন হেয়ার স্ট্রেটনার, ড্রায়ার, টং। তবে সোজাসুজি চুলে তাপ লাগলে ক্ষতি হতে পারে চুলের। তাই এ সব ব্যবহারের আগে চুলে থার্মাল স্প্রে করে নিতে পারেন। তাপের হাত থেকে রক্ষা করবে আপনার চুলকে।

কন্ডিশনার স্প্রে: জলি চন্দের কথায়, “চুল পাতলা হলেও তা রুক্ষ হতে পারে। অন্য কন্ডিশনার কিংবা হেয়ার মাস্ক লাগালে চুল পেতে থাকবে ও ভারী অনুভব করতে পারেন। তাই পাতলা চুলে লাগান এই হেয়ার স্প্রে। কন্ডিশনার লাগিয়ে অপেক্ষা করার সময় না থাকলে এই স্প্রে কার্যকর।

মিস্ট স্প্রে: মোটের উপরে চুল ঠিকই আছে, কিন্তু দু’-একটা চুল বিরক্ত করলে তখন ব্যবহার করুন এই স্প্রে।

পারফিউম স্প্রে: ঘামে যাদের চুলে খুব গন্ধ হয় বা ঘন চুল রোজ ধোয়া সম্ভব না হলে, তাদের জন্য এই ধরনের স্প্রে। এতে চুল থেকে মিষ্টি গন্ধ বেরোয়। সাধারণ ফিক্সিং স্প্রের মধ্যেও মিষ্টি সুবাস থাকে।

সাধারণত হোল স্প্রেই ব্যবহার করেন সকলে। এতে স্টাইল বজায় থাকে এবং আবহাওয়ার আর্দ্রতা থেকে চুল রক্ষা পায়। চুলের উপরে হেয়ার স্প্রের ব্যবহার কোটিং-এর মতো। জল পড়ে যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তাই যেমন আসবাবপত্রের উপরে পলিশ করা হয়, ঠিক সে রকমই হেয়ার স্প্রে। হেয়ার স্প্রে কতটা দীর্ঘমেয়াদি হবে তা নির্ভর করে তার হোল্ড ফ্যাক্টরের উপরে। হোল্ড ফ্যাক্টর ১-এর তুলনায় হোল্ড ফ্যাক্টর ৫ বেশি স্ট্রং ও দীর্ঘমেয়াদি। তাই সেটা দেখে প্রডাক্ট কিনবেন।

খেয়াল রাখবেন, ল্যাকার এবং হেয়ার স্প্রে আলাদা। ল্যাকারে আঠালো ভাব থাকে। ফলে ল্যাকার লাগানোর পর চুল একদম শক্ত হয়ে যায়। এতে চুলের ক্ষতি হয় বেশি। তাই এখন অনেকেই হেয়ার স্প্রে লাগাতে পছন্দ করেন। তবে হেয়ার স্প্রে মানেই কিন্তু তাতে থাকবে বিভিন্ন কেমিক্যালস। তাই সবসময়ই একটু ভাল মানের হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করা প্রয়োজন।

কী ভাবে বানাবেন ঘরোয়াহেয়ার স্প্রে?

ঘরোয়া পদ্ধতিতে বানিয়ে নিতে পারেন হেয়ার স্প্রে। ভাতের মাড় নিয়ে তা পাতলা করে নিন। তার সঙ্গে মিশিয়ে নিন একটু অ্যালোভেরা জেল, তিন থেকে পাঁচ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল ও অল্প নারকেল তেল। প্রয়োজনে পাতলা করতে মিশিয়ে নিন একটু ফিল্টারড ওয়াটার। ব্যস তৈরি আপনার হেয়ার স্প্রে। সুগন্ধ আনতে ব্যবহার করুন গোলাপজল। এ বার তরলটা স্প্রে বোতলে ভরে শক্ত করে মুখটা বন্ধ করে দিন। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে সারা চুলে স্প্রে করে নিন এই মিশ্রণটি। খানিকটা বালিশের উপরেও স্প্রে করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে

ঠিক কতটা হেয়ার স্প্রে প্রয়োজন তা কিন্তু বুঝতে হবে ব্যবহারকারীকে।

হেয়ার স্প্রে বা কোনও স্টাইলিং প্রডাক্ট, কখনওই লাগানো যাবে না স্ক্যাল্পে। চুলের যত্ন করতে হেয়ার স্প্রের ব্যবহার মিটে গেলে শ্যাম্পু করতে পারেন। তার পর লাগিয়ে নিন কন্ডিশনার বা হেয়ার মাস্ক।

হেয়ার স্প্রে করার সময় খানিকক্ষণ শ্বাসগ্রহণ বন্ধ রাখা ভাল। অনেকেরই অ্যালার্জি হতে পারে বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে।

শীতকালে অনেকেই শ্যাম্পু কম করেন। এ সময়ে যাঁরা বড় চুল খুলে ঘুরতে পছন্দ করেন তাঁদের জন্য জলি চন্দর পরামর্শ, “খোলা চুলে বেরোনোর আগে লাগিয়ে নিন কন্ডিশনার স্প্রে।”

জেনে নেওয়া যাক কিছু টিপস

অন্তত ছ’ইঞ্চি দূর থেকে স্প্রে করুন। খুব কাছ থেকে স্প্রে করলে চুল চকচকে দেখানোর বদলে তেলতেলে দেখাতে পারে। পাশাপাশি অল্প জায়গায় অনেকটা স্প্রে ছড়িয়ে গিয়ে চুল নির্জীব শক্ত দেখাতে পারে।

চুলের কার্লের কথা মাথায় রাখুন। স্ট্রেট চুলে যে ভাবে স্প্রে লাগানো হয়, কোঁকড়া চুলেও সে ভাবে লাগালে চুলের কার্লস চটচটে হয়ে যাবে, চুলের বাউন্সও নষ্ট হয়ে যাবে। তাই কোঁকড়া চুলে স্প্রে লাগাতে হলে এক এক করে চুলের গুচ্ছ তুলে অল্প করে স্প্রে লাগান।

হেয়ার স্প্রে একবার লাগিয়ে নেওয়ার পরে আর আঁচড়ানো বা ব্রাশ করার দরকার নেই। তাতে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভেঙে ঝরে যাওয়ার ভয় থাকে। এতে স্টাইলও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

হাত দিয়ে হেয়ার স্প্রে মেখে নিলে উসকোখুসকো চুলের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এ ধরনের চুল বশে রাখতে হেয়ার স্প্রে খুব কাজের। তবে সে ক্ষেত্রে সরাসরি স্প্রে চুলে না করে হাতে নিয়ে আলগা করে ওই অবাধ্য চুলে মেখে নিন। এই কৌশল খুবই কার্যকর।

মুখের চারপাশে ছোট ছোট চুল উড়তে থাকলে তাদের বশে আনতে সরাসরি স্প্রে করবেন না। তাতে ত্বকে লেগে যেতে পারে। বরং একটা নতুন পরিষ্কার টুথব্রাশে স্প্রে ছিটিয়ে নিন, তারপর হালকা করে চুলের উপর দিয়ে সেই ব্রাশটা বুলিয়ে নিন। এতেই বশে থাকবে চুল।

হেয়ার স্প্রের খুঁটিনাটি দেওয়া রইল। এ বার চুলের স্প্রে কেনা ও ব্যবহারের সময়ে এগুলো মনে রাখলেই কাজ হাসিল।

মডেল: তিতিক্ষা দাস

ছবি: অমিত দাস

মেকআপ: উজ্জ্বল দত্ত

স্টাইলিং: সুব্রত রায়

পোশাক: প্যান্টালুনস, কাঁকুরগাছি;

লোকেশন ও হসপিটালিটি: ক্লাব ফেনিসিয়া, গোদরেজ ওয়াটারসাইড, সেক্টর ফাইভ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement