নিজের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবী, চাঁদ এবং সূর্যের মধ্যবর্তী অবস্থানে এসে পড়লে চাঁদের উপর পৃথিবীর ছায়া পড়ে। ছবি- সংগৃহীত
২০২৩ সালের প্রথম চন্দ্রগ্রহণ ৫ মে। নিজ কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবী, চাঁদ এবং সূর্যের মধ্যবর্তী অবস্থানে এসে পড়লে চাঁদের উপর পৃথিবীর ছায়া পড়ে। তখন পৃথিবী থেকে চাঁদকে দেখা যায় না। চাঁদের আলো ঢাকা পড়ে যায়। বিশেষ এই সময়কালেই চন্দ্রগ্রহণ সংগঠিত হয়।
তবে এ বারের চন্দ্রগ্রহণের একটি বিশেষত্ব রয়েছে। এটি ‘পেনম্ব্রাল’ চন্দ্রগ্রহণ। অর্থাৎ, গ্রহণের সময়ে সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ একই সরলরেখায় অবস্থান করবে না। এই পর্যায়ে পৃথিবী, সূর্যের আলো পুরোপুরি ভাবে আড়াল করতে পারে না। বরং চাঁদের ঔজ্জ্বল্য খানিক হ্রাস পায়। তবে এই ‘পেনম্ব্রাল’ কিন্তু আংশিক চন্দ্রগ্রহণ নয়। একই সঙ্গে এই দিনটি গৌতম বুদ্ধের জন্মতিথিও বটে। এই তিথিতেই নেপালের লুম্বিনীনগরে জন্ম হয় বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের।
৫ মে তারিখে গ্রহণ শুরু হবে রাত ৮টা ৪৬ মিনিটে। শেষ হবে ১টা ২০ মিনিটে। এই গ্রহণ দেখা যাবে নিউজ়িল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্বের কিছু অংশ, প্রশান্ত মহাসাগর, অতলান্তিক ও ভারত মহাসাগরের কিছু অংশে।
চন্দ্রগ্রহণ ঘিরে মানুষের মনে নানা রকমের সংস্কার আছে। অনেকে মনে করেন, চন্দ্রগ্রহণের সময় খাবার খাওয়া অথবা শৌচক্রিয়া করলে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই প্রভাবমুক্ত থাকতে অনেকেই খাবার কিংবা জলে তুলসীপাতা দিয়ে রাখেন। অনেকে আবার গ্রহণের সময় কোনও খাবার খেতে বারণ করেন।
গ্রহণের সময় কিছু রং নিয়েও সংস্কার রয়েছে। যেমন, সাদা রঙের খাবার— যেমন ভাত, দই, দুধ এড়িয়ে চলতে বলা হয়। তবে এই কাজগুলো প্রচলিত বিশ্বাস থেকে কেউ কেউ করে থাকেন। যদিও এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে গ্রহণের সময় খাবার খাওয়া এড়িয়ে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। হালকা এবং সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়াই ভাল। তার কারণ গ্রহণের সময় হজম শক্তি শ্লথ হয়ে যায়। ভারী বা কঠিন খাবার খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই এই সময় সহজপাচ্য খাবার খাওয়া ভাল।
অন্য দিকে, এই গ্রহণ যে হেতু ভারত থেকে দেখা যাবে না, তাই এর প্রভাবও তেমন গুরুতর নয়।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল, ‘‘এই সময় অতিবেগুনি রশ্মির জন্য পরিবেশে ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।’’ এর আদৌ কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ‘অনেকে এমন বিশ্বাস করেন’— এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করা উচিত ছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।)