২০১৩-র ফেব্রুয়ারিতে হু বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভারতকে পোলিয়োমুক্ত দেশ বলে ঘোষণা করে। প্রতীকী ছবি।
শিশুদের সুরক্ষায় এ বার ‘ইঞ্জেকটেবল’ পোলিয়ো টিকার তৃতীয় ডোজ় চালু করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ওই নির্দেশ রূপায়ণে করতে বলা হয়েছে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে। বৃহস্পতিবার নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, ন’মাস থেকে এক বছর বয়সের সব শিশুকেই ওই তৃতীয় ডোজ় দেওয়া হবে।
সুসংহত টিকাকরণ কর্মসূচিতে জন্ম থেকে দেড় বছর পর্যন্ত পাঁচটি ওরাল (মুখে খাওয়া) এবং ই়ঞ্জেকশনের মাধ্যমে আরও দু’টি পোলিয়ো টিকা দেওয়া হত। সাত দফার ওই টিকাকরণ এ বার থেকে হবে আট দফায়। জন্মের পরেই পোলিয়ো টিকা খাওয়ানো হয় শিশুকে। তার পরে দেড়, আড়াই ও সাড়ে তিন মাস এবং দেড় বছর বয়সে পোলিয়ো টিকা খাওয়ানো হয়। দেড় ও সাড়ে তিন মাসে দেওয়া হয় ইঞ্জেকটেবল পোলিয়ো টিকা। স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, সম্প্রতি পোলিয়ো দূরীকরণের জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি উপদেষ্টা কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, দেড় ও সাড়ে তিন মাসের পরে এ বার থেকে ন’মাসে ইঞ্জেকটেবল পোলিয়ো টিকার তৃতীয় ডোজ় দেওয়া হবে। ওই সময় শিশুদের ডান হাতে হাম ও রুবেলার টিকা দেওয়া হয়। তাই বাঁ হাতের উপরের দিকে দেওয়া হবে তৃতীয় ডোজ়ের পোলিয়ো টিকা।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ২০১১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দেশের শেষ পোলিয়ো সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল হাওড়ায়। পাঁচলার এক শিশু পোলিয়োয় পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়। ২০১৩-র ফেব্রুয়ারিতে হু বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভারতকে পোলিয়োমুক্ত দেশ বলে ঘোষণা করে।
কিন্তু সম্প্রতি অন্য কয়েকটি দেশের পাশাপাশি কলকাতা, দিল্লি, জয়পুর, বেঙ্গালুরুতে নিকাশির জলে ‘ভ্যাকসিন ডিরাইভড’ বা টিকা থেকে নিষ্কাশিত পোলিয়ো ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে।
জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দোলুই বলেন, ‘‘ভারতে পোলিয়োমুক্ত দেশের তকমা অটুট রাখতে হলে একটি শিশুও যাতে পোলিয়ো টিকাকরণ থেকে বাদ না-যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। পোলিয়ো সংক্রমণের কোনও ঘটনা যেন না-ঘটে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে বুস্টার ডোজ়ের প্রয়োজন। পোলিয়োমুক্ত অন্যান্য দেশেও তিন-চারটি ডোজ় নেওয়া হয়। আগামী দিনে ওরাল টিকা বন্ধ করে ইঞ্জেকশনে পুরো টিকা পর্ব সম্পন্ন করার দিকেই এগোনো হচ্ছে।’’