সানিয়ার ফিটনেস অনেকের অনুপ্রেরণা। ছবি: সংগৃহীত
স্বামী শোয়েব মালিকের সঙ্গে বিচ্ছেদের জল্পনার মাঝেই মঙ্গলবার ৩৬ বছরে পা দিলেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জ়া। মধ্যরাতে টুইট করে স্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শোয়েব। তিনি লিখেছেন, ‘‘শুভ জন্মদিন সানিয়া। তোমার জীবনে সুখ উপচে পড়ুক। তুমি সুস্থ থাকো, এই কামনা করি। জন্মদিনটা দারুণ ভাবে উপভোগ করো।’’ সানিয়ার প্রতি শোয়েবের এই আবেগঘন শুভেচ্ছা বার্তা বিবাহ বিচ্ছেদের জল্পনাকে আরও খানিক উস্কে দিয়েছে। বিচ্ছেদ নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি দু’জনের কেউই। পাকিস্তানের এক টেলিভিশন চ্যানেল সূত্রে খবর, সানিয়া এবং শোয়েব টেলিভিশনের কিছু অনুষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। এই সময়ে বিবাহবিচ্ছেদ ঘোষণা করলে আইনি কিছু সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে। সে কারণেই দু’জনে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বলে সূত্রের খবর।
হওয়ার পর ওজন বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৮৯ কেজি। ছবি: সংগৃহীত
সানিয়া আর শোয়েবের দাম্পত্য সম্পর্কের বয়স ১২ বছর। এক যুগ এক ছাদের নীচে কাটিয়ে হঠাৎই ভাঙনের কথা শোনা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজের মনকে দুর্বল হতে দেননি এক সন্তানের মা সানিয়া। ৪ বছরের একরত্তি ছেলে ইজহানকে নিয়ে কঠিন সময় পার করছেন তিনি। টেনিস কোর্টে হোক কিংবা ব্যক্তিগত জীবনে— সানিয়া সব সময়েই তাঁর দৃঢ় মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
সানিয়ার ফিটনেস অনেকের অনুপ্রেরণা। ২০১৮ সালে সন্তানের জন্ম দেন। মা হওয়ার পর ওজন বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৮৯ কেজি। বহু পরিশ্রম করে ৪ মাসে ২৬ কেজি কমিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। ওজন কমানোর সেই যাত্রাপথ মোটেই মসৃণ ছিল না। অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। শেষ বার গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফরাসি ওপেন খেলেছিলেন সানিয়া। ইউএস ওপেন খেলার পরেই টেনিস থেকে অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু চোটের কারণে খেলতে পারেননি ছ’টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের জয়ী সানিয়া। ফলে এখনই অবসর নেবেন কি না তা স্পষ্ট করে কিছু জানাননি সানিয়া। খেলোয়াড় মাত্রেই ফিট হবেন, সকলে তা ধরেই নেন। কিন্তু এর নেপথ্যের পরিশ্রম অনেক সময়ে আড়ালেই থেকে যায়। নিজেকে ফিট রাখতে ঠিক কী নিয়ম মেনে চলেন সানিয়া?
সামনে কোনও খেলা আছে কি না, তার উপর নির্ভর করে সানিয়ার ডায়েট রুটিন। ম্যাচ থাকলে নিজেকে চাঙ্গা রাখতে কার্বোহাইড্রেট-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান তিনি। অন্য সময়ে প্রোটিন এবং ভিটামিন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার দিকে বেশি করে জোর দেন। হায়দরাবাদের এই কন্যে বিরিয়ানির জন্য পাগল। তবে রোজের পাতে সে সব খাবার একেবারেই থাকে না। ডাল, রুটির মতো খাবার খান সাধারণত। সানিয়া এমনিতে খাদ্যরসিক। প্রিয় খাবারগুলি খাওয়া থেকে নিজেকে তিনি আটকান না। তবে পছন্দের খাবারগুলি বাড়িতেই তৈরি করে নেন। বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার এ়ড়িয়ে চলেন। আর কোনও দিন যদি বাইরের ভাজাভুজি খেয়েও ফেলেন, সে ক্ষেত্রে পরের দিন শরীরচর্চার সময় অনেক বাড়িয়ে দেন।
খাওয়াদাওয়ায় নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি শরীরচর্চাতেও সমান মনোযোগ। খেলা না থাকলে রোজ ৫-৬ ঘণ্টা শারীরিক কসরত করেন। সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে দৌড়তে যান। শরীরচর্চা করেন। তার পর সকালের খাবার খেয়ে ৮টার সময়ে টেনিস কোর্টে যান। সেখানে প্রায় ২-২.৩০ ঘণ্টা টেনিসের অনুশীলন করেন। তার পর বাড়ি ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ফের বিকেলে টেনিস কোর্টে হাজির হন। সন্ধ্যায় ফিরে জিমে যান। কিংবা বাড়িতেই শরীরচর্চা করেন। ট্রেডমিলে হাঁটা, ওজন তোলা, রোপ ট্রেনিং— সবই থাকে সেই তালিকায়।