শরীরের নিম্নাংশ জুড়ে রোম। ছবি- সংগৃহীত
বয়ঃসন্ধির সময়ে মেয়েদের শরীরের নানা জায়গায় অবাঞ্ছিত রোম ফুটে উঠতে দেখা যায়। তা দেখেই অনেকে মন্তব্য করে ফেলেন, ‘হরমোনের গন্ডগোল’। কিন্তু সকলের শরীরে এই লক্ষণ যে একই রোগের কারণে হয় তেমনটা কিন্তু নয়।
বেজিংয়ের ১৭ বছর বয়সি এক তরুণীরও কোমর এবং পেটের নিম্নাংশ ঢেকে গিয়েছিল ঘন রোমের পরতে। ছোট পোশাক পরতে না পারায় হীনমন্যতা গ্রাস করছিল তাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা এমন অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল যে, লোকের দৃষ্টি এড়ানোর জন্য তাকে রীতিমতো পোশাকের তলায় রোমগুচ্ছ লুকোতে হত।
ওই তরুণী সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে সাধারণ শৌচাগারে যেতেও লজ্জা করত আমার। ডর্মিটরিতে বন্ধুদের সামনে জামাও বদলাতে পারতাম না।”
ওই তরুণীর মা বলছেন, “ছোট থেকেই মেয়ের অস্বাভাবিক রকম রোমের ঘনত্ব। বিশেষ করে দেহের নিম্নাংশে। আমার সবসময়ই মনে হতো যে ওর শরীরে নিশ্চয়ই কোনও বড় রোগ বাসা বেঁধেছে।”
সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। একদিন সকালে হঠাৎ ওই তরুণী বুঝতে পারেন, তার পায়ে হঠাৎ করেই খুব অস্বস্তি হচ্ছে। যন্ত্রণা থেকে ক্রমশ অবশ হতে শুরু করে তার দু’টি পা। তৎক্ষণাৎ তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে চিকিৎসকরা নানা রকম পরীক্ষা করে জানান, তার মেরুদন্ডে বিশেষ কোনও সমস্যা আছে। যা সচরাচর কারও হয় না।
চিকিৎসকরা জানান, তার মেরুদন্ডের গঠনে এক বিরল সমস্যা হয়েছে। অস্ত্রোপচার ছাড়া এর থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও উপায় নেই। কিন্তু এই রোগের লক্ষণ বলতে শুধু দেহের নিম্নাংশে ওই রোমগুচ্ছ। তাই দেহের এমন কোনও জায়গায় রোম দেখলেই তা হরমোনের সমস্যা বলে ধরে নেওয়ার কোনও কারণ নেই।
বেজিং-এর ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, “অস্ত্রোপচার সফল হলেও ওই তরুণীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সময় লাগবে। স্নায়ুজনিত সমস্যার লক্ষণ সবসময় আগে থেকে নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। তাই শরীরে অস্বাভাবিক কিছু দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।”