দুষ্কৃতীর পেটে এবং পেটের বাইরে থাকা চারটি ফোন। ছবি- সংগৃহীত
যত বারই ‘মেটাল ডিটেক্টর’ গায়ে ঠেকানো হচ্ছে, সে জানান দিচ্ছে কিছু একটা আছে। অথচ কেউ ধরতে পারছে না কী আছে এবং কোথায় আছে।
জুন-জুলাই মাসে বিহারের তিহার জেলে ধরে আনা হয় সেখানকার ‘কুখ্যাত ডাকাত’ রমন সাইনিকে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। অভিযুক্তকে প্রায়ই আদালতে হাজিরা দিতে যেতে হয়। প্রতি বারই আদালতে ঢোকা এবং বেরোনোর সময় অদ্ভুত এক বিড়ম্বনায় পড়তে হয় দু’পক্ষকেই।
আদালতে ঢোকা এবং বেরোনোর সময়, সকলেরই দেহে ‘মেটাল ডিটেক্টর’ ছুঁইয়ে দেখা হয় তাঁদের সঙ্গে অবাঞ্ছিত, ধাতব কিছু আছে কি না। সেই মতো যত বারই ওই অভিযুক্তের শরীরে যন্ত্র ঠেকানো হচ্ছে ‘বিপ বিপ’ শব্দে সে জানান দিচ্ছে রমনের শরীরে কিছু একটা আছে, যা তাঁর কাছে থাকার কথা নয়। সবচেয়ে বড় কথা শরীরের অন্যান্য জায়গায় যন্ত্রটি ঠেকলে কোনও শব্দ হচ্ছিল না। অথচ পেটের কাছাকাছি এলেই যন্ত্রটি সশব্দে বেজে উঠছিল। অভিযুক্তের পরনে পোশাকআশাক সব খুলিয়ে বার বার পরীক্ষা করা সত্ত্বেও কোনও লাভ হচ্ছিল না।
আদালত থেকে জেলে ফিরে এসে জেরার মুখে রমন স্বীকার করে নেন যে, ৬-৭ মাস আগে জেল থেকেই তিনি চারটি মোবাইল ফোন চুরি করেন। জেলে বিচারাধীন অভিযুক্তদের কাছে যেহেতু ফোন রাখার অনুমতি থাকে না, তাই চার-চারটি ফোন পেটের মধ্যে চালান করে দেন তিনি। পরে প্রয়োজনে বমি করে বার করে আনার পরিকল্পনাও ছিল বলে জানা গিয়েছে।
ক্রমাগত ‘মেটাল ডিটেক্টর’-এর এই ধারণা আসলে যে ভুল নয়, তা প্রমাণ হয় হাসপাতালে ‘সিটি স্ক্যান’ করার পর। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, প্রায় ০.৬ ইঞ্চি লম্বা চারটি মিনি সেল ফোন রয়েছে রমনের পেটে। তৎক্ষণাৎ অস্ত্রোপচার করে দুটি ফোন বার করা গেলেও বাকি দুটি ফোন পাকস্থলীর নলে আটকে যায়।
চিকিৎসকরা জানান, ওই দুটি ফোন বার করার জন্য জটিল আরও একটি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। তবে পেটের মধ্যে থাকা দু’টি ফোন আপাতত শারীরিক কোনও সমস্যা স়ৃষ্টি করবে না।