sleep

গর্ভাবস্থায় রাতে গাঢ় ঘুম? সম্ভব, যদি এ সব মানেন

কিছু মূল নিয়ম মেনে চললে রাতে ঘুমের সমস্যা কমতে পারে অনেকটাই। মাথায় রাখুন কিছু বিষয়।

Advertisement

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ১২:৫২
Share:

ঘুম হওয়া শুধু হবু মায়ের নয়, ক্ষতি করে গর্ভস্থ সন্তানেরও। ছবি: আইস্টক।

গর্ভসঞারের পর প্রথম তিন মাস ভাল ঘুম না হওয়ার প্রধান কারণ হরমোন৷ রাতে বার বার প্রস্রাবের বেগ আসে বলেও সমস্যা হয়৷ তার উপর ক্লান্তি এত বাড়ে যে না ঘুমলে শরীর আর পেরে ওঠে না। মাঝের তিন মাস কষ্ট তুলনায় কম হয়৷ তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা বাড়ে। শেষের তিন মাস শরীর বেশি ভারী হয়ে যায় বলে কী ভাবে শুলে আরাম হবে তা বোঝাও যায় না সব সময়৷

Advertisement

সাধারণ অবস্থায় সারা রাত জাগলেই পরের দিনের কাজে যেমন তার প্রভাব পড়ে। গর্ভাবস্থায় এই না ঘুম হওয়া শুধু হবু মায়ের নয়, ক্ষতি করে গর্ভস্থ সন্তানেরও। অনেকেই এই সময় ঘুম আনতে খুব হালকা কিছু ঘুমের ওষুধ খান, যদিও এই কাজ যত দ্রুত বর্জন করতে পারবেন, ততই ভাল।

এমন সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি, পুষ্টিবিদের সাহায্যও নিন। ঘুমের সময়, পরিমাণ ও শরীরে জলের চাহিদা কতটা হওয়া উচিত, এ সবও আপনার জানার তালিকায় থাকা উচিত। কিছু মূল নিয়ম মেনে চললে রাতে ঘুমের সমস্যা কমতে পারে অনেকটাই। মাথায় রাখুন কিছু বিষয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: এই নিয়ম মেনে চললে চকোলেট খান নিশ্চিন্তে, ঝরবে মেদ, পালাবে স্ট্রেস

বালিশ নিয়ে পাশ ফিরে ঘুমলে আরাম পাবেন৷ ছবি: শাটারস্টক।

সন্ধের পর থেকে চা–কফি–কোলা খাবেন না৷ রাতে ঘুমনোর ঘণ্টা দুয়েক আগে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন সমৃদ্ধ হালকা খাবার খান৷ এতে রক্তে সুগারের মাত্রা ঠিক থাকে বলে সমস্যা কম হয়৷ ঘুমনোর আগে উষ্ণ দুধ খেলে শরীরে ট্রিপটোফান নামে অ্যামিনো অ্যাসিড ক্ষরিত হয়ে ঘুম নিয়ে আসে৷ ওটমিল, বিস্কুট ও কলাও খেতে পারেন৷ এতে মেলাটোনিন ও সেরেটোনিন হরমোনের প্রভাবে চটপট ঘুম আসবে৷ তা ছাড়া এর প্রভাবে রক্তে সুগারের মাত্রা ঠিক থাকে বলেও কাজ হয় সহজে৷ মানসিক চাপ কমাতে শোওয়ার আগে উষ্ণ জলে স্নান করে হালকা বই পড়ুন বা গান শুনুন৷ ডিপ ব্রিদিং, যোগা, মেডিটেশন করুন নিয়মিত৷ মাসাজ করালেও শরীরে–মনে হালকা হতে পারবেন সহজে৷ কোনও কারণে মনে অশান্তি দানা বাঁধলে যুক্তি দিয়ে তাকে কাটাছেঁড়া করুন৷ প্রয়োজনে কারও সঙ্গে আলোচনা করুন৷ সমাধান মিললে তবে শুতে যান৷ না হলে দুশ্চিন্তার চোটে ঘুম বরবাদ হবে৷ আর এই সময় বাড়তি দুশ্চিন্তা শরীরের পক্ষে সুখকর নয়।

আরও পড়ুন: রক্তাল্পতা থেকে ক্যানসার, এই শাক প্রতিরোধ করে নানা অসুখ

সকালে বা বিকেলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো হালকা ব্যায়াম করুন৷ শোওয়ার আগে ঘণ্টা চারেকের মধ্যে করবেন না৷ পাশবালিশ জড়িয়ে পাশ ফিরে ঘুমোন৷ প্রয়োজন পড়লে পেটের নীচে একটা বালিশ রাখুন৷ একটা রাখুন পিঠে হেলান দিয়ে৷ ছ’মাসের পর থেকে শরীর ভারী হওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে মাথার নীচে ২–৩টে বালিশ দিয়ে আধশোওয়ার মতো করে ঘুমলে আরাম পাবেন৷ শিশুও ভাল থাকবে৷ যত অসুবিধাই হোক, ঘুমের ওষুধ খাবেন না৷ কারণ কম ঘুমলে সন্তানের কোনও ক্ষতি হয় না৷ কিন্তু ঘুমের ওষুধে হতে পারে৷ তবে বাড়াবাড়ি হলে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে পারেন৷ হরমোনের পরিবর্তন ও উদ্বেগের ফলে ভয়ের স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যাওয়া এ সময় খুব স্বাভাবিক ব্যাপার৷ সমস্যা কমাতে কাছের মানুষদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখতে পারেন৷ তাঁদের সহযোগিতা পেলে সমস্যা কমবে৷ তার পাশাপাশি গর্ভস্থ সন্তানকে নিয়ে ভাবুন গভীর ভাবে৷ তাকে অনুভব করার চেষ্টা করুন, ভাল থাকতে পারবেন৷

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement