ব্লু হোয়েল একটি ডিপ ওয়েব গেম। যে সব কমবয়সী ছেলেমেয়েরা অবসাদে ভুগছে, তারাই আসক্ত হয়ে পড়ছে এই গেমের।
এই গেমের ৫০টি ধাপ রয়েছে। এক বা একাধিক কিউরেটর দ্বারা চালিত হয় এই গেম। তাদের নির্দেশেই গেমের এক একটি নিয়ম মেনে চলেন অংশগ্রহণকারীরা।
নিয়মানুযায়ী, এক বার এই গেম খেললে বেরনো যাবে না। সে ক্ষেত্রে তাদের চাপে রাখতে পরিবারকে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।
এই গেমের বিভিন্ন ধাপে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। যেমন ব্লেড দিয়ে হাতে তিমির ছবি আঁকা, সারা গায়ে আঁচড় কেটে রক্তাক্ত করা কখনও ভোর ৪.৩০-তে উঠে একাকী ছাদের কার্নিসে ঘুরে বেড়ানো, রেল লাইনে সময় কাটানো, ভয়ের সিনেমা দেখা ইত্যাদি।
চ্যালেঞ্জ নেওয়ার পর সে সব ছবি কিউরেটরকে পাঠাতে হবে। সব ধাপ পার হওয়ার পর ৫০ তম চ্যালেঞ্জ হল আত্মহত্যা। এই চ্যালেঞ্জ নিলে গেমের সমাপ্তি হবে।
রাশিয়ায় শুরু হলেও এই গেমের শিকার এখন অনেক দেশই। বাদ নেই ভারতও। নড়েচড়ে বসেছে সরকার। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে থাকা ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জের লিঙ্ক সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। পাশাপাশি এই চ্যালেঞ্জের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজতে ইন্টারনেটে আরও বেশি নজরদারি রাখা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ আদতে সফ্টওয়ার, অ্যাপ্লিকেশন কিংবা গেম কোনওটাই নয়। এটি সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর একটি খেলা।
গোপন গ্রুপের মধ্যে অপারেট করা হয় এই গেম। সে ক্ষেত্রে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগায় তারা। যে ভাবে আইস বাকেট চ্যালেঞ্জ কিংবা হার্লেম শেক সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে ছড়িয়ে পড়েছিল, একই প্রক্রিয়ায় ছড়িয়েছে এই গেমও।
২০১৬-তে রাশিয়ায় ব্লু হোয়েল গেমের কিউরেটর সন্দেহে ফিলিপ বুদেকিন নামে ২২ বছর বয়সী তরুণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় ফিলিপ স্বীকার করে জানায়, এই চ্যালেঞ্জের যারা শিকার তারা এ সমাজে বেঁচে থাকার যোগ্য নয়। তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে নিজেকে ‘সমাজ সংস্কারক’ বলে দাবি করে ফিলিপ।