শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া বিশ্বজুড়ে এখন অন্যতম চিন্তার বিষয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, দূষণ, স্ট্রেস এবং লাইফস্টাইল শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে আনছে ক্রমশ। জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাসের সামান্য রদবদলেও কিন্তু শিশুদের সুস্থ রাখা যায়। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা যায়। এর জন্য কিছু অভ্যাসের বদল জরুরি। কী সেগুলো দেখে নিন
এখন শিশুদের খেলার সঙ্গীর বড় অভাব। কারণ, হয় পড়াশোনার চাপ আর না হয় ফ্ল্যাটবাড়িতে বসবাস করা। আর এই সব কারণেই বাচ্চারা আরও বেশি করে ইন্ডোর গেমের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে। ধুলোবালি গায়ে লাগিয়ে ছুটোছুটি করে খেলতে আর তাদের দেখা যায় না বললেই চলে। শহরাঞ্চলে যা আরও বেশি। শুধু তাই নয়, অভিভাবকেরাও অসুখ করবে এই ভয়ে বাচ্চাদের বাইরে খেলতে দেন না। কিন্তু শিশু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে ধুলোবালিতে খেলাটাও জরুরি। তার উপর রোদে খেললে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিও কমে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পর্যাপ্ত সময় ঘুম খুবই কার্যকরী। কারণ ঘুম কম হলে স্ট্রেস তৈরি হয়। যা মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ কমিয়ে দেয়। শিশুদের অন্তত ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। এর জন্য বাবা-মাকে অনেক বেশি সতর্ক হতে হবে। শিশুরা যাতে কম্পিউটার গেম না খেলে বা দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন নিয়ে খেলা না করে, সে দিকে নজর রাখতে হবে। কারণ এই ডিভাইসগুলোও ঘুম কমিয়ে আনে।
শিশুদের সামান্য অসুখেই বাবা-মায়েরা এত বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন যে, সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেন, এবং চিকিৎসক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনও না কোনও অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দেন। এতে চটজলদি রোগ সেরে যায় ঠিকই। কিন্তু ভিতরে ভিতরে শিশুকে আরও অনেক বেশি দুর্বল করে তোলে। অত্যধিক অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুকে যতটা সম্ভব অ্যান্টিবায়োটিক কম খাওয়ান এবং ঘরোয়া টোকটার মাধ্যমে রোগের মোকাবিলা করুন।
বাড়িতে বানানো খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করান শিশুকে। জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে রাখুন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণ তাজা সবজি আর ফল খাওয়ান।
খাবার আগে হাত ধুয়ে পরিষ্কার রাখা, খাবার পর দাঁত ভাল করে পরিষ্কার করা, নখ পরিষ্কার রাখা— সুস্থ থাকতে এই সমস্ত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। নিজের সন্তানকে এগুলো তাই অবশ্যই শেখান।