সারাদিন প্রাণপাত খাটাখাটনির পর শুতে এসেছেন। নিজের ঘুমও পর্যাপ্ত হল না, পার্টনারও চটে লাল। সৌজন্যে আপনার নাক ডাকা। এই সমস্যা প্রায় প্রতিটি বেডরুমে এখন জাঁকিয়ে বসেছে। কিন্তু মুক্তির পথটি প্রায় কেউই জানেন না।
আবার উল্টোটাও হতে পারে। ঘুমের সময় সঙ্গীর নাক ডাকায় বিরক্ত হওয়াটাই অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে অনেকের।শত অনুরোধ-উপরোধেওসমস্যা মেটে না।শেষমেশ নিজেকেই অন্য ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়। এ ভাবে হয়তো রাত কাটিয়ে দেওয়াটাই আপনার রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নাক ডাকার অভ্যাসকে খুব একটা নিরাপদ বলে ভাবতে রাজি নন চিকিৎসকরাও। শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা ছাড়াও স্লিপ অ্যাপনিয়াকেও এই অতিরিক্ত নাক ডাকার কারণ হিসাবে চিহ্নিত করছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণেও নাক ডাকার এই সমস্যা আসতে পারে, যা বাড়িয়ে তুলছে হৃদরোগ। ডেকে আনছে মৃত্যুর ঝুঁকি।
চিকিৎসকদের মতে, ন্যাজাল প্যাসেজে অতিরিক্ত মিউকাস জমে যাওয়ার কারণে ঘুমের সময় নাক ডাকে। এছাড়া স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণেও অনেক সময়ে নাক ডাকে। সোজা ভাবে বললে নাক ও গলার মধ্যে দিয়ে বায়ু চলাচলে বাধার সৃষ্টি হলেই গোটা শ্বাসযন্ত্রে এক ধরনের কম্পন তৈরি হয়। সে ক্ষেত্রে নাকডাকা এক ধরনের সঙ্কেতও।
স্লিপ অ্যাপনিয়া বা নাক ডাকার সমস্যাকে অবহেলা করা বোকামি। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন অবশ্যই। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে নাক ডাকার সমস্যাকে আয়ত্তে আনা যায়। জানেন কী কী কৌশলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে এই অভ্যাস?
ওজন ঝরান দ্রুত। অফিস থেকে ফেরার পথে কিছুটা পথ হাঁটুন। নজর দিন ডায়েটেও। ভাজাভুজি জাতীয় খাবারের প্রতি লোভ কমান। বরং বাড়িয়ে দিন ফল বা ফলের রস খাওয়া।
মদ্যপান নাক ডাকার অন্যতম ট্রিগার। মদে আসক্তি থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে আনুন। তালিকা থেকে বাদ দিন কফিও।
এক দিকে পাশ ফিরে শুলে নাক ডাকার সমস্যা অনেকটা হ্রাস পায়। তাই চিত হয়ে শোওয়ার অভ্যেস থাকলে তা বদলে ফেলতে হবে। আপনার সঙ্গীকেও বলুন, তাঁর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটলে আপনাকে পাশ ফিরিয়ে দিতে। প্রথম কয়েক দিন সমস্যা হবে, তারপরে অভ্যেস হয়ে যাবে।
ঘুমোতে যাওয়ার আগে ভারী খাওয়ার খাবার অভ্যাস ত্যাগ করুন। ঘুরিয়ে বললে, রাতের খাওয়ার খেয়েই শুতে যাবেন না। হাতে আড়াই ঘণ্টা সময় নিয়ে রাতের খাওয়া সারুন।
গলা ব্যথা জাতীয় সমস্যায় সেডাটিভ জাতীয় ওষুধ এড়িয়ে চলুন। দেখা গিয়েছে এই ধরনের সেডাটিভগুলি গলার পেশীগুলিকে সাময়িক আরাম দিলেও এর প্রভাবে নাক ডাকা বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
প্রতি দিন একই সময়ে ঘুমোতে যাওয়া অভ্যাস করুন। স্লিপ হাইজিন রক্ষা করা খুবই জরুরি।