একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাতে বলা আছে প্লাস্টিকের তৈরি কোন জিনিস ব্যবহার করা যাবে এবং কী ব্যবহার করা যাবে না।
জুলাই মাসের শুরু থেকে এ দেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে ‘সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক’-এর ব্যবহার। গত বছরই এই নিয়ম জারি করেছিল পরিবেশ মন্ত্রক। একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাতে বলা আছে প্লাস্টিকের তৈরি কোন জিনিস ব্যবহার করা যাবে এবং কী ব্যবহার করা যাবে না।
পরিবেশ মন্ত্রকের জারি করা বক্তব্যে বলা ছিল, ‘পলিস্টিরিন-সহ যে কোনও সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিকের উৎপাদন, বিক্রি, আমদানি, বিতরণ নিষিদ্ধ করা হবে ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে।’ সেই নিয়মই জারি হতে চলেছে।
কী এই ‘সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক’?
নামই বলে দিচ্ছে বিষয়টি। যে প্লাস্টিক এক বারের বেশি ব্যবহার করা যায় না বা উচিত নয়, তাকে ‘সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক’ বলে। এ দেশে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে সে সব প্লাস্টিকই তৈরি হয়। শ্যাম্পু, সাবানের বোতল থেকে মাস্ক, ময়লা ফেলার প্যাকেট, চিপ্সের প্যাকেট— সবই তৈরি হয় এই ধরনের প্লাস্টিক দিয়ে। ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, গোটা বিশ্বে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের জিনিসের এক তৃতীয়াংশ এই ‘সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক’ দিয়ে তৈরি। এই ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার যে সব দেশে বেশি, তার একটি তালিকাও তৈরি করা হয়। তাতে দেখা যায় প্রথম ১০০-র মধ্যে রয়েছে ভারতের নাম।
কোন কোন ধরনের জিনিস ব্যবহার বন্ধ হচ্ছে?
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই নিষিদ্ধ হয়েছিল ৭৫ মাইক্রনের নীচের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি ব্যাগের ব্যবহার। ডিসেম্বর থেকে তা ১২০ মাইক্রনে পৌঁছয়। উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে সময় দেওয়ার জন্যই এ ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
মিষ্টির বাক্স, প্লাস্টিকের কাপ, চামচ, ছুরি, বাটি, নিমন্ত্রণের কার্ড, সিগারেটের প্যাকেট, কাচ পরিষ্কার করার বাড, আইসক্রিমের স্টিক— সবই এ বার থেকে নিষিদ্ধ তালিকায় পড়ছে।
এ বার পালা আরও কড়া হওয়ার। মিষ্টির বাক্স, প্লাস্টিকের কাপ, চামচ, ছুরি, বাটি, নিমন্ত্রণের কার্ড, সিগারেটের প্যাকেট, কান পরিষ্কার করার বাড, আইসক্রিমের স্টিক— সবই এ বার থেকে নিষিদ্ধ তালিকায় পড়ছে। ১০০ মাইক্রনের নীচের প্লাস্টিক দিয়ে যে সব ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি হয়, তা-ও এখন থেকে নিষিদ্ধ।
কেন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে এই ধরনের জিনিস?
সামগ্রিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। সাধারণত নিচু মাইক্রনের কোনও প্লাস্টিকের জিনিস ব্যবহার নিয়ে যত না সমস্যা, তা পুনর্ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কা অনেক বেশি। এই সব প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করা যায় না। তাই ফেলে দেওয়ার পর ধীরে ধীরে ভাঙতে থাকে। এতই ছোট ছোট ভাগে ভেঙে যায় যে, তা আর আলাদা করে সরানো সম্ভব হয় না। সময়ের সঙ্গে মিশে যায় বিভিন্ন খাদ্যবস্তুতে। তার মাধ্যমে শরীরে ঢুকে যেতে পারে। এমনটা ঘটেই স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। তা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত।
এই নিয়ম বহাল রাখতে কী করা হবে?
কেন্দ্রই মূলত নজর রাখবে পুরো বিষয়টিতে। পাশাপাশি, বিভিন্ন রাজ্যের পরিবেশ দফতরের তরফে নজর রাখা হবে। প্লাস্টিকের বিভিন্ন কারখানায় যাতে তা তৈরির জিনিসপত্র সরবরাহ না করা হয়, সে দিকে নজর দিতেও বলা হয়েছে। মূলত এই ধরনের প্লাস্টিক তৈরি বন্ধ করার দিকেই নজর দেওয়া হয়। এ ছাড়াও আগে তৈরি প্লাস্টিক যাতে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ না করা হয়, সে দিকেও নজর রাখা হবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।