চকচকে ত্বক পেতে চালের জল মুখে মাখছেন। সকলের জন্য তা কিন্তু সমান ভাল না-ও হতে পারে। ছবি:ফ্রিপিক।
দাগহীন মুখ। কাচের মতো ঝকঝকে ত্বক। কোরিয়ানদের সৌন্দর্য এবং ত্বক নিয়ে চর্চা বহমান। কী ভাবে তাঁদের মতো সুন্দর হওয়া যায়, তা নিয়ে কৌতুহলী অনেকেই। সমাজমাধ্যমে এমন সৌন্দর্য মেলার হদিস দিয়ে রয়েছে নানা রকম ভিডিয়ো, পোস্ট। কেউ কেউ বলেন, সে দেশের নারীদের রূপচর্চার তালিকায় থাকে চালের জল। ত্বকে বয়সের ছাপ ঠেকিয়ে রাখা থেকে জেল্লা বৃদ্ধি, তেলতেলে ভাব কিংবা ট্যান দূর করা—সবই সম্ভব হয় সাধারণ উপকরণের গুণে। আর তা দেখেই রূপচর্চার তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে চালের জল। তবে যা মাখছেন, তাতে কি শুধু উপকারই হবে?
ত্বকের চর্চায় প্রাকৃতিক উপাদান বা চালের জলের ব্যবহার নতুন নয়। এতে ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে না। তবে, তার অর্থ এমন নয় যে, চালের জল দিয়ে মাস্ক বানালে বা মুখে ব্যবহার করলেই খোলতাই হবে রূপ। আসলে যে কোনও জিনিস মুখে মাথার আগে ত্বকের ধরন সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। জানা জরুরি সেই জিনিসটি ব্যবহারের বিধি।
যেমন ত্বকের যত্নে ভাল হলুদ। প্রাচীন কাল থেকে রূপচর্চায় এই উপাদানটি ব্যবহার হয়ে আসছে। অথচ বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রথামাফিক কাঁচা হলুদ মাখতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা চোপড়া জোনাসের ভাই সিদ্ধার্থ চোপড়ার স্ত্রী নীলম উপাধ্যায়। হলুদ থেকে অ্যালার্জি হয়েছিল তাঁর। তিনি যেমন জানতেন না হলুদ তাঁর ত্বকের উপযোগী নয়, তেমনই না বুঝে ‘উপকারী’ জিনিস মাখলেও কখনও কখনও সমস্যা হতে পারে।
চালের জল থেকে ত্বকে কী ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে?
ত্বক শুষ্ক হতে পারে: চালের জল ব্যবহারেরও নিয়মবিধি রয়েছে। মুখে অতিরিক্ত জল বার বার মাখতে থাকলে বা মুখে কিছু মেখে ধুতে থাকলে ত্বক তার স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারাতে পারে। ত্বকে থাকা সিবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে সিবাম বা তেল নিঃসৃত হয়। এই তেল শুধু ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে না, সুরক্ষা বর্ম হিসাবেও কাজ করে। বার বার জলের ব্যবহারে স্বাভাবিক তেল ধুয়ে গিয়ে ত্বক রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।
অ্যালার্জি: ত্বকের জন্য ভাল অনেক উপকরণই সকলের জন্য উপযুক্ত নয়। বিশেষত ত্বকের ধরন স্পর্শকাতর হলে যা খুশি মাখা চলে না। চালের জলেও কারও অ্যালার্জি থাকতে পারে। সেটা না জেনে মেখে ফেললেই বিপত্তি। ফলে রূপচর্চায় নতুন কোনও উপকরণ ব্যবহার করতে হলে, ত্বকের কোথাও ঘণ্টাখানেকের জন্য লাগিয়ে দেখে নিন কোনও জ্বালা, চুলকানি বা র্যাশ বেরোচ্ছে কি না।
ব্রণ: ত্বক টানটান রাখতে বলিরেখা কমাতে চালের জল সহায়ক হলে অতিরিক্ত মাত্রায় তা ব্যবহার করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। জলে থাকা স্টার্চ বা শ্বেতসারে ত্বকের সূক্ষ্ম ছিদ্রমুখ বন্ধ হয়ে গেলে ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চালের জল মেখে সমস্যা সকলের দেখা দেয় না। ত্বক ভাল রাখতে চালের জলের উপকারিতাও কম নয়। তবে বেশি নয়, দিনে এক বার বা সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার তা মুখে মাখতে পারেন।
চালের জলে তুলো ভিজিয়ে পরিষ্কার মুখে তা টোনার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। আবার মুলতানি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে ঘরোয়া প্যাক বানিয়ে নিতে পারেন। এই প্যাক মাসে দু’বার ব্যবহার করলেই যথেষ্ট।