কোন বয়সে কী শেখাবেন? ছবি: সংগৃহীত।
সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে তোলার ইচ্ছে থাকে প্রত্যেক অভিভাবকের। দশ জনের মধ্যে এক জন হতে না পারলেও, খুদে যেন ভাল মানুষ হয়। এমন আশা তো প্রতিটি মা-বাবরই থাকে। তবে এই ডিজিটাল যুগের শিশুদের মানুষ করতে, মূল্যবোধ বোঝাতে গেলে কিন্তু পুরনো ধ্যান-ধারণা মেনে চললে হবে না। দশে পা দেওয়ার আগেই যদি তাকে প্রত্যেক দিনের বাজারের হিসেব বোঝাতে যান, তা হলে তা খুদের মাথার উপর দিয়ে যাবে। তাদের মন বুঝে, তাদের মতো করে অভিভাবকদের শেখানে হবে ভাল মানুষ হওয়ার মন্ত্র।
বছর দশেকের শিশুকে ঠিক কোন কোন বিষয় শেখাবেন?
১) অন্যকে সম্মান করা
শুধু মা-বাবা নয়, বাড়ির প্রতিটি সদস্যকে সম্মান করতে শেখান। বাড়ি থেকে এই অভ্যাস শুরু হলে বাইরে গিয়ে অসুবিধেয় পড়ার কথা নয়। অন্যকে সম্মান করতে শিখলে, তবেই যে নিজে সম্মান পাওয়া যায়, সেই পাঠ দিন খুদেকে।
২) দায়িত্ব নিতে শেখা
ছোট থেকেই বাড়ির ছোট ছোট কাজ তাকে করতে শেখান। বাড়িতেই প্রত্যেকের যেমন কিছু না কিছু দায়িত্ব থাকে, তেমন তারও আছে। যেমন গাছে জল দেওয়া, নিজের জিনিস গুছিয়ে রাখা, বাড়িতে যদি পোষ্য থাকে তার যত্ন নেওয়ার মতো কাজ করতে শেখান তাকে।
৩) সমস্যার সমাধান করা
অঙ্কের খাতায় শুধু যোগ, বিয়োগ নয়। জীবনে ছোটখাটো সমস্যার সমাধান করার সুযোগ দিতে হবে খুদেকে। মাথা খাটিয়ে সে সমস্যার সমাধান করতে পারে কি না, সেই দিকে নজর রাখবেন অভিভাবকেরা।
৪) টাকা পয়সার হিসাব
ছোট থেকেই টাকা-পয়সার মূল্য বোঝান খুদেকে। কত টাকা থাকলে কতটুকু খরচ করা যায়, কী ভাবে টাকা অর্জন করতে হয়, সে সব বিষয়ে একটু একটু করে বোঝাতে শুরু করুন।
জীবনে ছোটখাটো সমস্যার সমাধান করার সুযোগ দিতে হবে খুদেকে। ছবি: সংগৃহীত।
৫) শরীরচর্চা
খেলাধুলোর পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা করাও কিন্তু একটা কাজ। নিজের শরীরের যত্ন নেওয়াও কিন্তু তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। পাশপাশি নিজের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতেও শেখান খুদেকে।
৬) আবেগ নিয়ন্ত্রণ
অল্প আঘাতে কেঁদে ভাসানো কিংবা সামান্য কিছুতেই বিপুল উচ্ছ্বাস— কোনটিই ভাল নয়। নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বড় হয়ে কিন্তু বিভিন্ন রকম মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে আপনার সন্তান।
৭) ডিজিটাল স্বাক্ষরতা
এখন সব কিছুই প্রযুক্তি নির্ভর। তাই চাইলেও ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার থেকে তাদের দূরে রাখতে পারবেন না। কিন্তু ডিজিটাল যন্ত্র থেকে কী ধরনের বিপদ আসতে পারে, সেই শিক্ষা তো দেওয়া যেতেই পারে। খুদের হাতে কত ক্ষণ ফোন থাকবে বা সে কী কী দেখবে, তার সীমা বেঁধে দিতে হবে অভিভাবকদেরই।