জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। তার রেশ পড়ছে ত্বকেও। কোমলতা হারিয়ে ত্বক হয়ে উঠছে রুক্ষ, নির্জীব।
শীতেও কোমল, উজ্জ্বল ত্বক কে না চান! তার জন্য প্রয়োজন পরিচর্যা। তা শুরু করা যেতে পারে স্ক্রাবিং দিয়ে। মৃত কোষ তুলে ত্বককে প্রাণবন্ত করে তুলতে স্ক্রাবিংয়ের জুড়ি নেই। বাড়িতেই সহজে তৈরি করা যায় নানা ধরনের স্ক্রাব।
মুখের স্ক্রাব
মধু-দই: মধু ও টক দই মিশিয়ে ফেস প্যাক তৈরি করে তা লাগাতে পারেন। সার্কুলার মোশনে ঘষে ঘষে সেই প্যাক লাগাতে হবে সারা মুখে। ত্বকে পুষ্টি জোগাবে। প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজ়ার হিসেবে মধু অতুলনীয়। এ ছাড়া মধুতে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল উপাদান ব্রণ বা ফুসকুড়ি কমাতে কার্যকর।
চালের গুঁড়ো: চালে রয়েছে অ্যান্টি-এজিং উপাদান, যা বয়স ধরে রাখতে সহায়ক। সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও ত্বককে রক্ষা করে। চালের গুঁড়োর সঙ্গে মধু ও টক দই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি মুখে ও ঘাড়ে ১০-১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এর পরে ঠান্ডা জল দিয়ে ঘষে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের কালচে ভাব দূর করে। আবার শসার রস ও লেবুর রসের সঙ্গে চালের গুঁড়ো মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট আলতো করে মাসাজ করুন। এতে ত্বক সতেজ হয়ে উঠবে। সপ্তাহে দু’দিন অলিভ অয়েলের সঙ্গে চালের গুঁড়ো মিশিয়ে পাঁচ মিনিট ত্বকে মাসাজ করলে মৃত কোষ উঠে যায়।
মুসুর ডাল: সম পরিমাণ মুসুর ডাল গুঁড়ো ও কাঁচা হলুদ বাটা, দই ও বেসনের সঙ্গে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এটা দিয়ে আলতো করে মাসাজ করুন সারা মুখে। তার পরে ধুয়ে নিন। লেবুর পরিবর্তে অলিভ অয়েলও দিতে পারেন। ত্বক শুষ্ক হলে মুসুর ডাল ও মধুর প্যাক খুব ভাল কাজে দেয়। এক চা চামচ করে মধু ও মুসুর ডাল বাটা মিশিয়ে নিন। প্রথমে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে তার পরে এই প্যাক লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। আলতো মাসাজ করে প্যাক তুলে ফেলুন।
আটা-ময়দা-বেসন: সব রান্নাঘরেই এগুলি মজুত থাকে। তা দিয়েই বানিয়ে ফেলতে পারেন ফেসপ্যাকের বেস। আটায় ভুসির পরিমাণ বেশি থাকায় প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবেও ভাল। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আটার প্যাক উপযোগী।
চিনি: অলিভ অয়েল ও কয়েক ফোঁটা নারকেল তেলের সঙ্গে এক চামচ চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব করুন মুখে। যতক্ষণ না চিনি গলে যায়, ততক্ষণ ধরে স্ক্রাব করুন। এর পরে ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিন মুখ। মৃত কোষ উঠে ঝলমলে হবে ত্বক।
বডি স্ক্রাব
দারচিনি-মধু: মুখের ত্বক তুলনায় বেশি স্পর্শকাতর। তাই শরীরের ত্বকের জন্য দরকার অন্য স্ক্রাব। দারচিনি গুঁড়োর সঙ্গে মধু, লেবুর রস ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। হাত এবং পায়ে ভাল করে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট রেখে আলতো মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।
গোলাপজল-পুদিনা পাতা: এক টেবিল চামচ গোলাপজল অল্প ঠান্ডা জলে মেশান। তাতে এক মুঠো কুচোনো পুদিনা পাতা, গোলাপের পাপড়ি, এক চামচ অলিভ অয়েল মেশান। পা অল্প ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে মিশ্রণটি পায়ের পাতায় ও গোড়ালিতে স্ক্রাব করুন। সপ্তাহে বার তিনেক এমনটা করতে পারলেই পা হয়ে উঠবে সুন্দর ও ট্যান ফ্রি।
আমন্ড-টম্যাটো: বডি স্ক্রাবের জন্য চিনি, আমন্ড গুঁড়ো, দুধ, টম্যাটোর রস দিয়ে প্যাক তৈরি করতে পারেন। গোটা শরীরে প্যাক লাগিয়ে আলতো হাতে মাসাজ করুন ১৫ মিনিট। তার পরে ভাল করে ধুয়ে নিন।
হাত ও পায়ের স্ক্রাব
চিনি-অলিভ অয়েল: হাত ও পায়ের ত্বক শক্ত হয়ে যায়, চামড়া ওঠে, ফেটে যায়। রেহাই পেতে চিনি ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে হাত-পায়ে পাঁচ মিনিট মাসাজ করে ধুয়ে নিন।
স্ক্রাব করার পরে অবশ্যই ময়শ্চারাইজ়ার লাগানো জরুরি।
মডেল: ঐশ্বর্য সেন
ছবি: জয়দীপ মণ্ডল, মেকআপ: সৌমেন সেনগুপ্ত, লোকেশন: বিবোনি, কসবা নিউমার্কেট