গাছেদের কথপোকথনের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে। ছবি: আনস্প্ল্যাশ।
সাল ১৯০১। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু প্রথম প্রমাণ করেছিলেন গাছেরও জীবন আছে। তবে এই প্রথম জাপানি বিজ্ঞানীরা ভিডিয়ো প্রকাশ করে জানালেন যে, একে অপরের সঙ্গে কথাও বলতে পারে উদ্ভিদেরা। গাছেদের কথপোকথনের ‘রিয়্যাল টাইম ফুটেজ’ সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন তাঁরা। সায়েন্স অ্যালার্টের তথ্য অনুসারে, গাছপালা বায়ুবাহিত যৌগগুলির সূক্ষ্ম কুয়াশা দ্বারা বেষ্টিত থাকে, এই যৌগগুলিকেই তারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে। এই যৌগগুলি বিপদের আঁচ পেয়েই একে অপরকে সতর্ক করে।
জাপানি বিজ্ঞানীরা যে ভিডিয়োটি প্রকাশ করেছেন তাতে দেখা গিয়েছে কী ভাবে গাছপালা এই বায়বীয় অ্যালার্মগুলি গ্রহণ করে এবং প্রতিক্রিয়া জানায়। সাইতামা বিশ্ববিদ্যালয়ের আণবিক জীববিজ্ঞানী মাসাতসুগু টয়োটার নেতৃত্বে গবেষণাটি চালানো হয়েছে। গবেষণাপত্রটি নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর দলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ইউরি আরতানি এবং তাকুয়া উমুরা।
বিজ্ঞানীদের দল পর্যবেক্ষণ করেছেন যে কী ভাবে একটি অক্ষত উদ্ভিদ কীটপতঙ্গের আক্রমণের পর ক্ষতিগ্রস্ত উদ্ভিদদের দ্বারা নির্গত উদ্বায়ী জৈব যৌগগুলির মাধ্যমে সজাগ হয়ে ওঠে এবং পরিবেশগত বিপদ থেকে নিজেদের রক্ষা করে। উদ্ভিদদের কথপোকথন রেকর্ড করার জন্য বিজ্ঞানীরা একটি এয়ার পাম্পকে পাতা আর শুঁয়োপোকা ভর্তি বাক্সের সঙ্গে এবং সর্ষে পরিবারের একটি সাধারণ আগাছা অ্যারাবিডোপসিস থালিয়ানা ভর্তি আর একটি বাক্সের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন। গবেষকরা একটি উজ্জ্বল সবুজ রঙের বায়োসেন্সর যোগ করেছিলেন যা ক্যালশিয়াম আয়নকে শনাক্ত করতে সাহায্য করেছিল। মানুষের শরীরের কোষগুলিও একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এই ক্যালশিয়াম সিগন্যালিং পদ্ধতি ব্যবহার করে।
ভিডিয়োতে স্পষ্ট ধরা পড়েছে, ক্ষতিগ্রস্থ গাছগুলি তাদের আহত প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বার্তা পাওয়া মাত্রই পাতায় ক্যালশিয়াম সংকেতের বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিজের প্রতিক্রিয়া জানায়।