করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ রুজুতা দিওয়েকর জানালেন ওজন কমানোর রহস্য। —গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
খাওয়ার পাতে রুটি, শাক আর বেশ অনেকখানি মাখন! যিনি খাচ্ছেন, তিনি মোটেও শরীরকে অবহেলা করার মানুষ নন, বরং তাঁকে দেখেই অনুপ্রেরণা পায় অনেকে। জিম থেকে শুরু করে শরীরচর্চা, সবেতেই রীতিমতো ঘাম ঝরান তিনি। এমন মানুষের পাতে এতটা মাখন!
সম্প্রতি টুইটারে করিনা কপূরের এই ছবি প্রকাশ হওয়ার পরই তা নিয়ে জোরদার আলোচনা শুরু হ। সোশ্যাল সাইটে। সকলেরই বিস্ময়, শরীর নিয়ে এত সচেতন এক জন ডায়েটে এতটা মাখন রাখেন কী করে! তা হলে কি এই ক্ষতি কিছুটা চিট ডায়টের ফল নাকি মাখন থেকে আসা মেদ ঝরাতে বাড়তি সময় শরীরচর্চা করবেন করিনা?
করিনার এই মাখন-রহস্য ও নিত্য ডায়টে ঠিক কী কী রাখা উচিত তা নিয়ে টুইটারেই পাল্টা জানালেন করিনার ডায়েট বিশেষজ্ঞ ও নিজস্ব পুষ্টিবিদ রুজুতা দিওয়েকর। শুধু করিনা কপূরই নন, আলিয়া ভট্ট, ক্যাটরিনা-সহ বলিউডের সুপারস্টার নায়িকাদের অনেকেই রুজুতার পরামর্শ মেনে চলেন। এক জন সুস্থ মানুষের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেমন হওয়া উচিত ডায়েট, মাখন কি একেবারেই ব্রাত্য করে রাখা উচিত? রুজুতা জানালেন এমন নানা কথাই।
আরও পড়ুন: জটিল হচ্ছে ডেঙ্গি-আতঙ্ক, যৌন সম্পর্কও এই রোগ ছড়ায় কি? কী করেই বা রুখবেন অসুখ?
A post shared by Rujuta Diwekar (@rujuta.diwekar) on
এক জন সুস্থ মানুষের সারা দিনের খাওয়ার তালিকায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে ব্রেকফাস্টে। সারা রাত শরীরের কোষগুলির মেরামতি চালায় শরীর। তাই সকালে তাকে দিতে হবে পুষ্টিগুণে ঠাসা খাবার। সকালের খাবারে অনেকেই সিরিয়াল ফুডের দিকে ঝোঁকেন। শরীরের জন্য তা অত্যন্ত ক্ষতিকর। প্যাকেটবন্দি ওটস, কর্নফ্লেক্স বাদ দিয়ে তাই দেশীয় খাবার চিড়ে, সুজিতে আস্থা রাখুন। ইডলি, তরকারি ছাড়া ধোসা এগুলোও ভাল বিকল্প। সঙ্গে রাখুন ডিম সেদ্ধ। প্যাকেট করা সিরিয়ালে অতিরিক্ত নুন-চিনি থাকে আর শরীর একটা সময়ের পর এ সব খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে বলে লাভ পাওয়া যায় না। মাঝে মাঝেই বদল করুন ব্রেকফাস্ট। সকালের তালিকা থেকে বাদ দিন চা-কফি, বিস্কুট। বিস্কুটে প্রচুর চিনি, নোনতা বা ডায়াবেটিক বিস্কুটেও নুনের আধিক্য থাকে। এ ছাড়া চা-বিস্কুট খিদেকে মেরে দেয়। তাই এড়িয়ে চলুন এটি। ঘুম ভাঙার কুড়ি-তিরিশ মিনিটের মধ্যে একটা ডিম সেদ্ধ, গোটা ফল ও কিছু কাঠবাদাম খান। খিদে জব্দ করার পাশাপাশি পুষ্টি পাবে শরীর। প্রতি দু’ঘণ্টা অন্তর খেতে হবে কিছু না কিছু। ডায়েটে এমন খাবার রাখুন যা শরীরে শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট সব কিছুর চাহিদা মেটায়। ওজন মেপে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। জেনে নিন ঠিক কত ক্যালোরির খাবার আপনার প্রয়োজন। ডায়েট মেনে চলুন সেই ক্যালোরি অনুযায়ী।
আরও পড়ুন: সুস্থ যৌন সম্পর্ক কমায় মাইগ্রেনের সমস্যাও, বলছে গবেষণা
চিড়ে, সুজিতেই সাজান ব্রেকফাস্টের পাত। ছবি: শাটারস্টক।
ঘি-মাখন কোনও কিছুই একেবারে বাদ নয়। শুধু জেনে নিতে হবে এক চামচ ঘি বা মখন থেকে কতটা ক্যালোরি পেলেন। কোন খাবারে কতটা ক্যালোরি এটুকু জেনে নিন চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞ কারও থেকে। দিনের বাকি খাবার সেই ক্যালোরি অনুসারে সাজান। সাধারণত এক চামচ ঘি-মাখনে দশ-এগারো ক্যালোরি পাবেন। এ বার ১০০০ ক্যালোরির ডায়েট মানলে ডায়েটের ১০ শতাংশই পেয়ে গেলেন মাখন বা ঘি থেকে। তা হলে সে দিন এমন খাবার বাছুন যা বাদবাকি ৯০ শতাংশ পূরণ করতে পারবে। সাপ্লিমেন্ট, ট্যাবলেট, পাউডার, প্যাকেটবন্দি খাবারের চেয়ে ভরসা রাখুন দেশীয় খাবারে। শাক-সব্জি বাড়ান, ভাতের পরিমাণ কমিয়ে সঙ্গে রাখুন রুটি। ভাত ছেড়ে দিতে পারলেও অসুবিধা নেই কোনও। জল খান প্রচুর। ডায়েটের পাশাপাশি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট যোগা, ওয়েট নিয়ে ব্যায়াম, দৌড়নো বা হাঁটা ইত্যাদি অবশ্যই রাখুন রুটিনে।