সন্তানকে কী ভাবে সৃজনশীল করে তুলবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
গিটার দেখলেই উৎফুল্ল হয়ে ওঠে খুদে? টুংটাং সুর তোলে নিজেই। গানবাজনায় উৎসাহ থাকে অনেক শিশুরই। পড়াশোনার বাইরে এখন শিশুকে হারমোনিয়াম, তবলা, গিটার বা পিয়ানো শেখানোর প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন বাবা-মায়েরাও। গান-বাজনার চর্চা সন্তানের বুদ্ধির বিকাশ তো ঘটায়ই, সঙ্গে স্মৃতিশক্তিও উন্নত করে। গানের স্বরলিপি বা বাজনার তাল মনে রাখার অভ্যাসই খুদের স্মৃতিশক্তিকে আরও তরতাজা করে। কেবল গানবাজনা নয়, ছবি আঁকা, আবৃত্তি শেখা, নাচ করা অথবা যে কোনও খেলায় যদি শিশুর আগ্রহ থাকে, তা হলে তাকে আরও বেশি উৎসাহ দেওয়াই উচিত বলে মনে করছেন পেরেন্টিং কনসালট্যান্টরা।
এখনকার খুদেরা বেশির ভাগ সময়েই মোবাইল বা কোনও বৈদ্যুতিন গ্যাজেট নিয়ে মেতে থাকে। পড়াশোনার বাইরে গল্পের বই পড়া বা কোনও সৃজনশীল কাজ করার উৎসাহ কমছে দিন দিন। হাতে মোবাইল না দিলেই বায়না করে অনেক শিশুই। তাই ছোট থেকেই তাদের নানা রকম সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দেওয়া জরুরি বলেই জানালেন পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পারমিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘যে শিশু গিটার শিখতে চায়, সে হয়তো ক্যানভাসে এলোমেলো আঁচড় কাটছে। আবার যে ব্যাডমিন্টন পেলে খুব খুশি, তাকে হয়তো রোজ নাচের ক্লাসে যেতে হয়। ফলে নিজের সন্তানের সহজাত প্রতিভা কোন দিকে, সেটা বুঝে নেওয়াও খুব জরুরি। ৪-৫ বছর বয়স থেকেই শিশুদের গানের স্কুল, তবলার ক্লাস কিংবা অন্য কোনও বাদ্যযন্ত্র শিখতে উৎসাহ দিলে, তাদের মনঃসংযোগ বাড়বে। মোবাইলে আসক্তি তৈরি হবে না।
মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলছেন, “গান-বাজনার চর্চা ও অভ্যাস সন্তানকে ধৈর্যশীল করে তোলে। তা ছাড়া মঞ্চে সকলের সামনে যদি তা প্রদর্শন করা সুযোগ পায়, তা হলে ছোট থেকেই ভীতি দূর হবে। আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়বে।” গানবাজনা শিশুর মনও ভাল রাখবে। ফলে একাকিত্ব, হতাশা, অবসাদ গ্রাস করতে পারে না সহজে।
এমন আরও অনেক সৃজনশীল কাজ আছে, যা শিখতে উৎসাহ দিতে পারেন অভিভাবকেরা। যেমন ছবি আঁকা। ছোট থেকেই আঁকার ক্লাসে ভর্তি করে দিলে ভাল হয়। রং-তুলি নিয়ে যেমন খুশি আঁকতে আঁকতেই শিশুর কল্পনাশক্তি উন্নত হবে। একাগ্রতাও বাড়বে।
আবার অনেকের আগ্রহ থাকে খেলাধূলায়। কেউ ক্রিকেট ভাল খেলে, কেউ ফুটবল, কেউ ব্যাডমিন্টন বা টেনিস। যে খেলাতেই আগ্রহ থাকুক না কেন, তাতে বাবা-মা আরও উৎসাহ দিলে শিশুর মনোবল বাড়বে। সন্তানকে কেবল নতুন নতুন জিনিস কিনে দিয়ে কিংবা প্রশিক্ষকের হাতে ছেড়ে দিলেই হবে না, তাকে সঙ্গ দেওয়াও জরুরি। ঠিক বা ভুল বুঝিয়ে দিতে হবে অভিভাবককেই।