Exam Anxiety

গণিতে ভয়! মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষার আগে কী ভাবে আতঙ্ক কাটিয়ে সুস্থ থাকবে সন্তান?

অঙ্ক পরীক্ষার আগে ভয়, আতঙ্কে ভোগে অনেকেই। পরীক্ষা দেওয়ার সময়ে উদ্বেগ, আতঙ্কে বমি করা, শরীর খারাপ হওয়ার মতো লক্ষণও দেখা দেয় অনেকের। পরীক্ষা-ভীতি দূর করার সহজ কিছু উপায় আছে। অঙ্ক পরীক্ষার আগে তা জেনে রাখা ভাল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫৪
Share:
Tips for Madhyamik Students to Overcome Anxiety before the Math Exam

অঙ্ক পরীক্ষার আগে ভয় দূর হবে কী ভাবে? ফাইল চিত্র।

বহু পড়ুয়ার কাছেই অঙ্ক বেশ ভয়ের। তাই অঙ্ক পরীক্ষার আগে ভয় যে করবে, সে তো স্বাভাবিকই। মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। ১৫ তারিখ অঙ্ক পরীক্ষা। এখন থেকেই হয়তো বুক দুরুদুরু করছে অনেকের। ছেলেমেয়েদের তো বটেই, বাবা-মায়েদের চিন্তাও কিছু কম নয়। জানা প্রশ্ন আসবে তো, অঙ্কে ভুল হবে না তো, কষতে না পারলে কী হবে— এই সব ভাবনায় রাতের ঘুম উড়েছে অনেকেরই। তবে পরীক্ষা ভাল দিতে হলে ভয় কাটিয়ে উঠতেই হবে। তার জন্য ছাত্রছাত্রীদের যতটা মনের জোর রাখতে হবে, ততটাই দায়িত্ব নিতে হবে অভিভাবকদেরও। রোজের চর্চা আর কিছু অভ্যাস থাকলেই এই ভয় কেটে যাবে সহজে।

Advertisement

ঠিক কেমন অভ্যাস?

সবচেয়ে আগে বাড়িতে এমন আবহ রাখতে হবে, যাতে ছেলেমেয়েরা মানসিক চাপে না ভোগে। পেরেন্টিক কনসালট্যান্ট পায়েল ঘোষের পরামর্শ, “সব অঙ্ক পারতেই হবে, বেশি নম্বর পেতেই হবে অথবা ভাল নম্বর না পেলে জীবন বৃথা হয়ে যাবে— এমন কথাবার্তা ছেলেমেয়েদের সামনে না বলাই ভাল। এতে উদ্বেগ আরও বাড়ে। বরং প্রতি বছর স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার আগে ঠিক যেমন ভাবে থাকেন, তেমনই পরিবেশ রাখতে হবে বাড়িতে।”

Advertisement

টিভি যতটা সম্ভব কম দেখাই ভাল। রাত জেগে পড়ার প্রয়োজন নেই, বরং রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে, সকালে উঠে হালকা যোগাসন করে পড়তে বসলে বেশি ভাল হয়। পায়েল জানাচ্ছেন, পরীক্ষার আগে রোজ ঘড়ি ধরে টেস্ট পেপার থেকে প্রশ্ন নিয়ে সমাধান করতে হবে। প্রয়োজনে সেই সমাধান কোনও শিক্ষককে দিয়ে মূল্যায়ন করিয়ে নিতে পারলে ভুলভ্রান্তি শুধরে নেওয়া সম্ভব। তা না হলে নিজেরাই উত্তর মিলিয়ে দেখে নেওয়া যেতে পারে। মনের উপর বেশি চাপ নেওয়ার প্রয়োজন নেই। পরীক্ষার আগের দিন নতুন কিছু শিখতে গেলে ভয়টা বাড়বে। কোনও নতুন অঙ্ক যা দেখে মনে হচ্ছে আগে করা হয়নি বা শক্ত লাগছে, তা এই সময়ে আর নতুন করে করার দরকার নেই। প্রস্তুতি যতটা আছে, ততটাই থাক। সেটাই অভ্যাস করে পরীক্ষা দিতে গেলে ভাল হবে।

ঘড়ি ধরে পাঠ্যবইয়ের অনুশীলন করা এবং লেখার অভ্যাস সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হবে। সব প্রশ্নের উত্তর সময়ে দেওয়া যাবে কি না, অজানা প্রশ্ন এলে কী হবে— এমন চিন্তা থেকেই ভয়টা তৈরি হয়। সে কারণেই ঘড়ি ধরে অভ্যাস করলে ভয়টা থাকবে না। পায়েলের কথায়, সব প্রশ্নই যে জানা আসবে, তা নয়, তবে উত্তর যতটা জানা আছে তা লিখে আসতে হবে।

বিরতি নিয়ে পড়লে তা সব সময়েই ভাল হয়। অঙ্ক পরীক্ষা মানেই নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারা দিন ধরে অঙ্ক কষে যেতে হবে, এমন কিন্তু নয়। বরং তাতে ভয় আরও বাড়ে। পেরেন্টিক কনসালট্যান্ট পারমিতা মুখোপাধ্যায়ের পরামর্শ, “পরীক্ষার আগের ছুটির দিনটি সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে হবে। সকালে উঠে আগে পড়াশোনা করে নিলে, তার পর দুপুরে খেয়ে কিছুটা ঘুমিয়ে নাও। পরীক্ষা মানেই আগের দিন খেলাধূলা বন্ধ থাকবে তা নয়। বরং হাঁটাহাঁটি, বন্ধুদের সঙ্গে খেলা বা ব্যায়াম করে নিতে পারলে ভাল হয়। তার পর সন্ধ্যার দিকে পড়তে বোসো। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাও। এই নিয়ম মানলে শরীর ঠিক থাকবে এবং মনও হালকা থাকবে।”

অভিভাকরা কী করবেন?

প্রস্তুতি যেমনই থাক পরীক্ষার আগের দিন ছেলেমেয়েদের বকাবকি না করাই ভাল। মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘অতিরিক্ত বকুনি বা অন্যের সঙ্গে তুলনা টানা বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের অসহিষ্ণু করে তোলে। চেষ্টা করতে হবে তাকে আত্মবিশ্বাস জাগানোর। বরং নিয়মমাফিক অনুশীলন করছে কি না, সে দিকে খেয়াল রাখুন। অভিভাবকেরা যদি নিজেদের ব্যস্ততার মধ্যেও কিছুটা সময় দিয়ে সন্তানের পাশে থাকতে পারেন, তা হলে মনের জোরও বাড়বে এবং পরীক্ষা ভাল হবেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement