Health Tips for Madhyamik Students

মরসুম বদলাচ্ছে, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের শরীর সুস্থ রাখার টিপ্‌স দিলেন চিকিৎসকেরা

জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা নিয়ে চিন্তায় থাকেই ছোটরা। তার উপরে মরসুম বদলের এই সময়ে নানা অসুখবিসুখ লেগেই থাকে। তাই পরীক্ষা ভাল ভাবে দিতে হলে শরীর সুস্থ রাখতেই হবে। এই সময়ে কী কী নিয়ম মেনে চলা উচিত, তা বুঝিয়ে বললেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:০১
Share:

পরীক্ষা চলাকালীন শরীর সুস্থ রাখার উপায় বললেন চিকিৎসকেরা। ফাইল চিত্র।

মরসুম বদলের সময়েই শুরু হয়ে গিয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। এই সময়টাতেই যত অসুখবিসুখ দেখা দেয়। বাতাসে ভাইরাস-ব্যাক্টেরিয়ার বাড়বাড়ন্ত। তাই শরীর সুস্থ রাখা খুব জরুরি। একেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা নিয়ে চিন্তায় থাকে ছোটরা, ততোধিক চিন্তায় থাকেন তাদের বাবা-মায়েরা। তার উপরে শরীর খারাপ হয়ে গেলে তো কথাই নেই। তাই শরীর সুস্থ রেখে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে হলে কিছু নিয়ম মেনে চলতেই। পরীক্ষার্থীদের জন্য কার্যকরী কিছু টিপ্‌স দিলেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

শীত পুরোপুরি গিয়েছে বলা যায় না। আবার গরমও পড়ে গিয়েছে। রাতের দিকে ঠান্ডা ও দিনে গরম— এমন সন্ধিক্ষণেই নানা রোগজীবাণুর সক্রিয়তা বাড়ে। বিভিন্ন সংক্রামক রোগও হানা দেয়। এখন চারপাশে গিয়ান-ব্যারে অসুখ নিয়েও বেশ আতঙ্ক ছড়িয়েছে। চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “ঋতুবদলের সময়ে জীবাণুদের বংশবৃদ্ধি হয়। একগুচ্ছ ভাইরাস দাপট দেখাতে থাকে। সর্দিকাশির অ্যাডেনোভাইরাস তো আছেই, শ্বাসনালির অসুখের জন্য দায়ী রাইনোভাইরাস বা রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সোয়াইন ফ্লু-র মতো সংক্রামক রোগের প্রকোপ বাড়ে। ব্রঙ্কাইটিসও হতে পারে। এই সব থেকে বাঁচতে সতর্ক থাকতেই হবে।”

কী কী নিয়ম মানতে হবে?

Advertisement

১) রাতে হালকা চাদর নিয়েই শুতে হবে। দিনের বেলা যতই গরম হোক, ঠান্ডা জল খাওয়া বা এসি চালানো চলবে না।

২) বেশি করে জল খেতেই হবে। পরীক্ষার জন্য উদ্বেগ যতই থাক, দিনে ৩-৪ লিটার জল মেপে খেতে হবে।

৩) রাস্তা থেকে জল, শরবত বা লস্যি কিনে খেলেই শরীর খারাপ হবে। অভিভাবকদেরও এই নিয়ম মানতে হবে।

৪) এই সময়ে মশার উপদ্রবও বাড়ে। তাই রাতে মশারি টাঙিয়ে শুলে ভাল।

চিকেন পক্সের বাড়বাড়ন্ত হয় এই সময়েই। ‘ভ্যারিসেল্লা জুস্টার’ নামক ভাইরাসের সংক্রমণে ঘটা এই অসুখ ছোঁয়াচে। তাই এই রোগে বাড়ির কেউ আক্রান্ত হলে, ছোটদের সেখানে না যাওয়াই ভাল। এমনটাই বললেন বর্ধমান জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী। কোন কোন নিয়ম মেনে চলার কথা বললেন তিনি?

১) পরীক্ষার্থীদের কারও যদি চিকেন পক্স হয়, তা হলে স্কুলের অনুমতি নিয়ে আলাদা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল। সেই পরীক্ষার্থীর জন্য সব রকম ব্যবস্থা রাখতে হবে স্কুলকে।

২) এই সময়ে নিম-জলে স্নান করা ভাল। তাতে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে।

৩) ভাইরাল জ্বর বা কোনও সংক্রমণ হলে যদি তার উপসর্গ দেখা দেয়, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসককে দেখাতে হবে। জ্বর কমাতে হালকা প্যারাসিটামল খাওয়া ভাল তবে নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া ঠিক হবে না।

৪) মরসুম বদলের এই সময়টায় কনজাঙ্কটিভাইটিসের সংক্রমণ ঘটে। অ্যালার্জি জনিত ও ভাইরাল দু’রকম কনজাঙ্কটিভাইটিসই দেখা দিচ্ছে এখন। বাতাসের জলীয় কণাকে ভর করে ভেসে বেড়ায় অনেক ভাইরাস, যার মধ্যে শক্তিশালী অ্যাডিনো ভাইরাস চোখে সংক্রমণ ঘটায়। কর্নিয়ায় ছোট ছোট দানা তৈরি হয়। যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। তাই সাবধান থাকতেই হবে।

৫) শরীর ঠিক রাখার পাশাপাশি মনও ভাল রাখতে হবে। খুব বেশি চিন্তা বা মানসিক চাপ নিয়ে ফেললে, পরীক্ষা দিতে বসে সমস্যা হবে। তখন জানা জিনিসও মনে পড়বে না।

৬) পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে খিদে পেলে বাইরের খাবার একেবারেই খাওয়া যাবে না। সব সময়েই বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যেতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। জলও সঙ্গে রাখা উচিত।

৭) হাতে সময় নিয়ে বেরোনো উচিত। বেশির ভাগ সময়েই দেখা যায়, তাড়াহুড়োয় বেরিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের।

তাপমাত্রার ওঠানামায় ঠান্ডা লাগা তো আছেই, সেই সঙ্গে দেখা দেয় পেটখারাপও। পেটের গোলমালেও ভুগছে অনেকে। সংক্রামক রোগ বিষয় চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের পরামর্শ, ‘‘ঠান্ডা আর গরম মিশ্রিত আবহাওয়ায় পেটখারাপ হওয়ার একটা আশঙ্কা থেকে যায়। তাই পরীক্ষা যত দিন চলবে, তত দিন হালকা খাবার খেতে হবে। তেলমশলা দেওয়া খাবার, বাইরের খাবার খাওয়া চলবে না। বাইরে থেকে ফিরেই পাখা কিংবা এসি না চালানোই শ্রেয়। গরম লাগছে মানেই ফ্রিজ খুলে ঠান্ডা জল খাওয়া যাবে না। তাতে মারাত্মক ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। অ্যালার্জি থাকলে নরম পানীয়, আইসক্রিম এই সময়ে এড়িয়ে চলা জরুরি।”

পরীক্ষার দিনগুলিতে ঠিক মতো ঘুম জরুরি। ক্লান্ত মস্তিষ্ক নিয়ে পরীক্ষা দিতে গেলে কিন্তু সমস্যা বাড়বে। বরং পরীক্ষার আগের রাতে ভাল ঘুম জরুরি। তা হলে মাথা ঠান্ডা থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement