সঙ্গীর সঙ্গে প্রথম আলাপ কেমন হবে, কী কী জানতে চাইবেন। ছবি: সংগৃহীত।
প্রেম করে হোক বা দেখেশুনে সম্বন্ধের বিয়ে— চার হাত এক হওয়ার আগের আলাপ পর্বটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে মানুষটার সঙ্গে সারা জীবনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে চলেছেন, তাঁকে একবার পরখ করে নেবেন না! প্রেমের বিয়ের ক্ষেত্রে সঙ্গীকে চেনা বা জানার প্রক্রিয়াটা অনেকদিনের। কিন্তু সম্বন্ধের বিয়ের ক্ষেত্রে সে সময় ও সুযোগ অনেক সময়েই থাকে না। তাই সেক্ষেত্রে চিন্তাটা একটু বেশিই থাকে। সম্পূর্ণ অজানা ও অচেনা দু’জন মানুষ একছাদের তলায় একসঙ্গে থাকার পরিকল্পনা করার আগে নিজেদের মধ্যে কথা বলে নেওয়াটা খুবই জরুরি। আলাপ পর্বে দু’জন কেমন করে সময় কাটাবেন সেটা সম্পূর্ণই তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে আলাপ পর্বে কী কী করা উচিত আর কী কী নয়, সেটাও একটু খেয়াল রাখলে বরং ভালই হয়।
কী কী করবেন আর কী নয়?
১) ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশি পরিকল্পনা শুরুতে না করাই ভাল। বরং বর্তমান নিয়ে আপনি কী ভাবছেন সেটা জানান। নিজের পছন্দ-অপছন্দ বলুন, তাঁরটাও জেনে নিন।
২) সঙ্গীর পেশাগত বিষয়ে বেশি কৌতূহল প্রথম দিনেই দেখানোর প্রয়োজন নেই। চাকরি, বেতন এই সব বিষয় নিয়ে যতটা জরুরি ততটাই জানুন। বেশি অনধিকার চর্চা করলে শুরুতেই তিক্ততা বাড়তে পারে। তবে, এমনও নয় যে, সে বিষয়ে কিছুই জানবেন না, সঠিক সময়ের অপেক্ষা করুন।
৩) প্রথম আলাপে সঙ্গীর পরিবার, আত্মীয়দের কথাও জানতে চান। তাঁদের ভালমন্দের খোঁজ নিন। বয়স্করা থাকলে তাঁদের কথাও জিজ্ঞাসা করুন। এতে তিনিও বুঝবেন যে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ কতটা!
৪) মানসিকতার দিক দিয়ে আপনারা কতটা মানিয়ে নিতে পারছেন তা বোঝার চেষ্টা করা খুবই জরুরি। আপনি আপনার সঙ্গীর থেকে কী কী চান সে বিষয়েও মন খুলে কথা বলুন। কিছুই গোপন করবেন না। তাহলে কোনও সমস্যা হবে না।
৫)আপনার লক্ষ্যের কথা জানাতে ভুলবেন না। পড়াশোনা বা চাকরি, অথবা যে কোনও পছন্দের কাজ যা আপনি এতদিন করে এসেছেন, সেটা যে আপনি বিয়ের পরেও করতে চান সেটা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিন। সঙ্গীর মতামত কী, সেটাও জেনে নিন।
৬) অনেকেই চান বিয়ের পরে আলাদা থাকতে, আবার অনেকের যৌথ পরিবারে থাকতে কোনও সমস্যা নেই। সে ক্ষেত্রে এই বিষয়টি নিয়েও ভাল করে কথা বলে নেওয়া জরুরি। তবে সঙ্গীরও মন বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার প্রত্যাশা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।
৭) সঙ্গীর অতীত নিয়ে বেশি নাড়াঘাঁটা করতে যাবেন না। প্রথম আলাপেই এমন কিছু অবাঞ্ছিত প্রশ্ন করে ফেলবেন না, যাতে তার মনে আপনার প্রতি বিরূপ ভাবনা জন্মায়।
৮) সঙ্গীর কোনও কথা আপনার পছন্দ না-ও হতে পারে। সেটা ভাল করেই বুঝিয়ে বলুন। তবে একই বিষয় নিয়ে বার বার কথা তুলে বিব্রত করবেন না। বরং প্রসঙ্গ বদলে ইতিবাচক কথা বলার চেষ্টা করুন।
১০) আপনার পেশার জায়গার কাজের চাপ, সেখানকার সমস্যা কখনওই প্রথম আলাপ-পর্বে তুলে আনবেন না। প্রত্যেকেরই জীবনে কিছু না কিছু সমস্যা থাকে। উদ্বেগ, অবসাদও থাকতে পারে। সে সব বিষয় নিয়ে শুরুতেই আলোচনা না করাই ভাল।
১১) যদি ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন, তাহলে সে বিষয়ে কথা বলুন। কোন কোন জায়গা আপনার পছন্দ বা গিয়েছেন, সে অভিজ্ঞতা বলুন। সুখের স্মৃতি ভাগ করে নিন। এতে একে অপরের প্রতি ইচিবাচক মনোভাব বাড়বে।
১২) সঙ্গী যদি কোনও সমস্যার কথা বলেন, সেটা শুনে সমাধানের চেষ্টা করুন। এতে আপনার উপর ভরসা বাড়বে।
১৩) কেরিয়ারের বিষয়ে কে কি ভাবছেন, ভবিষ্যতে যদি শহর বদলানোর পরিকল্পনা থাকে বা পেশা বদলানোর কোন ইচ্ছা থাকে, সে বিষয়েও আগাম কথা বলে নিন, না’হলে ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে।
১৪) কথায় কথায় তুলনা টানবেন না। দু’জন মানুষের চিন্তাভাবনা, জীবনদর্শন, লক্ষ্য কখনওই এক রকম হবে না। বরং সঙ্গীর ভাল দিকগুলো নিয়ে কথা বলুন, প্রশংসা করুন। আপনি জীবনকে কী ভাবে দেখেন, সেটাও জানাতে ভুলবেন না।