Pet Bird Care

বাতের ব্যথায় ভোগে পাখিরাও, হতে পারে অবসাদও, কী ভাবে বুঝবেন পোষা পাখি কষ্টে আছে?

অবসাদে ভোগে পাখিরাও? শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক চাপ তাদের মনকেও উথাল পাথাল করে। চরম মনোকষ্টে ভুগলে পোষা পাখিও সাড়া দেয় না। তাদের ব্যবহারেও আসে বদল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪ ১৩:২৯
Share:

পোষা পাখির যত্ন নেবেন কী ভাবে, জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।

সাধ করে পাখি পুষলেই হয় না। তার মনের খেয়ালও রাখতে হয়। এমনটাই বলে থাকেন পক্ষী বিশারদেরা। পাখির শরীরেও বিভিন্ন কারণে যন্ত্রণা হয়। মনও ভাল থাকে না সব সময়ে। তার কিছু লক্ষণও ধরা পড়ে তাদের আচরণে। সেগুলি কী কী, তা জেনে রাখা ভাল।

Advertisement

কী কী শারীরিক সমস্যা পোষা পাখিদের যন্ত্রণা দেয়?

১) বাতের ব্যথায় ভোগে পাখিরাও। পাখি বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, পাখিদের পা ও পিঠের হাড়ে ব্যথা হয়। এই যন্ত্রণা একটানা ভোগায় পাখিদের।

Advertisement

২) পেশির ব্যথাও ভোগায় পাখিদের। খাঁচার পাখি উড়তে পারে না। দীর্ঘ দিন ধরে বন্দি থাকার কারণে বিভিন্ন রকম ব্যথাবেদনা ভোগায় তাদের।

৩) ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ হতে পারে পাখির। তখন পালক উঠে যেতে শুরু করে, দুর্বল হয়ে পড়ে পাখি।

৪) আর শরীরের কোন জায়গায় আঘাতজনিত ব্যাথা তো আছেই।

পোষ্যের কী কী সমস্যা হচ্ছে বোঝা দরকার। ছবি: সংগৃহীত।

৫) শরীরের পাশাপাশি মনেও কষ্ট হয় পাখিদের। বন্দিদশায় একাকিত্বে ভোগে পাখিরা।

কী ভাবে বুঝবেন পোষ্য কষ্টে আছে?

১) পোষা পাখির ব্যবহারে আসবে বদল। আপনি ডাকলেও সাড়া দেবে না। সর্ব ক্ষণ ঝিমিয়ে থাকবে পাখি।

২) খাওয়ার পরিমাণ কমে যাবে। কিছু খেতে চাইবে না। সব সময়েই ঘুমোবে।

৩) শ্বাস নিতে কষ্ট হবে পাখির। খেয়াল করে দেখবেন, সারা ক্ষণ দু’ঠোঁট ফাঁক করে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করবে।

৪) শরীরের যে জায়গায় যন্ত্রণা, সেখানে ঠোঁট দিয়ে ঘষতে থাকবে। আপনি কাছে গেলে তেড়ে আসবে। ঠোকর দেওয়ার চেষ্টা করবে।

৫) পাখির মলের রং বদলে যেতে পারে।

আদরের পোষ্যকে সামলাবেন কী করে?

পোষ্যের ব্যবহারে বদল দেখলেই সবচেয়ে আগে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। পাখির শারীরিক সমস্যা হচ্ছে কি না, সেটা আগে দেখা দরকার।

বন্দিদশায় একাকিত্ব দূর করতে পাখিদের সব সময়ে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সময় পেলেই ওদের সঙ্গে খেলতে হবে। পোষ্যের কাছে গিয়ে কথা বলুন, গায়ে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিন। তা হলেই ওরা বুঝবে আপনি পাশে আছেন।

খাঁচার পাখিকে খেলাতে হবে, যাতে তার শারীরিক কসরত হয়। পাখির আকার ও বয়স অনুযায়ী খাঁচা কিনুন প্রথমে। ভিতরে যেন জায়গা বেশি থাকে। খাঁচার ভিতরে ছোট মই বা দোলনা রাখতে পারেন। ছোট ছোট বল রাখুন ভিতরে, যাতে পাখি খেলতে পারে।

পাখির খাঁচা এমন জায়গায় রাখবেন, যেখানে বেশি রোদ পড়বে না। আবার বৃষ্টির জলও আসবে না। বারান্দায় খাঁচা রাখলে চারদিকে প্লাস্টিক দিয়ে ঘিরে দিন।

আরামদায়ক পরিবেশে পোষা পাখিকে রাখুন। চারপাশটা যেন শান্ত হয়, বেশি কোলাহল আপনার পোষ্য পছন্দ না-ও করতে পারে।

আদরের পাখি যদি খেতে না চায়, তা হলে ওকে হাতে করে খাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রথম প্রথম ঠোকর দেওয়ার চেষ্টা করবে হয়তো। তাতে চেঁচামেচি করবেন না। ধৈর্য ধরতে হবে। দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার উপরেই বেশি ভরসা করছে।

খাঁচার ভিতরটা সব সময়ে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। পাখিকে যে পাত্রে খাবার ও জল দিচ্ছেন, সেটাও পরিষ্কার করুন নিয়মিত। সব সময়ে পাত্রে জল রেখে দিতে হবে। পাখিরা স্নান করতে খুব ভালবাসে। স্নানের জল আলাদা দিতে হবে।

পাখি যদি দুর্বল হয়ে পড়তে থাকে তা হলে তার ডায়েট বদলাতে হবে। আর খাবারের গুণগত মানও যেন ঠিক থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখুন। পাখিকে শস্যদানার মিশ্রণ, যেমন গম, ভুট্টা, ধান, তিল, তিসি, বাদাম, সূর্যমুখী বীজ দেওয়া যেতে পারে। পাখিকে পাকা পেঁপে, কলা, আপেলের টুকরা, জাম, লিচু ইত্যাদিও দেওয়া যেতে পারে। তবে কী প্রজাতির পাখি, সে অনুযায়ী তার ডায়েট ঠিক হবে। কী কী খাওয়াবেন সেটা পশু চিকিৎসকেদের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement