সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারে ভুল বোঝাবুঝি। ছবি: সংগৃহীত।
ভালবাসা, বিশ্বাস, ভরসা, পারস্পরিক সম্মান থাকলে, দাম্পত্য সম্পর্ক মজবুত হয়। তবে সেই সম্পর্কে সুখের অভাব হতে পারে ভুল বোঝাবুঝিতে। দু’টি মানুষ আলাদা। তাঁদের মানসিকতা ও চিন্তাভাবনাও যে আলাদা হবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, পরস্পরকে বোঝার চেষ্টা না করলে দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে পারে। সাধারণ বিষয় নিয়েও কিন্তু ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত হতে পারে। কী ভাবে এড়াবেন সেগুলি?
আবেগের বহিঃপ্রকাশ
ভালবাসা বা আবেগ প্রকাশের ধরন এক এক জনের এক এক রকম। কেউ সহজেই মনের কথা বলতে পারেন। কেউ আবার অনুভূতিকে গোপনে লালন করলেও উপহার দিয়ে, মুখে বলে তা প্রকাশ করতে পারেন না। তা নিয়েও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হতে পারে। কোনও বিশেষ দিন ভুলে গেলে, বা মনে করে কোনও উপহার না আনলে, অন্য মানুষটির অভিমান হতেই পারে। তবে এটা ভাবার কারণ নেই, সেই মানুষটি তাঁকে ভালবাসেন না। কেউ হয়তো মনে করেন না, চকোলেট দিবসে চকোলেট বা প্রেম দিবসে উপহার দেওয়া বাধ্যতামূলক। কেউ হয়তো বিবাহবার্ষিকী ভুলে গেলেন কাজের চাপে। তা নিয়ে মান-অভিমান চলতে পারে। তবে, তা নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের অশান্তি কি ঠিক হবে?
প্রত্যাশা
ভালবাসার মানুষের কাছে প্রত্যাশা থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণের চাপ অনেক সময় সম্পর্কের পক্ষে ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। অন্য মানুষটির কাছে আর্থিক প্রত্যাশা যেমন থাকতে পারে, তেমনই ছোটখাটো অনেক কিছুই থাকতে পারে। হতেই পারে, সঙ্গী সারা সপ্তাহ অফিস করার পর ছুটির সকালে আর ঘুরতে যেতে চাইছেন না। সেই সময় তাঁকে জোর করলে তিনি বিরক্ত হতে পারেন। তা নিয়ে ঝামেলা হতে পারে। বোঝা দরকার, কেউ কোনও বিষয়ে কেন না বলছেন? একে অন্যের সমস্যা বুঝে তার সমাধান করতে হবে। হতে পারে সকালে তিনি বেরোতে পারলেন না, বিকেলে হয়তো একসঙ্গে কোথাও গেলেন। আবার এমনটাও হতে পারে, বাড়িতেই ভাল সময় কাটলেন দু’জনে একসঙ্গে।
না বলা কথা
অনেক সময় এক পক্ষ মনে করেন, অন্য পক্ষ তাঁর অভিমানের কারণ বুঝবেন। কিন্তু, সেটা কি সমস্ত ক্ষেত্রে সম্ভব হয়? এ নিয়ে মনের মধ্যে অভিমানের পাহাড় না জমিয়ে, ইচ্ছে-অনিচ্ছে, চাওয়া-পাওয়া নিয়ে খোলাখুলি কথা বললে বরং সম্পর্ক সুন্দর থাকতে পারে।
গুণের কদর করতে না পারা
সম্পর্ক দুর্বল হতে পারে গুণের কদর করতে না পারলে। হয়তো খুব সুন্দর করে ঘরটি সাজিয়েছেন সঙ্গী। সেই কাজের জন্য প্রিয় মানুষটির প্রশংসা তাঁকে বাড়তি উৎসাহ জোগাতে পারে। আবার হয়তো কর্মক্ষেত্রে একজন সফল হয়েছেন। তিনিও চাইবেন সবচেয়ে কাছের মানুষটি তাঁর পরিশ্রমের কদর করুন। একে অন্যের প্রশংসা করাও কিন্তু সম্পর্ক ভাল রাখার জন্য জরুরি। গিন্নি ভাল রাঁধলে প্রাণ খুলে প্রশংসা করতে বাধা কোথায়! কর্তা যদি ভাল মাছ চিনতে পারেন, ভাল বাজার করতে পারেন, এটাও কিন্তু গুণের মধ্যে পড়ে।
অহং
স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই এখন রোজগার করেন। অনেক সময়ই কর্মক্ষেত্রে স্ত্রীর পদ বেশ উঁচুতে হলে স্বামী হীনম্মন্যতায় ভোগেন। স্ত্রীর রোজগার বেশি হলে এ নিয়ে বাইরের মানুষের নানা রকম মন্তব্য মন বিষিয়ে দিতে পারে। এ নিয়ে মন কষাকষি সরিয়ে বরং একে অন্যের উন্নতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে সম্পর্ক সহজ ও সুন্দর থাকতে পারে।