ছেলেবেলা থেকেই বলিউডের ছবির প্রেমে মত্ত ছিলেন একাটেরিনা। ছবি: সংগৃহীত।
ফেসবুকেই হয় প্রথম আলাপ। তার পর বন্ধুত্বের পর্যায় পেরিয়ে শুরু হয় প্রেমালাপ। প্রেমের টানে সুদূর রাশিয়া থেকে ভারতে পাড়ি দেন তরুণী। বাংলার নদিয়ার ছেলেকে বিয়ে করে এখন সংসার জমিয়েছেন রুশ তরুণী একাটেরিনা দাস। শ্বশুরবাড়িতে একাটেরিনাকে সকলে ডাকেন ক্যাটরিনা বলে। ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এ এসে একাটেরিনা জানলেন তাঁর বিবাহ অভিযানের কথা।
ছোট থেকে ভারত দেশটার প্রতি আলাদা টান ও ভালবাসা ছিল একাটেরিনার। ছেলেবেলা থেকেই বলিউডের ছবির প্রেমে মত্ত ছিলেন একাটেরিনা। ভারতীয় ছবি দেখেই এ দেশের সংষ্কৃতিকে ভালবেসে ফেলেছিলেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে রাত জেগে হিন্দি সিনেমা দেখার কথা তাঁর আজও মনে পড়ে। অমিতাভ বচ্চন ও মিঠুন চক্রবর্তীর বড় ভক্ত তিনি। তাঁদের একটি ছবিও দেখা বাকি নেই।
নদিয়ার ছেলে দেবাশিস দাসের সঙ্গে একাটেরিনার যোগাযোগ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে। রাশিয়ায় তখন ইংরেজি নিয়ে পিএইচডি করছিলেন একাটেরিনা। ইংরেজি ভাষায় লিখতে পটু হলেও কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যা হত একাটেরিনার। সে সময়েই ফেসবুকে দেবাশিসের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। ফেসবুকে দেড় বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর প্রেমিকের টানে ভারতে আসেন। দেবাশিসের পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে এতই ভাল লেগে গেল যে, তিনি ঠিক করলেন এখানেই বিয়ে করবেন।
রাশিয়ার একাটেরিনা এখন পুরোদস্তুর নদিয়ার গৃহবধূ। নিয়মিত শাঁখা, পলা, সিঁদুর আর শাড়ি পরেন তিনি। গ্রামের যৌথ পরিবারে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ, সবই সামলাচ্ছেন সমান তালে। তার মাঝেই আছে ছেলের দেখভাল করা। বিয়ের পর একাটেরিনা ঘুরেও এসেছেন রাশিয়া থেকে। বাঙালি জামাইকে বরণ করে নিয়েছেন রুশ শ্বশুর-শাশুড়ি। পুঁইশাকের চচ্চড়ি আর আলুপোস্ত এখন তাঁর প্রিয় খাবার। তবে সকাল আর সন্ধ্যার জলখাবারটা রাশিয়ান হওয়া চাই। সেটা নিজেই বানান একাটেরিনা। লাজুক হেসে একাটেরিনা জানান, বিদেশি হলেও নদিয়ার গাংনাপুরের শ্বশুরবাড়িতে সবাই তাঁকে আপন করে নিয়েছেন। তিনি এখন সকলের নয়নের মণি।