সন্তানের সঙ্গে ‘কোয়ালিটি টাইম’ কাটান, রইল টিপ্স। ছবি: ফ্রিপিক।
যৌথ পরিবার প্রায় ইতিহাস। কয়েকশো স্কোয়্যার ফুটের ফ্ল্যাটে এখন সব পরমাণু-পরিবারের বাস। বাবা-মা আর এক সন্তান, বড় জোর দুই। বেড়ে ওঠার এই সীমিত পরিসরে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা, জিনিসপত্র ভাগ করে নেওয়ার প্রবণতা আর শিশুদের মধ্যে তৈরিই হচ্ছে না। তার উপর সারা দিনের নানা কাজে প্রত্যেক মা-বাবাই ব্যস্ত। ফলে খুদেটির সারা দিনের সঙ্গী হয়ে উঠছে মনখারাপ। একে তো সারা দিন একা থাকার বিরক্তি, তার উপরে বাঁধা গতের জীবনে একঘেয়েমি গ্রাস করছে শৈশবকে। ফলে হতাশা দানা বাঁধছে শিশুমনেই। নতুন বছরের প্রথম দিনটাতে সন্তানকে একটু বেশিই সময় দিন। কী ভাবে সময় কাটাবেন রইল তার কিছু টিপ্স।
পছন্দের খাবার রাঁধুন
খুদে যা ভালবাসে তা-ই রেঁধে দিন। এ দিন আর চটজলদির প্রাতরাশ না দিয়ে, বরং ভাল কিছু রাঁধুন। সুন্দর করে সাজিয়ে দিন থালা। পরিবেশনের গুণেই শিশুর খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যাবে। সকলে একসঙ্গে বসে খান। এই দিনটিতে আর বকাবকি নয়, বরং নানা রকম গল্প বলুন। সন্তানকে নিজের জীবনের গল্পও বলতে পারেন। ওকে বুঝিয়ে দিন, মিলেমিশে থেকে আপনি নিজে কতটা উপকৃত হয়েছেন।
স্মৃতির কলস
সুন্দর একটি কাচের বোতল বা মাটির কলসি সাজিয়ে নিন। প্রয়োজনে তার গায়ে ছবিও আঁকতে পারেন। সেটি সন্তানকে উপহার দিন। বলুন, ছোট ছোট কাগজে প্রতি দিনের ভাল স্মৃতিগুলি লিখে সেখানে রাখতে। এতে শিশুর লেখার ও ভাবার অভ্যাস তৈরি হবে এবং মনঃসংযোগও অনেক বাড়বে। আগামী দিনের লক্ষ্যও তৈরি হবে।
‘কোয়ালিটি টাইম’
কোয়ালিটি সময় হল সেই সময় যখন মায়ের সম্পূর্ণ মনোযোগ থাকে সন্তানের উপরে। এই সময়টা হবে নির্বিঘ্ন, অর্থাৎ ওই সময়ে অন্য কাজ করা, মোবাইলে কথা বলা বা কিছু দেখা থেকে বিরত থাকতে হবে। শুধুই সন্তানের সঙ্গে কথা বলতে হবে, নতুন নতুন বিষয় তাকে জানাতে হবে। সময় পেলে সন্তানকে ঘুরতেও নিয়ে যান। এই অভ্যাস রোজের জন্যই তৈরি করতে হবে। সারা দিনে কিছুটা সময় শুধু সন্তানের জন্যই রাখতে হবে। তাকে সঙ্গ দিতে হবে। শিশুরা মা-বাবার কথা বলার ধরন অনুসরণ ও অনুকরণ করে। তাই নির্বিঘ্ন সময় কাটানোর মাধ্যমে ছোটরা ভাষার ব্যবহার শিখবে, তাদের চিন্তাশক্তিও বাড়বে।
ঘুরতে নিয়ে যান
বাচ্চাকে নিয়ে সামাজিক পরিসরে মেলামেশা বাড়ান। শিশুরা এতে সহজে শেখে, বিভিন্ন বয়সিদের প্রতি কী আচরণ করতে হয়, কী ভাবে সামাজিক হয়ে উঠতে হয়। বিশেষ কোনও জায়গায় নিয়ে যান। কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা অনাথ আশ্রমে যেতে পারেন। এই ধরনের পরিবেশ আত্মকেন্দ্রিকতা ভুলিয়ে দেয়।
একসঙ্গে হুল্লোড়
একসঙ্গে শরীরচর্চা করুন। সন্তান খেলতে চাইলে, তার সঙ্গেই খেলুন। পরিবারের সকলে যোগ দিন। মেমরি গেম খেলুন। এতে শিশুর স্মৃতিশক্তি ও একাগ্রতা বাড়বে। আঁকা, নাচ, গান, সাঁতারে অংশ নিতে দিন। এতে সে তার মনের খোরাক পাবে। নতুন জিনিস শেখার জন্য উৎসাহী থাকবে। বাড়িতে পোষ্য থাকলে তার যত্ন নিতে শেখান। বাড়ির ছোট ছোট কাজ করতে বলুন যেমন নিজের জামা গোছানো, গাছে জল দেওয়া, বোতলে জল ভরা। বাড়িতে এমন ছোট ছোট কাজ থাকে, যা খুদেরা করতে পারে। এমন কাজে তাকে ব্যস্ত রাখুন। তার সময়ও কাটবে। নিয়মানুবর্তিতা শিখবে। মোবাইল বা টিভি দেখার স্ক্রিন টাইমও কমবে।