সন্তানকে শাসন করার সময়েও সামলে চলুন। ছবি: সংগৃহীত
সন্তান সামলানো সহজ নয়। সহজ নয় অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করাও। সন্তানের কাণ্ড-কারখানায় কখনও কখনও বাবা-মায়ের পক্ষে রাগ-অভিমান নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময়ে রাগ ও জেদের বশে সন্তানকে বাবা-মায়েরা এমন কথা বলে বসেন, যাতে ক্ষতি হতে পারে সন্তানেরই। তাই মানসিক টানাপড়েন কী ভাবে সামলাতে হবে, তা জানতে হবে নিজেকেই।
১। সন্তান যতই চঞ্চল হোক, অভিভাবকদের ধৈর্য ধরতেই হবে। সন্তানের রাগ-অভিমান কমাতে গিয়ে নিজেরা রাগারাগি করলে চলবে না। সন্তান রাগ করার মতো কিছু করলেও, সঙ্গে সঙ্গে তাকে বকাঝকা করলেই মুশকিল। সমস্যা আরও জটিল হয়ে যেতে পারে। বরং নিজে শান্ত হওয়ার পর কথা বলুন সন্তানের সঙ্গে।
২। অনেক সময়েই সন্তান কী বলতে চাইছে, তা শোনার প্রয়োজন বোধ করেন না বাবা-মা। সন্তানের কথা শুনুন মন দিয়ে। শিশুদের যুক্তিবোধ বড়দের মতো না হওয়াই স্বাভাবিক। তাই তাদের পক্ষে সব কিছু বুঝিয়ে বলা শক্ত। সন্তান কিছু বলতে চাইলে, তাকে ধীরে ধীরে বুঝিয়ে বলার সুযোগ দিন। অল্প অল্প করে বললেও রাগ, দুঃখ, অভিমানের সব কথা শুনুন মন দিয়ে।
৩। সংবেদনশীলতাই আসল চাবিকাঠি। বোঝার চেষ্টা করুন, কেন রাগ করার মতো কাজ করছে সন্তান। কোন কোন বিষয়ে হঠাৎ এমন কাজ করতে প্রবৃত্ত হয় সন্তান, সে বিষয়গুলি বোঝার চেষ্টা করুন। বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়গুলিকে ‘ট্রিগার পয়েন্ট’ বলে থাকেন। সন্তান অবুঝ হলেও বাবা-মা অস্থির হলে চলবে না। পাশাপাশি, সন্তানকেও দিতে হবে সহানুভুতির শিক্ষা।
৪। অনেক সময়ে ঝক্কি এড়াতে সন্তানের অন্যায় আবদার মেনে নেন বাবা-মা। কিন্তু এতে সমস্যা বাড়ে, কমে না। কাজেই অযথা সন্তানের অন্যায় আবদারে প্রশ্রয় নয়। সন্তানের রাগ ও দুর্ব্যবহারও মেনে নেবেন না। শান্ত হয়ে, ধীরে ধীরে বোঝান সন্তানকে।
৫। বাবা-মায়ের দৈনন্দিন আচার ব্যবহারের ছাপ অনেক সময়ে সরাসরি সন্তানের উপর পড়ে। কাজেই অভিভাবক যদি বদমেজাজি হন, তবে তার প্রভাব পড়তে পারে সন্তানের উপরেও। ফলে বাবা-মাকেই হতে হবে উদাহরণ। বিশেষত বাবা-মায়ের পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপড়েনের আঁচ সন্তানের উপর পড়লে তার প্রভাব হয় দীর্ঘস্থায়ী। কাজেই সন্তানের সামনে ঝগড়া করার আগে সতর্ক হতে হবে।