অফিসে সব বয়সি সহকর্মীর সঙ্গে আপনার আচার-আচরণ কেমন হবে? প্রতীকী ছবি।
স্কুল বা কলেজের বন্ধুত্ব আর অফিসের সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কের রসায়ন এক নয়।সেখানে কার সঙ্গে কতটা কথা বলবেন, কতটা মিশবেন, তা নিয়ে মনে ভিড় করে হাজারো প্রশ্ন। কাজের জায়গায় পারস্পরিক সম্পর্কের বাঁধাধরা ফর্মুলা নেই। সহকর্মী বন্ধুও হতে পারেন, আবার নিছক প্রতিদ্বন্দ্বীও। সব সম্পর্কেই ওঠানামা থাকে। তাই দিনের সিংহভাগ সময় যাঁদের সঙ্গে কাটাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং কাজে ও আচরণে পেশাদারিত্বের পরিচয় দেওয়াই শ্রেয়।
অফিসে সব বয়সি সহকর্মীর সঙ্গে আপনার আচার-আচরণ কেমন হবে?
ভাষা ব্যবহারে সংযম
বয়স্ক সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলার সময়ে ভাষায় সংযম রাখা খুব জরুরি। সমবয়সি সহকর্মীর সঙ্গে যে রঙ্গ-রসিকতা করেন, তা হয়তো আপনার থেকে বয়সে অনেকটাই বড় ও কর্মক্ষেত্রে অভিজ্ঞ সহকর্মীর পছন্দ না-ও হতে পারে। তাই কার সঙ্গে কথা বলছেন ও কী বলছেন, তা ভেবেচিন্তে বলাই ভাল। সব সময়েই ইতিবাচক কথা বলার চেষ্টা করুন। ব্যক্তিত্ব ও ভাষার দক্ষতাই আপনাকে সকলের কাছে প্রিয় করে তুলবে।
পেশাদারিত্ব আগে
বয়সে ছোট হোন বা বড়— যে কোনও বয়্সের সহকর্মীই বন্ধু হয়ে উঠতে পারেন। তবে তাঁদের সঙ্গে আচরণে সংযম বজায় রাখা জরুরি। এই বিষয়ে মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মত, কৌতুকের ছলে অনেকেই বয়সে প্রবীণ বা নবীনদের সঙ্গে এমন আচরণ করেন, যা পেশাদারিত্বের পরিচয় দেয় না। হাসি-মজাতেও অপমান করা বা বিদ্রুপ করা অনুচিত। আর এমন ব্যবহার অফিসের আদবকায়দার সঙ্গে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
বিশ্বাসযোগ্যতা জরুরি
এক সহকর্মীর কাছে অন্য সহকর্মী বা অফিসের উচ্চপদস্থ কাউকে নিয়ে আলোচনায় শামিল না হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। নিজের ব্যক্তিগত জীবনের কথা, কাজ সম্পর্কিত আপনার পরিকল্পনা সবিস্তার না জানানোই ভাল। যে কোনও সম্পর্কের সেতু বড়ই আলগা। তাকে মজবুত করার দায়িত্ব সেই সম্পর্কে থাকা মানুষদেরই। অফিসের ক্ষেত্রে তাই বাড়তি সজাগ থাকা প্রয়োজন।
অভিযোগ নয়
বয়স্ক সহকর্মীরা অনেক সময়েই বকাবকি করে থাকেন বা কাজ নিয়ে নানা অভিযোগ করে থাকেন। অনিন্দিতা জানাচ্ছেন, খারাপ লাগা থাকতে পারে, কিন্তু ঘন ঘন কারও ব্যাপারে অভিযোগ করবেন না অথবা আড়ালে সমালোচনা করবেন না। অশান্তি নিয়ে আপনি যত ক্ষণ কথা বলছেন বা কারও কাছে অভিযোগ করে যাচ্ছেন, তত ক্ষণই আপনি বিষয়টির মধ্যে রয়েছেন। সেই ভাবনা থেকে বেরোতে পারছেন না। এই বিষয়টিই পরে আপনার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠবে এবং কাজের ব্যাপারেও আপনি উদ্যোগ ও উৎসাহ হারাতে থাকবেন। মনোমালিন্যে না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান বার করা উচিত।
অযথা তর্কাতর্কি করবেন না
নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন, অন্যকে নয়। সহকর্মী খারাপ আচরণ করলেও আপনি সৌজন্য বজায় রেখেই কথা বলুন। আচার-আচরণেও শালীনতা বজায় রাখুন। মনমেজাজ ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত কোনও বাক্যলাপে অংশই নেবেন না। তা হলেই পরে দেখবেন, যিনি খারাপ আচরণ করেছেন, তাঁর ব্যবহারেও ইতিবাচক বদল আসবে।