Parenting Stress

সন্তানকে বড় করতে গিয়ে বাড়ছে ক্লান্তি-উদ্বেগ? কী ভাবে নিজেকে ভাল রাখবেন?

সন্তানকে বড় করতে গিয়ে নিজের দিকে তাকানোরই সময় হয় না। অতিরিক্ত পরিশ্রম, খুদের জন্য চিন্তায় কখনও কখনও উদ্বেগের জন্ম দেয়। এই সময় কী করলে ভালা থাকা যাবে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৩০
Share:

সন্তান-সংসারের ঝক্কি সামলাতে গিয়ে দিনের পর দিন বাড়ছে উদ্বেগ? ছবি: সংগৃহীত।

মাতৃত্ব যতটা সুখের, ঠিক ততটাই ঝক্কির। খুদের বেড়ে ওঠা, তার ভাল-মন্দের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সব সময়েই আশঙ্কা কাজ করে। সন্তানকে নিয়ে উৎকণ্ঠা, তার দায়দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে অনেক সময় ক্লান্তি, উদ্বেগ চেপে বসে। শুধু মা নন, বাবার জীবনেও বাড়তি দায়িত্ব এসে যায়। সন্তানকে সামলানোর পাশাপাশি এই সময় নিজেদের শরীর ও মনের খেয়াল রাখাটাও জরুরি। কী ভাবে ভাল থাকবেন শিশুর অভিভাবকেরা?

Advertisement

মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিলা সরকার বলছেন, ‘‘আমাদের দেশে সাধারণত সন্তানকে ছোট থেকে বড় করার গুরু দায়িত্বটা মায়েদের কাঁধে এসে পড়েই। একেবারে ছোট শিশুর ভাল-মন্দ, সবটাই মায়ের উপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। তার উপর মা যদি চাকরিরতা হন, উদ্বেগের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। ঘরে-বাইরে কী ভাবে চাপ সামাল দেবেন, বুঝতে পারেন না।’’

ভাল থাকার উপায় নিয়ে মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ

Advertisement

. এই সময়টা মায়েদের জগৎ শুধু সন্তান-কেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। তার উপর স্বামী-সংসার সামলাতে গিয়ে নিজের দিকে তাকানো হয় না। নিজের মতো করে সময় বার করে বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল খাওয়া। অনেক সময় বাড়ির অন্য সদস্যেরা খান না বলে সেই খাবার পাতেই ওঠে না। পছন্দের খাবার খেলেও মন ভাল থাকবে। পাশাপাশি, নিজের ভাললাগার বিষয়গুলি নিয়ে চর্চা চালিয়ে যেতে হবে।

২. প্রথম সন্তানের জন্মের পর বাবা-মায়ের উদ্বেগ বেশি থাকে। সন্তান সামলানোর পূর্বঅভিজ্ঞতা না থাকায় সামান্য বিষয়েই বিচলিত হয়ে পড়েন অনেক মা। এ ক্ষেত্রে যদি আর পাঁচজন অভিজ্ঞ মায়ের সঙ্গে নিজের ভাবনা ও উৎকণ্ঠার কথা ভাগ করে নেন, তা হলে জরুরি পরামর্শ মিলতে পারে। তাঁদের কথা শুনে বুঝতে পারবেন, কী হলে, কোনটা করা প্রয়োজন।

৩. সপ্তাহভর কাজের পর মায়েদেরও ছুটি দরকার। বাবাদেরও সারা সপ্তাহ শেষে বিশ্রাম প্রয়োজন। শর্মিলার পরামর্শ, সপ্তাহান্তে সন্তানকে নিয়েই দু’জনে বাইরে যেতে পারেন। কোথাও ঘোরাঘুরি বা রেস্তেরাঁয় খাওয়া-দাওয়া করলে একসঙ্গে কিছুটা ভাল সময় কাটবে। একঘেয়েমি দূর হবে। মানসিক ক্লান্তি দূর করতে স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে ভাল সময় কাটানো জরুরি।

৪. সন্তানের দায়-দায়িত্ব নিয়ে বাড়তি চাপও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। খুদেকে স্কুলে দিতে যাওয়া নিয়ে আসা, তাকে খেলতে নিয়ে যাওয়া, আঁকা শিখতে নিয়ে যাওয়া, তাকে কে পড়াবেন ইত্যাদি নিয়ে মনোমালিন্য অনেক সময় মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিষয়গুলি নিয়ে যদি স্বামী-স্ত্রী নিজেদের মধ্যে স্পষ্ট করে কথা বলে নিতে পারেন, তাতে লাভ হতে পারে। যদি সম্ভব হয়, বাবা খুদেকে স্কুলে দিয়ে আসতে পারেন। আবার তা না হলে, বিকল্প উপায় ভাবা প্রয়োজন।

৫. মায়েরা যদি বাইরে কর্মরতা হন তা হলে অফিসের ঝক্কি সেখানেই শেষ করে আসতে হবে। অফিসের কাজের চাপ বাড়িতে নিয়ে এলে সংসার সামলানো মুশকিল হয়ে যায়। তাঁকেই ভাবতে হবে, কী ভাবে দুই জগতের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করবেন। তবে এই সমস্ত কিছুর মধ্যেই যেন অগ্রাধিকার পায় তাঁর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য। নিয়ম করে ব্যায়াম, প্রাণায়াম করলে উদ্বেগ বশে রাখা যায়। তাই সারা দিনে অন্তত ১০-১৫ মিনিট নিজের স্বার্থেই শরীরচর্চায় ব্যয় করা দরকার। সেই সঙ্গে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement