গরমে ক্রনিক অসুখ ঠেকাতে ভরসা রাখুন ফলেই। ছবি: সংগৃহীত।
ক্রমশ চড়ছে তাপমাত্রার পারদ। বাইরে বেরোলোই মাথার উপর চড়া রোদ। গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে অনেকেই চুমুক দিচ্ছেন ঠান্ডা কিংবা নরম পানীয়ের গ্লাসে। কেউ কেউ আবার সোডা জাতীয় পানীয়ের উপর ভরসা রাখছেন খানিক ক্ষণের তৃপ্তির জন্য। এই ধরনের পানীয়ে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি। শরীরের উপকারের বদলে এই অভ্যাসে শরীরের ক্ষতিই হয়। চিকিৎসকদের মতে, শরীর সুস্থ রাখতে সব সময় ভরসা রাখা উচিত মরসুমি ফলের উপর।
গরমে বাজারে ফলের অভাব নেই। তবে গরমে জামের কদর খানিকটা বেশি। জামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। পটাশিয়াম, ফসফরাস, ক্যালশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ জাম শরীরের অনেক সমস্যার সমাধান করে। জেনে নিন, গরমের সময় কেন জাম রাখতেই হবে রোজের ডায়েটে।
১. হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে: ভিটামিন সি এবং আয়রনে ভরপুর জাম রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালনও ভাল হয়। রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন পৌঁছলে, শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম সঠিক হয়। রক্ত থেকে যাবতীয় দূষিত পদার্থ শোষণ করে রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে জাম। রক্ত পরিষ্কার থাকলে ত্বকেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। ত্বক সুস্থ থাকে।
গরমের সময় জাম রাখতেই হবে রোজের ডায়েটে। ছবি: সংগৃহীত।
২. ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে: ডায়াবেটিকদের জন্য রোজ জাম খাওয়া ভীষণ উপকারী। জাম ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। ডায়াবেটিকরা জামের বীজের গুঁড়োও নিয়মিত খেতে পারেন। সারা বছর জাম পাওয়া যায় না বটে, তবে বাজারে খুঁজলেই আপনি জামের বীজের গুঁড়ো পেয়ে যাবেন।
৩. কোষ্ঠকাঠিন্যের দাওয়াই: ডায়েটারি ফাইবার সমৃদ্ধ জাম কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। দীর্ঘ দিন ধরে যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন, সুস্থ থাকতে তাঁরা ভরসা রাখতে পারেন জামে। জাম প্রিবায়োটিক খাবার। পাকস্থলীতে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে। হজমও ভাল হয়, নিয়মিত জাম খেলে।
৪. চোখের যত্নে: চোখের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হল ভিটামিন এ। জামের মধ্যে এই ভিটামিন রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। তাই চোখ ভাল রাখতে গেলে যে কয়েকটি দিন জাম পাওয়া যায়, খেয়ে নেওয়াই ভাল।
৫. হার্টের জন্য ভাল: ১০০ গ্রাম জাম থেকে পটাশিয়াম পাওয়া যায় প্রায় ৫৫ গ্রাম। হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পটাশিয়াম। হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ধমনী সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে জাম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদেরা।