চুম্বনের সময়ে চোখ বন্ধ হয়ে আসে কেন? প্রতীকী ছবি।
যৌবনে কলেজ কেটে প্রথম সিনেমা দেখতে গিয়ে প্রিয় মানুষটির ঠোঁটে ঠোঁট রাখার অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। সেই প্রেম টিকুক আর না টিকুক, প্রথম চুম্বনের স্বাদ কিন্তু কখনও ভোলার নয়। হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখা, মানসিক উদ্বেগ কমানো থেকে মুখের মেদ কমাতে চুমুর কিন্তু জুড়ি মেলা ভার। চুমুর উপকারিতা নিয়ে গবেষণাও কম হয়নি।
তবে প্রেমের প্রকাশে গভীর চুমু হোক বা নেহাতই স্নেহচুম্বন— চুমুর সময়ে বেশির ভাগেরই চোখ বন্ধ হয়ে আসে। কেন এমনটা হয়? ভেবে দেখেছেন কখনও?
ভাবছেন নিশ্চয়ই প্রতিবর্ত ক্রিয়ার ফলে চুমুর সময়ে আপনার চোখ বন্ধ হয়ে যায়? বিজ্ঞান কিন্তু এমনটা বলছে না। গবেষকদের মতে, এই সময়ে মস্তিষ্কে ভাল লাগার অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে। মস্তিষ্ক একসঙ্গেই দু’টি কাজ ভাল করে করতে পারে না। তাই দর্শনেন্দ্রিয়র তুলনায় স্পর্শজনিত বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে চোখকে বন্ধ হয়ে যাওয়ার নির্দেশ পাঠায় মস্তিষ্ক।
চুমুর সময়ে সঙ্গীর শরীরের গন্ধ ও ত্বকের স্পর্শ দ্রুত মস্তিষ্কে পৌঁছয়। প্রতীকী ছবি।
বিজ্ঞান বলছে, দৃষ্টিশক্তি ও বোধশক্তি অন্য দিকে ব্যস্ত থাকলে আমাদের সেন্সরি অর্গানরা আর কোনও ইন্দ্রিয়কে অত গুরুত্ব দেয় না। তাই চোখ খোলা থাকলে চুমু থেকে সার্বিক আনন্দ মেলে না। যে কোনও আনন্দদায়ক বা আরামদায়ক বিষয়কে উপভোগ করতে গেলে চোখের পেশিগুলি শিথিল হয়ে যায়। তাই ভাল গান শোনা বা সুস্বাদু রান্না চেখে দেখার সময়েও কিন্তু নিজে থেকেই চোখ বুজে আসে। চুমুর সময়ে সঙ্গীর শরীরের গন্ধ ও ত্বকের স্পর্শ দ্রুত মস্তিষ্কে পৌঁছয়। হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যায়। এমন সময়ে চোখ খোলা থাকলে এই গন্ধ ও ত্বকের স্বাদ বয়ে বেড়ানোর পথে বাধা পায় মস্তিষ্ক। তাই চোখ বন্ধ করে ভাল লাগার অনুভূতিকে সে ছড়িয়ে দেয় মন-শরীর জুড়ে।
মনোবিদ্যাও অবশ্য এর নেপথ্যে বেশ কিছু কারণের কথা বলেছে। মনোবিদদের মতে, চোখ বুজে চুমু খেলে উল্টো দিকের মানুষটির প্রতি আস্থা ও ভরসা প্রদর্শন করা হয়। সঙ্গীর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলে চুম্বনের সময়ে আমাদের মনে সেই ভাব আরও প্রকট হয়ে ওঠে। তাই চোখ বুজে যায় সহজে।