লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির বিখ্যাত ‘দ্য লাস্ট সাপার’ ছবিটিতে ১৩ জন মানুষের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। আর সেখানে জুডাস ইসকারিওট নামের যে ব্যক্তিটি যিশুর সঙ্গে প্রথম প্রতারণা করেন বলে মনে করা হয়, তিনি ১৩তম ব্যক্তি হিসেবে যোগ দেন খাবার টেবিলে।
নর্স মিথলজিতে বর্ণিত আছে, এক ডিনার পার্টি বানচাল করে দেন প্রতারণার দেবতা লকি। তার আগমনে আয়োজনটি ভেস্তে যায় এবং পৃথিবী অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। পার্টিতে তিনি ১৩তম অতিথি হিসেবে প্রবেশ করেছিলেন।
এই নম্বরটি সব সময়ই যেন খাপছাড়া। অলিম্পাসের দেবতার সংখ্যা ছিল ১২ জন। ঘড়িতে ১২ ঘণ্টার হিসেব দেওয়া আছে। এক বছরেও ১২ মাস আছে। জোডিয়াকে রয়েছে ১২টি প্রতীক। তাই ১৩ সংখ্যাটিকে অশুভ মনে করে পশ্চিমী দুনিয়া।
পশ্চিমের অসংখ্য মানুষের বিশ্বাস, যাদের নামে ১৩টি অক্ষর রয়েছে তাদের উপর শয়তান ভর করে। ‘জ্যাক দ্য রিপার’ এর কথাই ধরুন। সেই ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলারের নামে ১৩টি অক্ষর রয়েছে।
এই কারণটি অন্যগুলোর থেকে পৃথক ও বিদঘুটে এবং কিছুটা আপেক্ষিকও বটে। তবুও মানুষের মনে বিশ্বাসের মতো ছেয়ে গিয়েছে। বছরে নারীদের ঋতু হয় ১৩ বারের মতো। প্রাচীনকালে যেহেতু ঋতুমতী নারীদের অশুভ মনে করা হত, তাই ওই সংখ্যাটিকেই অশুভ ভাবা হত।
ডাইনিদের সভায় নাকি সব সময় ১৩ জন ডাইনি অংশ নয়। সেখানে এই সংখ্যা নাকি কখনওই বদলায় না। সাধারণত মাসে সাড়ে ২৯ দিনে নতুন চাঁদের দেখা মেলে। একে বলা হয় চান্দ্রমাস। আর ১৩টি চান্দ্রমাসের সঙ্গে ডাইনিদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
পশ্চিমে পুরনো সময়ের রীতি অনুযায়ী, ফাঁসির মঞ্চে উঠতে ১৩ পা এগোতে হয়।
এমন বলা হয় যে, যে শুক্রবারে ১৩ তারিখ হয়, সেই দিনে চুল কাটতে নেই, কোনও সমাধির পাশ দিয়ে যেতে নেই। এমনকী মইয়ের নীচে যাওয়া যাবে না।
পৃথিবীর অনেক দেশেই বিভিন্ন হোটেলে ১৩ নম্বর ঘর বলে কিছু থাকে না। এটাকে এড়িয়ে যাওয়া হয়।
স্পেনের মানুষের বিশ্বাস, ১৩ তারিখের মঙ্গলবারে অশুভ কিছু আসে। তাই বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করা হয়।
প্রাচীন ব্যাবিলনের কোড অব হামুরাবি হল বিশেষ কিছু আইন। সেই আইনের ধারার ১৩তমটি পাওয়া যায়নি।
হোলি গ্রেইল রক্ষাকারী নাইটস টেম্পলারে গণহারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হত। আর তা শুরু হয় ১৩০৭ সালের ১৩ অক্টোবর থেকে। সাধারণত প্রতি শুক্রবার এই গণমৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হত।
প্রাচীন পার্সিদের বিশ্বাস ছিল, ১৩ হাজারতম বছরে শয়তান সরাসরি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামবে। তখন বিশ্বটা যন্ত্রণা আর মৃত্যুতে ছেয়ে যাবে।