Anuttama Banerjee

উৎসবের কাজ সামলে সন্তানকে ঠাকুরও দেখান! অনুত্তমা শুনলেন দুই গোয়েন্দাদেবীর পুজো-পুরাণ

দেবীপক্ষের শুরুতে আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক এবং ইউটিউব পেজে পুজো নিয়ে আড্ডায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। মনোবিদের সঙ্গে ছিলেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত মেঘনা কর এবং সিআইডি বিভাগে কর্মরত প্রণতি সাহা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৪৮
Share:

( বাঁ দিক থেকে) মেঘনা কর, অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রণতি সাহা।

ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে উৎসবের মরসুম। মহালয়া থেকেই চারদিকে আলোর রোশনাই, উৎবের মেজাজ। দেবীপক্ষের শুরুতে আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক এবং ইউটিউব পেজে মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আড্ডা দিলেন এমন দু’জন, যাঁরা সত্যিই শক্তিরূপিণী, যাঁদের কাজ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত মেঘনা কর এবং সিআইডির গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত প্রণতি সাহার সঙ্গে আড্ডা দিলেন মনোবিদ। পুজোর সময় গোটা শহর যখন আনন্দ, হইচই, হুল্লোড়ে মেতে থাকবে, তখন কিন্তু মানুষের সুরক্ষার কাজে এই দু’জনের কর্মব্যস্ততা তুঙ্গে।

Advertisement

এই পেশার আসার আগে কেমন ছিল মেঘনা এবং প্রণতির জীবন, এখন কতটা বদলে গিয়েছে— এই সব নিয়েই আড্ডা জমে উঠল। প্রণতি বললেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবই বদলে যায়। জীবনেও অনেক পরিবর্তন আসে, পাশাপাশি ভাবনাচিন্তাতেও বদল আসে। একটা সময় মনে হত, পুজোর সময় ঠাকুর দেখব না, তা কী করে হয়! তবে এখন মনে হয়, পুজোর সময় ডিউটি করব না, তা কী করে সম্ভব! পুজোর ক’দিন একেবারেই যে আগের জীবনটার জন্য মনখারাপ হয় না, তা নয়। যখন চারদিকে সবাইকে আড্ডা দিতে দেখি, রকমারি খাবার খেতে দেখি, মজা করতে দেখি, তখন অল্প হলেও দুঃখ হয়। তবে এখন যেখানে ডিউটি পড়ে, সেখানেই নিজের মতো করে সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে নিই, সেখানেই আমরা খাওয়াদাওয়া করি। অনেক সময় প্যান্ডেলে ছেলেকেও নিয়ে যাই। ওকেও ভলান্টিয়ারের কাজে লাগিয়ে দিই। এ ভাবে ওর সঙ্গে থাকাও হয়ে যায়। নিজের দায়িত্ব পালন করে যেটুকু পুজো উপভোগ করা যায়, সেটুকুই চেষ্টা করি।’’

পুজোয় দুপুর ৩টে থেকে ভোর ৪টে অবধি ডিউটি করেন মেঘনা। তিনি বললেন, ‘‘বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা আছে, ছেলে আছে। তারাও পুজোর সময় আশা করে থাকে, আমি ওদের নিয়ে কোথায় বেড়াতে যাব। আমি ভোর ৪টের সময় বাড়ি ফিরে ওদের নিয়ে বেরিয়ে পড়ি ঠাকুর দেখতে। রাস্তায় ছবি তুলি, কচুরি-জিলিপি খাই, আবার সময় মতো বাড়ি ফিরে ডিউটিতে ফিরে যাই। এতে হয়তো আমার ঘুমটা হয় না, তবে মনে স্বস্তি হয় যে, কাজের সঙ্গে আপস না করেও আমি ওদের সময় দিতে পারলাম।’’

Advertisement

মেঘনা ও প্রণতির মতো যাঁদের বাড়ি ও পেশা দু’দিকই সামলাতে হয়, তাঁদের মধ্যে এই দুই ক্ষেত্র নিয়ে অনেক সময় মানসিক টানাপড়েন কাজ করে। এই টানাপড়েন কী ভাবে সামলান তাঁরা? প্রণতি বললেন, ‘‘এই টানাপড়েনের মধ্যে যে কখনও পড়িনি, তা নয়। বিশেষ করে ছেলের পরীক্ষার সময় মনে হয়, বাকি সবার মায়েরা আমার তুলনায় তাঁদের ছেলে-মেয়েদের অনেক বেশি সময় দিচ্ছেন। আমি সব সময় ছেলের স্কুলের মিটিংয়ে যেতে পারি না, ওর প্রতিটা অঙ্ক পরীক্ষার আগে আমি ওকে সময় দিতে পারি না— তখন খারাপ লাগে। তবে আমি দেখেছি, আমাদের মতো কর্মরত মহিলাদের সন্তানেরা অনেক বেশি পরিণত বুদ্ধিসম্পন্ন হয়। আমি যখন ছেলেকে নিজের কষ্টের কথা বলি, ও আমার পাশে থাকে। ও আমায় বোঝায়, ও একাই সবটা সামলে দিতে পারে। ছেলে আমার কাজকে সম্মান করে, ও আমায় ভাল বোঝে। সেখানেই আমার খারাপ লাগা অনেকটা কমে যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement