এডিস মশা হল ডেঙ্গির প্রধান ধারক ও বাহক।
ছোট-খাটো, খুচরো শরীর খারাপ অর্থাৎ জ্বর, গা-হাত-পা, মাথা-ব্যাথা কিংবা গায়ে র্যাশ বের হলে বেশিরভাগ মানুষই স্রেফ উপেক্ষা করে যায়। এই সমস্ত ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজনবোধ অনেকেই করেন না। বড় জোর একটা প্যারাসিটামল। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এই জ্বর ভাইরাল ফিভার, সর্দি, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি ইত্যাদি মারণ রোগের প্রাথমিক উপসর্গ।
গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে, ক্রান্তীয় অঞ্চলগুলি ডেঙ্গি একটি বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোটা বিশ্বের ক্রান্তীয় অঞ্চলগুলিতে এই রোগের ঘটনা সারা বছর ধরেই ঘটতে থাকে। আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া, ক্যারিবিয়ান উপকূল, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল — ইত্যাদি জায়গায় এই রোগ প্রায়শই দেখা যায়।
এডিস মশা হল ডেঙ্গির প্রধান ধারক ও বাহক। কোনও সংক্রামিত এডিস মশা কোনও ব্যক্তিকে কামড়ালে, সেই ব্যক্তির এই রোগ হয়। যদিও এই রোগের সরাসরি সংক্রামন হয় না। কিন্তু কোনও সংক্রামিত ব্যক্তিকে মশা কামড়ানোর পরে, সেই মশা যদি অন্য কোনও ব্যক্তিকে কামড়ায়, তবে ওই ব্যক্তির ডেঙ্গি হতে পারে।
তাই যখনই কোনও জ্বর, মাথা-ব্যথা, গায়ে র্যাশ, নিম্ন রক্তচাপ, কিংবা রক্ত ক্ষরণের মতো কোনও উপসর্গ দেখা যায়, তখনই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার তৃতীয় দিন থেকে সপ্তম দিন পর্যন্ত, সবথেকে বেশি ঝুঁকি থাকে। কিন্তু এতে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। প্লেটলেট ১০ হাজারের নীচে না নামা পর্যন্ত কিংবা ক্রমাগত শরীরের কোনও এক স্থান থেকে রক্তক্ষরণ না হলে, বাইরে থেকে প্লেটলেট দেওয়ার কোনও প্রয়োজন হয় না। সমস্ত বয়সের মানুষেরই এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।
তাই জ্বর হলেই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন। অন্যথায়, পরিণতি হতে পারে মারাত্বক। যেমনটা হয়েছিল ঋতজার। সেটি ছিল তাঁর জীবনের সব থেকে খরাপ সময়।
তাঁর এই অভিজ্ঞতা থেকে এটি পরিষ্কার যে, একটা মাত্র মশাও হতে প্রাণঘাতী। তাই সাবধান!