Kevin Carter

এক চিত্রসাংবাদিকের মৃত্যু ও দুনিয়াকাঁপানো ছবি

সোমবার ছিল বিশ্ব ফোটোগ্রাফ দিবস। তার সঙ্গে তাল রেখে আজ রইল বিশ্বে সাড়া জাগানো এক আলোকচিত্রের নেপথ্যকাহিনি এবং সেই চিত্রগ্রাহকের শেষ পরিণতির বিবরণ।

Advertisement

পীযূষ আশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৪ ২০:২১
Share:

কেভিন কার্টারের পুলিৎজ়ার পাওয়া ছবি ‘ভালচার অ্যান্ড দ্য লিটল গার্ল’। ‘এল মুনদো’ আর্কাইভের সৌজন্যে।

ছবিটি অনেকের দেখা। মাটিতে এক শিশু। কাঠির মতো সরু সরু হাত-পা। চলার শক্তি নেই। মাটিতে নুয়ে পড়েছে। পিছনে একটি শকুন। অপেক্ষা করছে। কিসের অপেক্ষা? না, সেটা আর বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

Advertisement

ছবিটি সুদানে তোলা। ১৯৯৩ সালে। সে সময়ে দুর্ভিক্ষ সুদানে। ছবিটি তুলেছিলেন কেভিন কার্টার। কেভিন দক্ষিণ আফ্রিকার চিত্রসাংবাদিক। ‘ভালচার অ্যান্ড দ্য লিটল গার্ল’ নামের এই ছবিটির জন্য পুলিৎজ়ার প্রাইজ় পেয়েছিলেন তিনি। পুরস্কার পাওয়ার চার মাস পর আত্মহত্যা করেন তিনি। কেভিনের বয়স তখন ৩৩।

কেভিন ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। জোহানেসবার্গ উপকণ্ঠে বড় হওয়ার সময়ে কাছ থেকে দেখেছেন বর্ণবৈষ্যমের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই। চারপাশের অস্থিরতা দাগ ফেলে দেয় কার্টারের মনে। ওষুধ নিয়ে পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখে যোগ দেন দক্ষিণ আফ্রিকার সেনাদলে। কিন্তু সেখানেও মন বসাতে পারেননি। চলে যান ডারবানে, ডিজে হিসেবে চাকরি নেন। সাফল্য কিংবা আনন্দ কোনওটিই পাননি। জীবনের কোথায়, কী লেখা থাকে কেউ জানে না— কেভিন কার্টার চাকরি পান এক ক্যামেরা সারাইয়ের দোকানে। ক্যামেরার সঙ্গে সেই পরিচয় শুরু। ভালবাসাও। অশান্ত-অস্থির দক্ষিণ আফ্রিকায় তখন ছবি তোলার বিষয়ের অভাব নেই। কেভিন ছবি তুলতে লাগেন। ক্যামেরা সারাইয়ের কর্মী থেকে হয়ে ওঠেন এক পুরোদস্তুর চিত্রসাংবাদিক।

Advertisement

ডারবানে ডিজে হিসেবে কাজ করার সময় কেলভিন কার্টার। ‘দ্য ব্যাং ব্যাং ক্লাব’ বইয়ের সৌজন্যে।

এখানে ‘দ্য ব্যাং ব্যাং ক্লাব’-এর কথা একটু বলে নেওয়া যাক। নামটা খাপছাড়া, আর তাদের সদস্যেরাও। যদিও সদস্যেরা আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ক্লাবের কথা স্বীকার করতেন না। যা-ই হোক, এই ক্লাবের সদস্যেরা প্রত্যেকেই চিত্রগ্রাহক বা চিত্রসাংবাদিক। কেভিন কার্টার তো ছিলেনই, সঙ্গে কেন ওস্টারব্রুক, গ্রেগ ম্যারিনোভিচ আর জোয়াও সিলভা। এই জোয়াও সিলভা আর কার্টার ছবি তুলতে সুদান যাবেন স্থির করেন। সুদানে তখন পরিস্থিতি খুবই খারাপ। দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশে কোনও নাগরিক পরিষেবা নেই। দুর্ভিক্ষ, খাদ্যের জন্য হাহাকার, লাগাতার মৃত্যু। সিলভা আর কার্টার পৌঁছে গেলেন সুদান।

‘ভালচার অ্যান্ড দ্য লিটল গার্ল’ পুলিৎজ়ার পাওয়া ছবি, তাই এর ইতিহাস এবং প্রেক্ষাপট নিয়ে রকমারি চর্চা রয়েছে। ‘দ্য ব্যাং ব্যাং ক্লাব’-এর দুই সদস্য গ্রেগ ম্যারিনোভিচ আর জোয়াও সিলভা একই নামে পরে একটি বই লেখেন। বইটির ‘ফ্লাইজ় অ্যান্ড হাংরি পিপল’ অধ্যায়ে পাওয়া যায় এই সাড়া ফেলে দেওয়া আলোকচিত্রটি সম্পর্কে একটি অনুপুঙ্খ চিত্র। আসুন, আমরা ‘মাছি এবং ক্ষুধার্ত মানুষ’ ধরেই ছবিটির কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করি।

সংক্ষেপে ঘটনাক্রম এই রকম। ১৯৯৩ সালের মার্চ মাসে সুদানে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন জোয়াও। গৃহযুদ্ধ এবং দুর্ভিক্ষের ছবি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে বিক্রি করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। রব হ্যাডলি নামে পরিচিত এক ফোটোগ্রাফার সুদানে রাষ্ট্রসঙ্ঘের হয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। সুদানে গিয়ে ছবি তোলার ব্যাপারটি হ্যাডলিই জানান জোয়াওকে। জোয়াও এর পর কার্টারকে বলেন সুদান যাওয়ার পরিকল্পনার কথা। ব্যক্তিগত জীবনে রকমারি অশান্তিতে থাকা কার্টার লুফে নিলেন এই পরিকল্পনা। এক দিকে নতুন দেশ, নতুন কাজ, নতুন অ্যাডভেঞ্চার, অন্য দিকে জোহানেসবার্গে সমস্যা জর্জরিত দিনগুলি থেকে কিছুটা সরে থাকার অবকাশ।

কার্টারও বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। কিছু অগ্রিম নেন। ধারও নেন বন্ধুদের থেকে। মোটামুটি একটু অর্থ সংগ্রহ হলে বিমানযোগে দুই বন্ধু দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে হাজির হন কেনিয়ার নাইরোবিতে। বাকি পথ নিজেদের কিছু করার নেই, রাষ্ট্রসঙ্ঘের ত্রাণের উদ্দেশ্যে নিযুক্ত বিমানের উপর নির্ভরশীল।

কার্টার এবং এক বিশেষ মুহূর্ত। ছবি: সংগৃহীত।

দক্ষিণ সুদানের পরিস্থিতি তুলনায় বেশি খারাপ। এমনকি, রিলিফের বিমানও পৌঁছতে পারছে না সেখানে। দুই বন্ধু অধৈর্য হয়ে ওঠেন নাইরোবির হোটেলে বসে। সঞ্চিত অর্থ ক্রমশ শেষ হতে থাকে। এমনও আশঙ্কা দেখা দেয়, যুদ্ধ এবং দুর্ভিক্ষের একটিও ছবি না তুলে হয়তো তাঁদের ফিরে যেতে হবে।

অবশেষে বহু প্রত্যাশিত সুযোগ এল। জোয়াও এবং কার্টার পৌঁছলেন সুদান সীমান্তের কাছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের বেস ক্যাম্পে। সেখানে রাত কাটিয়ে দু’জনে পৌঁছলেন আইয়োধ অঞ্চলে।

যেমনটি তাঁরা ভেবেছিলেন, পরিস্থিতি তেমনই। হয়তো তার চেয়েও খারাপ। দীর্ঘ দিন খেতে না পাওয়া উলঙ্গ মানুষের দল। কেউ মাটিতে শুয়ে, কেউ ধুঁকছেন। তারই মধ্যে টহল দিচ্ছে যুযুধান দুই পক্ষের অস্ত্রধারী। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মালবাহী বিমান নামতেই ক্ষুধার্ত মানুষের দল চলে এল একেবারে রানওয়ের কাছে। যাঁদের সে সামর্থ্য নেই, তাঁরা নিজেদের শরীরটাকে কোনও মতে টেনে নিয়ে চললেন অস্থায়ী ত্রাণশিবিরের দিকে। খাবার কিছু বাঁচলে, সেখান থেকেই তা বণ্টন করা হবে।

জোয়াও আর কার্টার ছবি তুলতে শুরু করে দিলেন। খুব দূরে না গেলেও, একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে। জোয়াও একটি অস্থায়ী ক্লিনিকের ছবি তুলছিলেন। বিদ্রোহী সেনাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন। ফেরার সময়ে কার্টারের সঙ্গে দেখা। কার্টার জানান, তিনি একটি অবিশ্বাস্য ছবি তুলেছেন। নানা অ্যাঙ্গেল থেকে একটি ক্ষুধার্ত শিশুর ছবি তোলার সময় একটি শকুন সেখানে এসে বসে। সেই ছবি তিনি তুলেছেন। তিনি শকুনটিকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন। কার্টার একাধারে উত্তেজিত এবং আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। একটি সিগারেট ধরিয়ে বলেন, ‘আমার মেগানের (মেয়ে) কথা মনে পড়ছে। বাড়ি ফিরে ওকে কোলে নিতে চাই। আমার তর সইছে না।’

ছবিটি তোলার পর আর একটি মাত্র দিন সুদানে ছিলেন কার্টার। তার পর ফিরে যান দক্ষিণ আফ্রিকায়। ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ সুদান দুর্ভিক্ষের ছবি খুঁজছিল প্রকাশের জন্য। তারা কার্টারের কথা জানতে পারে। ১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ প্রকাশিত হয় ‘ভালচার অ্যান্ড দ্য লিটল গার্ল’। প্রকাশিত হওয়ার দিন থেকেই সংবাদপত্রের দফতরে ফোন আর চিঠির বন্যা। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে জিজ্ঞাস্য একটিই— মেয়েটির কী হল? সে কি মৃত?

‘দ্য ব্যাং ব্যাং ক্লাব’ বইয়ের প্রচ্ছদ। ছবি: সংগৃহীত।

কয়েক দিন পর ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ আবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ঠিক প্রতিবেদন নয়, ‘এডিটর্স নোট’। তারিখ ৩০ মার্চ, ১৯৯৩। বিষয়বস্তু ‘ভালচার অ্যান্ড দ্য লিটল গার্ল’। লেখা হল, ‘‘চিত্রগ্রাহক জানিয়েছেন, ওই শকুনটিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিছু ক্ষণ পর মেয়েটি আবার যাত্রা শুরু করে। তবে সে ত্রাণশিবিরে পৌঁছতে পেরেছিল কি না, তা তিনি জানেন না।’’ কার্টারের বাড়তি কিছু বলার ছিল না। তিনি ভাল ছিলেন না। বাড়িতে বেশির ভাগ সময় কাটাতেন। মাদক নিতেন। এমনকি, গাড়ি দুর্ঘটনার জন্য এক বার গ্রেফতারও হতে হয় তাঁকে।

১৯৯৪ সালের এপ্রিল। আমেরিকা থেকে ফোন এল কার্টারের কাছে। ‘ভালচার অ্যান্ড দ্য লিটল গার্ল’ ছবিটির জন্য পুলিৎজ়ার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। জোহানেসবার্গের নানা জায়গায় সে সময়ে হিংসার ঘটনা। ‘দ্য ব্যাং ব্যাং ক্লাব’-এর কয়েক জন মিলে শহরের বাইরে গিয়েছিলেন সংঘর্ষের ছবি তুলতে। কার্টার বাড়ি ফিরেছিলেন সে দিন একটু তাড়াতাড়ি। ফিরে রেডিয়োয় শুনলেন তাঁর প্রাণের বন্ধু ওস্টারব্রুকের মৃত্যু হয়েছে। আর এক সতীর্থ ম্যারিনোভিচ মারাত্মক জখম।

পুলিৎজ়ারের জন্য আমেরিকা গেলেন কার্টার। পুরস্কার পেলেন, পেলেন প্রশংসা। সঙ্গে তীব্র সমালোচনা। অন্য একটি সংবাদপত্রে মন্তব্য করা হল— ‘‘পুরস্কৃত ছবিটির জন্য চিত্রগ্রাহক যখন লেন্স ঠিক করছিলেন, ওই শিশুটিকে সাহায্য না করে, তিনিও কি ফ্রেমের বাইরে দ্বিতীয় শকুনে পরিণত হলেন না?’’

কে নিয়ংয়ের পরিবারের এক সদস্য। ‘এল মুনদো’ আর্কাইভের সৌজন্যে।

এই প্রশ্নের কোনও সহজ, একরৈখিক উত্তর নেই। পুলিৎজ়ার পেলেও খুব বেশি সচ্ছলতার মধ্যে ছিলেন না কার্টার। মাঝেমধ্যে অবসাদ গ্রাস করত তাঁকে। ’৯৪ সালের দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচনের আগে তাঁর তোলা এক বিদ্রোহী সেনার আত্মসমপর্ণের ছবি আবার সাড়া ফেলে দেয়। কিন্তু কাজে সেই আগের মতো উদ্যম পাচ্ছিলেন না কার্টার। ভুলও হচ্ছিল, মারাত্মক ভুল। এক নামী সংবাদ সংস্থার অ্যাসাইনমেন্টে গিয়ে নেগেটিভের পুরো সংগ্রহ ফেলে আসেন বিমানে।

১৯৯৪ সালের ২৭ জুলাই। আত্মঘাতী হলেন কার্টার। পাওয়া গেল একটি চিঠি। তাতে লেখা, ‘‘আমি দুঃখিত। দুঃখ, যন্ত্রণা, শবদেহ আর হত্যার জীবন্ত স্মৃতি আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। স্মৃতি তাড়া করছে ক্ষুধার্ত-অসুস্থ শিশুর, আগ্নেয়াস্ত্র-লোভী উন্মাদ, পুলিশ, ঘাতক এবং জল্লাদদের। আমি চললাম, ভাগ্যে থাকলে দেখা হবে কেনের সঙ্গে।’’

কার্টারের কাহিনি এখানেই শেষ। কেভিনের মৃত্যু হলেও, তাঁর সাড়াজাগানো ছবিটির কাহিনি এখানেই শেষ নয়। ছোট্ট একটি উপসংহার রয়েছে।

সুদানের ওই দুর্ভিক্ষপীড়িত শিশুটির পরিচয় খুঁজে বার করতে উদ্যোগী হয় স্প্যানিশ সংবাদপত্র ‘এল মুনদো’। স্পেন থেকে সুদান পৌঁছন সাংবাদিকেরা। শিশুটির ডান কব্জিতে যে প্লাস্টিক ব্রেসলেট ছিল, তা থেকে দু’টি অক্ষর উদ্ধার করা যায়—T3। নীল কালিতে লেখা এই দু’টি অক্ষর ছিল শিশুটির পরিচয় খুঁজে বার করার অন্যতম সূত্র। দক্ষিণ সুদানের আইয়োধ অঞ্চলে শিশুটির ছবি তুলেছিলেন কেভিন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের ত্রাণশিবিরের সঙ্গে যুক্ত ফ্লোরেন্স মরিন জানান, T আর S— এই দুই অক্ষর তাঁরা লিখে দিতেন ব্রেসলেটে। যাঁরা মারাত্মক অপুষ্টিতে রয়েছেন তাঁদের জন্য T। আর যাঁদের মাঝেমধ্যে খাদ্য প্রয়োজন, তাঁদের S। T3 মানে ওই শিশুটি মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছিল। পাশে তিন লেখা, কারণ তার আগে আরও দু’জন পৌঁছেছিল ত্রাণশিবিরে, তার নম্বর ছিল তিন।

এই তথ্যগুলি হাতে নিয়ে আশপাশের গ্রামগুলিতে খোঁজখবর শুরু করেন সাংবাদিকেরা। শিশুটির ছবিও দেখাতে থাকেন। এ ভাবেই তাঁদের সঙ্গে দেখা হয়ে যায় মারি নায়ালুয়ার সঙ্গে। মারি ওই ত্রাণশিবিরগুলিতে খাবার বয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করতেন। নায়ালুয়া একটি নতুন তথ্য দিলেন। শিশুটি মেয়ে নয়, ছেলে। তার নাম কং নিয়ং। জানালেন, দুর্ভিক্ষে ছেলেটি মারা যায়নি। সে কোথায় থাকে, তা তিনি সঠিক জানেন না। তবে সম্ভাব্য একটি গ্রামের সন্ধান দিলেন।

অ্যাসাইনমেন্টে কেভিন কার্টার। ‘দ্য ব্যাং ব্যাং ক্লাব’ বইয়ের সৌজন্যে।

‘এল মুনদো’র সাংবাদিকেরা হাজির হলেন সেই গ্রামে। বহু মানুষের সঙ্গে কথা হল। এই জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যেই এক ব্যক্তি ছবি দেখে মাথা নাড়লেন। হ্যাঁ, কং নিয়ংকে তিনি চিনতে পেরেছেন। কেননা, কং তাঁরই পুত্র। সাংবাদিকেরা উৎসাহে ফেটে পড়লেন! তা হলে কি ছবির অজানা শিশুকে খুঁজে পাওয়া যাবে, দেখা করা যাবে তার সঙ্গে?

আবার মাথা নাড়লেন ওই গ্রামবাসী। কংয়ের সঙ্গে দেখা করা আর সম্ভব নয়। সে এখন আর বেঁচে নেই। মারি নায়ালুয়া ঠিকই জানিয়েছেন, ১৯৯৩ সালের সেই দুর্ভিক্ষে কং মারা যায়নি। চার বছর পর প্রবল জ্বরে অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়। সাংবাদিকেরা ফিরে এসে এই ঘটনার এক বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। সংবাদপত্রের (২১ ফেব্রুয়ারি ২০১১) অনলাইন সংস্করণে স্পেনীয় ভাষায় রয়েছে এই রিপোর্ট।

গতকাল ছিল ওয়ার্ল্ড ফোটোগ্রাফি ডে। ছবি কিংবা চিত্র সাংবাদিকতার ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য ছবির সংখ্যা কম নয়। তবে, ছবি এবং তার পরতে-পরতে থাকা নানা আখ্যান, চিত্রগ্রাহকের জীবন এবং মৃত্যু, একটি ছবির সামগ্রিক অভিঘাত— এই সব বিচার করলে ‘ভালচার অ্যান্ড দ্য লিটল গার্ল’ বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে, আজকের দিনে, সম্ভবত, যে কোনও দিনেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement