প্রচুর নিয়ম মেনে চলছেন। প্রয়োজনীয় ডায়েট, শারীরিক কসরত বাদ যাচ্ছে না কিছুই। তবু ওজন কমছে কই! এমন সমস্যায় জেরবার হতে হয় অনেককেই। ফলে ডায়েটের ঘন ঘন পরিবর্তন, আরও বেশি ওয়ার্ক আউট, শেষে হতাশ হয়ে সব অভ্যাসই প্রায় ছেড়ে দেওয়া। কিন্তু জানেন কি, সব মেনে চলার পরেও আপনার ছোট্ট একটা ভুলই ওজন কমতে দিচ্ছে না!
সব নিয়ম মেনে চলেন বটে, তবে দিনে জল খান কতটুকু? জানেন কি, শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী জল খাওয়ার নিয়মের উপরেও দাঁড়িয়ে আছে ওজনতত্ত্ব। চিকিৎসকরাও তাই সারা দিনের ডায়েটের শুরুই করেন এক গ্লাস জল দিয়ে। নিয়ম মেনে জল খাওয়ার কথাও যোগ করেন পরামর্শে। এই জল-নির্ভরতা কেন জানেন?
পুষ্টিবিদ ও ডায়েট বিশেষজ্ঞ সুমেধা সিংহের মতে, আমাদের শরীরকে আমরা কী ভাবে দেখভাল করছি, সেই ধারণা শরীরেরও আছে। জল যে কেবল টক্সিন দূর করে তা-ই নয়, শরীরের অন্য কার্যকারিতা বজায় রাখতেও জল জরুরি। এ দিকে শরীর ও উচ্চতা অনুযায়ী জলের পরিমাপ আছে সকলেরই।
প্রয়োজনের তুলনায় জল কম খাওয়ার অভ্যাস দিনের পর দিন থাকলে শরীর তাতেই অভ্যস্ত হতে থাকে। ও ধরেই নেয় টাইম কলের মতোই একটু একটু করে কখনওসখনও জলের জোগান সে পাবে। এ দিকে শারীরবৃত্তীয় নানা কাজ করতে গেলে জল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শরীর তখন ফন্দি খোঁজে সেই কাজ সমাপন করার। কী সেই কৌশল জানেন?
ঠিক যেটুকু জল শরীরকে দিচ্ছেন, তার মধ্যেই কিছুটা জল শরীর যাবতীয় কাজে ব্যবহার করে। যেই শরীর বোঝে জলের জোগান বেশি পাবে না, তখন থেকেই সে জল জমিয়ে রাখার প্রবণতায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ঠিক আপনিও যেমন জলের জোগান কম এলে কুয়ো বা বালতিতে জল ধরে রাখবেন, ঠিক তেমন আমাদের শরীরেরও স্বভাব।
এ দিকে জল যেহেতু একা শরীরে জমতে পারে না, তাই নুনকে এগিয়ে দেয় শরীর। নুনকে সঙ্গী করে জল জমেথাকে শরীরে। এর প্রভাবে শরীর ফুলে যায়। শরীরের আনাচেকানাচে জমে থাকা এই সব জল অন্যান্য অসুখ যেমন ডেকে আনে, তেমনই বাড়িয়ে দেয় শরীরের ওজন।
কিন্তু যদি শরীরের প্রয়োজন ও ওজন অনুযায়ী জল খান আপনি, তা হলে কিন্তু এই নিয়ম আর খাটে না। তখন শরীরও বোঝে যখনই প্রয়োজন পড়বে তখনই জল পাব। তাই সেও আর জল জমিয়ে রাখতে চায় না। বরং প্রয়োজনীয় কাজ সারার পর জলকে টক্সিন নিয়ে শরীরের বাইরে বার করে দিতে উদ্যত হয়।
তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী জল খেলে জলের কারণে ফুলে থাকার বিড়ম্বনা সহ্য করতে হয় না। ওজনও অনেক নিয়ন্ত্রণে থাকে। যদি কোনও অসুখের কারণে কম জল খাওয়াই আপাতত চিকিৎসকের পরামর্শ হয়, তা হলে নুনের পরিমাণও কমিয়ে দিন। নুন না পেলে শরীর জল জমাতে পারবে না। ফলে ওজনও বাড়বে না।