Bluetooth Scam

ফোনের ‘ব্লুটুথ’ সারা ক্ষণ চালু রাখলেই বিপদ! কী কী সর্বনাশ করতে পারে হ্যাকারেরা?

প্রযুক্তি যত উন্নত হয়েছে, ততই তার ফাঁক গলে প্রতারণার নিত্যনতুন কৌশলও বেরিয়ে গিয়েছে। তেমনই একটি হল ‘ব্লুবাগিং’। বিষয়টি ঠিক কী?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:২৮
Share:

‘ব্লুটুথ’ থেকে কী বিপদ হতে পারে? প্রতীকী ছবি।

ফোনের ‘ব্লুটুথ’ সারা ক্ষণ চালু করার অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। ধরা যাক, কারও ফোন থেকে ছবি বা ভিডিয়ো নিলেন, অথবা স্পিকারে কিছু শুনলেন, তার পর তেমন ভাবেই ‘ব্লুটুথ’ চালু রেখে দিলেন। বার বার চালু আর বন্ধ করার ঝক্কি এড়াতে, ফোনে সর্ব ক্ষণই ‘ব্লুটুথ’ চালু রাখাই সহজ মনে করেন অনেকে। আর এই অভ্যাসের কারণেই কত যে বিপদ হতে পারে, তার ধারণাও নেই বেশির ভাগ মানুষেরই। প্রযুক্তি যত উন্নত হয়েছে, ততই তার ফাঁক গলে প্রতারণার নিত্যনতুন কৌশলও বেরিয়ে গিয়েছে। তেমনই একটি হল ‘ব্লুবাগিং’। বিষয়টি ঠিক কী?

Advertisement

ফোনের ‘ব্লুটুথ’ ক্রমে প্রতারণার নতুন মাধ্যম হয়ে উঠেছে, এমনই জানিয়েছেন এক বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার সফ্‌টঅয়্যার কর্মী শুভজিৎ দাস। তিনি জানালেন, ‘ব্লুবাগিং’ নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই অনেকেরই। অথচ এর মাধ্যমেই কিন্তু সাইবার অপরাধীরা যে কোনও ডিভাইস হ্যাক করতে পারে। এর জন্য দরকার হয় সেই ফোন বা ডিভাইসের ‘ব্লুটুথ’। যদি তা সব সময় চালু থাকে, তা হলে তার মাধ্যমেই ফোনে অজানা স্পাইঅয়্যার বা ম্যালঅয়্যার ইনস্টল করে দেওয়া যায়। ‘ব্লুটুথ’-এর মাধ্যমে ফোনের ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন ছবি, অডিয়ো, ভিডিয়ো, মেসেজ ইত্যাদিও দেখে নেওয়া বা হাতিয়ে নেওয়া অসম্ভব নয়।

‘ব্লুটুথ’ হল খুব ছোটখাটো রেডিয়ো প্রযুক্তি, যা স্বল্প পরিসরে কাজ করে। একটি ফোন থেকে অন্য ফোনে অথবা এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে তথ্য আদানপ্রদানে অথবা কথা বলার জন্য এটি কাজে লাগে। তাই অনেকেরই মনে হতে পারে, ‘ব্লুটুথ’ থেকে আর তেমন বিপদের সম্ভাবনা কোথায়! শুভজিতের কথায়, “আগে ফোনেই ‘ব্লুটুথ’ থাকত। এখন কিন্তু টিভি, গাড়ি থেকে স্মার্টওয়াচ ও ইয়ারবাড— সব কিছুতেই ‘ব্লুটুথ’ থাকে। তাই অনেকেই এটি সব সময় চালু রেখে দেন। আর এই সুযোগেই ‘ব্লুটুথ’কে জালিয়াতির নতুন মাধ্যম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। হ্যাকারেরা এমন ব্যবহারকারীদের নিশানা করে, যাঁরা রাস্তাঘাট, অফিস, রেলস্টেশন বা যে কোনও জনবহুল জায়গায় ‘ব্লুটুথ’ চালু রাখেন। এই সূত্র ধরেই সেই ডিভাইসটির খুঁটিনাটি হাতিয়ে নেয় তারা। এমনকি, কল লগ, মেসেজ, অ্যাপ, ফোনের পাসওয়ার্ড এবং ফোন লকের কোডও চুরি করে নেওয়া সম্ভব।”

Advertisement

কী ভাবে সতর্ক থাকবেন?

১) প্রয়োজন শেষ হলে ‘ব্লুটুথ’ বন্ধ করে দিন। যে কোনও জনবহুল জায়গায় ভুলেও ‘ব্লুটুথ’ অন রাখবেন না।

২) ‘ব্লুটুথ’-এর মাধ্যমে কোনও অজানা লিঙ্ক বা মেসেজ এলে, সেটি খুলে দেখবেন না। লিঙ্কে ক্লিক করলেই ভাইরাস ঢুকে যেতে পারে ফোনে বা ডিভাইসে।

৩) অচেনা নাম বা নম্বর থেকে ‘ব্লুটুথ’ সংযোগ করতে বললে, তা গ্রহণ করবেন না। ‘ব্লুটুথ পেয়ারিং’ করার সময়ে সতর্ক থাকতে হবে। কেবলমাত্র চেনা ডিভাইসের সঙ্গেই তা করবেন।

৪) কোনও ব্যক্তিগত বা গোপন তথ্য, ব্যাঙ্কের খুঁটিনাটি বা লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য ‘ব্লুটুথ’ মারফত পাঠাবেন না।

৫) ‘ব্লুটুথ’-এর মাধ্যমে কোনও অ্যাপ বা সফ্‌টঅয়্যার আপডেটের তথ্য এলে, তা না করাই ভাল। যদি অ্যাপ ডাউনলোড করে ফেলেন, তা হলে তা অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ দিয়ে স্ক্যান করে যাচাই করে নিতে হবে।

৬) ‘ব্লুটুথ’-এর পাসওয়ার্ড শক্তিশালী রাখতে হবে। কেবল নাম, জন্মতারিখ বা একই রকম নম্বর দিয়ে পাসওয়ার্ড তৈরি করবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement