এক ল্যাপটপে কাজ, অন্য ল্যাপটপে জীবন।
সেই যবে বাড়ি থেকে কাজ শুরু হয়েছে, ব্যক্তিগত জীবন বলে আর কিচ্ছু নেই তো? কাজের সময় কখন শেষ হয়, কখনই বা শুরু হয়— জানতেই পারেন না? অফিসের সময়ের পরে সিনেমা দেখতে বসলেও কাজ থেকে বেরোতে পারছেন না? মাঝেমাঝেই খেয়াল হচ্ছে, কখন যেন সিনেমা থামিয়ে দিয়ে কাজে ঢুকে পড়েছেন আবার? গোটা সপ্তাহটা এ ভাবেই কেটে যাচ্ছে? ছুটির দিন পাচ্ছেন না?
আগে যখন অফিসে বসে কাজ করতেন, তখন সময় থাকত একটা নিয়মে বাঁধা। অফিস থেকে বেরিয়ে পড়লে সেই সময়টা থাকত একান্ত নিজের হয়ে। সেই সময়ের নিয়মটা আবার ফিরিয়ে আনুন জীবনে।
সমাধান নিজেকেই বার করতে হবে। কী ভাবে করবেন? কাজের ল্যাপটপ আর ‘পার্টি’ ল্যাপটপটা আলাদা করে ফেলুন। দু’টো ল্যাপটপ রাখতে অসুবিধে? তবে পার্টিটা ফোনে করুন না। এখন তো এমনিতে ফোনের পর্দার দিকে তাকিয়ে কেটেই যায় দিনটা।
অবাক হচ্ছেন? কাজটা কিন্তু খুব কঠিন নয়।
দিনের শুরুতে কাজের তালিকা বানিয়ে নিন
সারা দিনে কী কী কাজ আছে, গোড়াতেই ঠিক করে ফেলুন। এক দিনে সব কাজ করা এমনিও সম্ভব নয়। কাজের গুরুত্বের উপরে জোর দিন। সেই মতো ঠিক করে ফেলুন, কোন দিন কোন কাজগুলো করবেন।
তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে ঠিক করে নিন কাজের সময়
নিজের তালিকা অনুযায়ী কাজ করতে হলে, সময়ের আন্দাজ কিছুটা থাকবেই। এক-একটি কাজ পিছু কত সময় লাগবে, তা ধরে ঠিক করে নিন ক’টা পর্যন্ত সে দিন কাজ করতেই হবে। এর মানে কাজের সময় কম হবে, এমন নয়। ফাঁকি দেওয়াও হবে না।
সেই সময়টা জানিয়ে রাখুন বাড়ির সকলকে
বাড়ির লোকেদের কাছে সেই সময়টার সম্পর্কে ধারণা থাকলে তাঁরাও জানবেন, কোন সময়ে আপনার সঙ্গে আড্ডা দেওয়া যাবে। বা কোনও ব্যক্তিগত কাজ রাখা যাবে। আর তাঁরা তেমন কিছু ভেবে রাখলে, সময়ে কাজ করে ফেলার তাগিদটা থাকবে আপনারও। খেয়াল করে দেখুন, কাজ না শেষ হওয়ার কারণ শুধু অফিস নয়। অনেকটাই আপনি নিজেও।
দিনের শেষ আনন্দ দেবে, এমন একটা কিছু করুন
আগে থেকে ঠিক করে রাখুন কাজ শেষ হলে কোন দিন কী করবেন। এখন তো রোজ বাইরে যাওয়া ঠিক নয়, ফলে বাড়িতেই কিছু ঠিক করুন। কিন্তু অবশ্যই করুন। সিনেমা দেখা, গান শোনার মতো সাধারণ জিনিস হলেও, আগে থেকে ঠিক করে রাখুন।
কাজের সময়ের শেষে ল্যাপটপটা বন্ধ করুন
দিনের কাজগুলো হয়ে গেলেই কাজের ল্যাপটপটা বন্ধ করে ফেলুন ঝটপট। ল্যাপটপটা বন্ধ করার একটা সময় ঠিক করে রাখবেন আগে থেকে। কোনও ভাবেই তার পরে আর ওই ল্যাপটপে কিছু করবেন না। কাজের বাইরেও কিছু করবেন না ওই ল্যাপটপে।
পার্টি ল্যাপটপটা চালু করে ফেলুন
মাঝেমাঝে নিজের মতো কিছু পড়তে ইচ্ছে করতে পারে। গান শুনতে হতে পারে। একা সিনেমা দেখার অভ্যাসও থাকে। ল্যাপটপেই করে থাকেন তো সে সব? আলাদা একটি ল্যাপটপে করুন সেই কাজ। কাজ এবং পার্টির মধ্যে ভাগটা ল্যাপটপই করে দিক। বাড়িতে আর একটা ল্যাপটপ না থাকলে নিজের স্মার্ট ফোনটাই ব্যবহার করুন সে কাজে।
দিনের শেষে আনন্দ করার মতো কিছু আগে থেকে ঠিক করা থাকলে, কাজে গতি আসবে। আর কাজের ল্যাপটপটা বন্ধ করার অভ্যাস হলে, আসবে মনে শান্তি। কয়েকটা দিন মেনে দেখুনই না এই নিয়ম!