বিক্রি হচ্ছে এমনই নানা মিষ্টি। নিজস্ব চিত্র
কাটলেট সন্দেশ, বোম্বে রোল থেকে কাজু কোর্মা। জামাইষষ্ঠীতে ‘ফিউশন মিষ্টি’ নিয়ে হাজির সীতাভোগ-মিহিদানার পীঠস্থানের ব্যবসায়ীরা। সঙ্গে উৎসবকে মনে করাতে রয়েছে জামাইষষ্ঠী লেখা স্পেশ্যাল সন্দেশও।
তবে অনেক জামাই এখন স্বাস্থ্য সচেতন। রসগোল্লার হাঁড়ির বদলে বেকড্ রসগোল্লাও পছন্দ অনেকের। কারও আবার রোগব্যাধির ঠেলায় মিষ্টি মানা। কিন্তু একটা দিন মিষ্টিমুখ না করালে চলে! তাঁদের জন্য রয়েছে সুগার ফ্রি মালাই চিত্তরঞ্জন।
ইদের পরেই জামাইষষ্ঠী। জোড়া উৎসবে মুখে হাসি বর্ধমান শহরের ব্যবসায়ীদেরও।
মেহেদিবাগান এলাকার একটি মিষ্টির দোকানে ঢুকতেই দেখা যায়, ট্রে-তে সাজানো ছানার সন্দেশের উপর লাল-সবুজে ‘জামাইষ্ঠী’ ছাপ। চেনা, চিরাচরিত মিষ্টির সঙ্গে রয়েছে ফ্রাই কালাকাঁদ, ফ্রাই রোল, গ্রানাইট সন্দেশের মতো ‘ফিউশন মিষ্টি’ও। দোকান মালিক সৌমেন দাস জানান, এই সব মিষ্টি জামাইষষ্ঠীর জন্যই বিশেষ ভাবে বানানো হয়েছে। চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। যাদবপুর থেকে কারিগর এনে যাদপপুর রোল নামে বিশেষ মিষ্টি বানানো হয়েছে বলেও তাঁর দাবি। দানাদারের মতো ভেতরের অংশের সঙ্গে উপরের মোড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ক্রিম ও ছানার পরতকে। ফরাক্কায় শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে বর্ধমানের দুই বাসিন্দা সন্তোষ ভকত ও গনেশ ভকতও জামাইষষ্ঠী ছাপ দেওয়া মিষ্টি কিনে নিয়ে গেলেন। ভাঙাকুঠি এলাকার সুলেখা মণ্ডল আবার জামাইয়ের জন্য রসগোল্লা, দইয়ের পাশাপাশি নিয়ে গেলেন কাটলেট সন্দেশ।
বিবি ঘোষ রোডের একটি দোকানেও দেখা মিলল জামাইষষ্ঠী স্পেশ্যাল প্রায় কুড়ি থেকে পঁচিশ রকমের নতুন মিষ্টির। পটল ভোগ, ক্ষিরের টোস্ট, কাজু কোর্মার সঙ্গে দেদার বিকোচ্ছে সুগার ফ্রি লাড্ডু। সকাল থেকেই দোকানে ক্রেতাদের ভিড়ও লেগেই রয়েছে। বর্ধমান ষ্টেশন এলাকার একটি মিষ্টির দোকানে আবার ছবিটা অন্য। সেখানেই বিক্রি হচ্ছে সুগার ফ্রি মালাই চিত্তরঞ্জন। তাদের দাবি, শারীরিক নানা সমস্যায় অনেকেই এখন মিষ্টিতে না বলছেন। সেই সব জামাইদের জন্যই এই ব্যবস্থা। দোকান মালিক প্রমোদ সিংহ জানান, এই মিষ্টির পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির উপর বেশি জোর দিয়েছেন তাঁরা। রসগোল্লা, ল্যাংচা, সীতাভোগ, মিহিদানা, দই এ সবের চাহিদা বরাবরের বলে তাঁর দাবি। একই কথা কাঞ্চননগর এলাকার মিষ্টি ব্যাবসায়ী মনোরঞ্জন মালিকেরও।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এখন ইদের দিন অন্যের বাড়ি যাওয়ার সময় মিষ্টি নিয়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে। ফলে বিশেষ মিষ্টির চাহিদা ছিলই। তার পরেই জামাইষষ্ঠী এসে যাওয়ায় বাজার জমেছে ভালই।