বিয়ের বাইরে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হলে যেতে হতে পারে জেলে, মঙ্গলবার এমনই আইন পাশ হল ইন্দোনেশিয়ার আইনসভায়। ছবি: রয়টার্স
বিয়ের আগে সঙ্গম দণ্ডনীয় অপরাধ। স্বামী কিংবা স্ত্রী ছাড়া আর কারও সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক বৈধ নয়। বিয়ের বাইরে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হলে যেতে হতে পারে জেলে। বিবাহ-বহির্ভূত সঙ্গম প্রমাণিত হলে এক বছরের কারাবাস হতে পারে। মঙ্গলবার এমনই আইন পাশ হল ইন্দোনেশিয়ার আইনসভায়। আইন পাশ হওয়ার পরই শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
আইন পাশের পর ইন্দোনেশিয়ার আইন ও মানবাধিকার মন্ত্রী ইয়াসোনা লাওলি এই আইনকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন। এই ধরনের আইনে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হতে পারে বলে যে অভিযোগ উঠছে, তাতে কান দিতে নারাজ তিনি। জানান, সব দিক বিবেচনা করেই নতুন এই আইন আনা হয়েছে। এত দিন দেশে যে ফৌজদারি বিধি প্রচলিত ছিল, সেটিকে ঔপনিবেশিক বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। চলতি সপ্তাহেই ইন্দোনেশিয়ার উপ-আইনমন্ত্রী এডওয়ার্ড ওমর শরিফ হিয়ারিজ় সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কয়েক দশক ধরেই নতুন কিছু ফৌজদারি আইন আনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। এই আইন তারই অংশ।
বিবাহ-বহির্ভূত সঙ্গম প্রমাণিত হলে এক বছরের কারাবাস হতে পারে। —ফাইল চিত্র
নতুন আইনে অভিযুক্তের স্বামী, স্ত্রী, সন্তান বা নিকট আত্মীয়রা প্রশাসনে অভিযোগ জানাতে পারবেন। শুধু সঙ্গমই নয়, এই আইনে অবিবাহিত নারী-পুরুষদের একত্রবাসও নিষিদ্ধ হবে। ইন্দোনেশিয়াতে সমকামী বিবাহ নিষিদ্ধ, তাই নতুন আইন আসার পর সমকামীরাও চরম সমস্যায় পড়বেন বলে মনে করা হচ্ছে। আইনটি ব্যক্তিস্বাধীনতার উপর বড় আঘাত বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মীদের একাংশ। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইন্দোনেশিয়ার ডিরেক্টর উসমান হামিদ জানান, এই ধরনের কট্টর আইনের ফলে, এক সময়ে ধর্মনিরপেক্ষতা ও উদার সংবিধানের জন্য পরিচিত ইন্দোনেশিয়া ক্রমশ পিছনের দিকে যাচ্ছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক থেকে ইন্দোনেশিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। মানবাধিকার কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, ক্রমেই বিভিন্ন কট্টরপন্থী মুসলিম সংগঠন শক্তিশালী হয়ে উঠছে সেখানে। দুর্বল করে দিচ্ছে দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো। মানবাধিকারের পাশাপাশি আঘাত নামছে সংখ্যালঘুদের উপরেও।