যে সব তরুণের মনের কথা সুন্দর করে গুছিয়ে প্রেমপত্রে লিখতে অসুবিধা হয়, এ বার তাঁদের মুশকিল আসান করবে ‘চ্যাটজিপিটি’। ছবি: শাটারস্টক।
ঠাকুরমা-ঠাকুরদা, মা-বাবা কিংবা কাকা-কাকিমা— সকলের প্রেম কাহিনির প্রসঙ্গ উঠলেই একটা জিনিস থাকবেই। আর তা হল প্রেমপত্র! তবে মোবাইলের বাড়বাড়ন্তের পর হাতে লেখা প্রেমপত্র এখন অতীত। লিখিত মাধ্যমে প্রেম প্রকাশের তুলনায় ফোনে কথা বলেই প্রেম বিনিময় করতে বেশি উৎসাহী এখনকার তরুণ প্রজন্ম। তবে এই বছরের প্রেম দিবসে ‘চ্যাটজিপিটি’-র হাত ধরে আবার ফিরতে পারে প্রেমপত্রের যুগ! যে সব তরুণের মনের কথা সুন্দর করে গুছিয়ে প্রেমপত্রে লিখতে অসুবিধা হয়, এ বার তাঁদের মুশকিল আসান করবে ‘চ্যাটজিপিটি’।
চ্যাটজিটিপি বা ‘জেনারেটিভ প্রিট্রেনড ট্রান্সফর্মার’ হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৃহত্তম একটি অদৃশ্য যন্ত্র। অনলাইনে যে কোনও ধরনের তথ্য খুঁজতে মুহূর্তের মধ্যে আকাশপাতাল এক করে ফেলে সেই তথ্য ব্যবহারকারীর সামনে তুলে ধরবে চ্যাটজিপিটি। নিত্যদিনের কাজ কী ভাবে কম সময়ে আরও সহজ করে ফেলা যায়, তা নিয়ে গবেষণা চলে বিস্তর। সেখান থেকেই জন্ম হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার।
গত বছরের শেষের দিকে আত্মপ্রকাশ করলেও চ্যাটজিপিটি আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করল হালে। মাইক্রোসফ্টের দাবি, তথ্য সন্ধানের ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্রাউজ়ারের গতি আরও বাড়িয়ে আনার নিরন্তর চেষ্টা থেকেই এই ‘এআই’-এর জন্ম। সংস্থার সিইও সত্য নাদেলা বলেন, “সন্ধানের জগতে এই চ্যাটজিপিটি হল বিস্ময়ের আর এক নাম। গতিময় জীবনে আরও গতি এনে দিতে কাজ করবে এই প্রযুক্তি।”
সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, ভারতের প্রায় ৬০ শতাংশ তরুণ এ বছর প্রেম দিবসে চ্যাটজিপিটির সাহায্য নিয়ে প্রেমিকাকে প্রেমপত্র দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। যে আটটি দেশে এই ‘এআই টুল’-এর প্রচলন রয়েছে, তার মধ্যে ভারতেই তরুণদের মধ্যে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
ম্যাকাফি নামক সংস্থা ‘মডার্ন লাভ’ নামক এক জার্নালে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত করছে। মোট ন’টি দেশের ৫,০০০ মানুষকে নিয়ে এই সমীক্ষায় কী ভাবে এআই এবং ইন্টারনেট প্রেমের সম্পর্কে বদল এনেছে, তার একটি ধারণা নেওয়া হয়েছিল। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৬২ শতাংশ ভারতীয় পুরুষ প্রেম দিবসে প্রেমিকার মন জয় করার জন্য চ্যাটজিপিটির সাহায্য নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। মহিলাদের মধ্যে করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, ৪৯ শতাংশ মহিলারা চ্যাটজিপিটির সাহায্য নিয়ে লেখা প্রেমপত্র পেতে একেবারেই আগ্রহী নয়। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে, চ্যাটজিপিটির সাহায্য নিয়ে লেখা চিঠিগুলি এতটাই আসল মনে হয়েছিল যে, ৬৯ শতাংশেরও বেশি মানুষ সেইগুলির সঙ্গে কোনও ব্যক্তির লেখা প্রেমপত্রের মধ্যে ফারাক বলতে ব্যর্থ হয়েছে। ৬৫ শতাংশের বেশি মানুযই চ্যাটজিপিটির সাহায্য লেখা চিঠিটিই বেশি পছন্দ করেছে।