গরমে বিপদ বাড়াচ্ছে জন্ডিস

রাস্তায় দু’পা হাঁটলেই তেষ্টায় গলা শুকিয়ে কাঠ। প্রবল তাপে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে কাটা ফল, লেবু দেওয়া ঠান্ডা জলের সরবত, বরফ দেওয়া রঙিন জল আর হরেক রঙের আইসক্রিম।

Advertisement

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০১:৩০
Share:

রাস্তায় দু’পা হাঁটলেই তেষ্টায় গলা শুকিয়ে কাঠ। প্রবল তাপে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে কাটা ফল, লেবু দেওয়া ঠান্ডা জলের সরবত, বরফ দেওয়া রঙিন জল আর হরেক রঙের আইসক্রিম।

Advertisement

আর এই স্বস্তিই ডেকে আনছে বিপদ। চিকিৎসকেরা জানান, মে মাসের প্রথমেই জলবাহিত রোগে আক্রান্ত আট থেকে আশি— সব বয়সের মানুষ। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে— হেপাটাইটিস এ এবং ই-তে আক্রান্তের সংখ্যা বা়ড়ছে হুহু করে। গরমে জলবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ বছর তা আরও বেড়েছে। সঙ্গে সর্দি-কাশি-জ্বর লেগেই রয়েছে।

শিশু-রোগ বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, একেবারে ছোটদের জন্ডিসের প্রকোপ তেমন নেই। কারণ, তাদের বেশির ভাগেরই হেপাটাইটিস এ এবং ই প্রতিষেধক টিকাকরণ হয়েছে। সমস্যা বেশি কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে। কারণ, বছর দশেক আগেও হেপাটাইটিস এ এবং ই-এর টিকাকরণ নিয়ে বেশি সচেতনতা ছিল না। তা ছাড়া, এই বয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে স্কুল থেকে ফেরার পথে রঙিন সরবত, আইসক্রিম খাওয়ার প্রবণতা সব চেয়ে বেশি। ফলে জলবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তাদের বেশি। শিশু-রোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলেন, ‘‘বিশুদ্ধ জল নিয়ে বাড়তি সচেতনতা দরকার। জন্ডিস হলে কম করে এক থেকে ছ’মাস লাগে পুরো সুস্থ হতে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:নিয়মিত সানস্ক্রিনের ব্যবহারে ভিটামিন ডি-র অভাবে ভুগছেন ১০ কোটি মানুষ

তবে, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে জন্ডিসের প্রকোপ আরও বেশি। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ও মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানান, বিশুদ্ধ জল খাচ্ছেন কি না, তা দেখা যেমন জরুরি, তেমনই যে পাত্রে খাবার বা জল খাওয়া হচ্ছে, সেটি কতটা পরিষ্কার, সে দিকেও নজর দেওয়া দরকার। এ সময়ে জলের অভাব দেখা যায়। তাই বাড়তি সচেতনতার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। চিকিৎসক প্রবীর বিশ্বাস জানান, অনেকেই এখন জ্বরে ভুগছেন। প্রথমে ভাইরাল মনে হলেও দেখা যাচ্ছে, জন্ডিস হয়েছে। গর্ভবতীদের মধ্যে হেপাটাইটিস ই বেশি দেখা যাচ্ছে। তাঁদের বা়ড়তি সচেতন হওয়া জরুরি।

জন্ডিসের উপসর্গ কী কী? বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, হেপাটাইটিস এ এবং ই-তে আক্রান্ত হলে পেটের ডান দিকে ব্যথা হয়। খিদে পায় না, বমি-বমি ভাব হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ, খাবারের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া দরকার। কম মশলার খাবার খাওয়া উচিত, যা সহজেই হজম হয়ে যাবে। রঙিন সরবত, কাটা ফল না খেতেই বলছেন চিকিৎসকেরা।

জন্ডিসের পাশাপাশি মিশ্র আবহাওয়ার জেরে সর্দি-কাশি-জ্বর-গলা ব্যথার প্রকোপও দেখা দিচ্ছে। এ থেকে বাঁচতে এসি-র ব্যবহার কমাতে জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement