সারা দিন বাইরে কাজ করে রাতে বাড়িতে ঢুকে যখন দেখেন, প্রিয় পোষ্যটি দরজার সামনে লেজ নাড়ছে, মন ভাল হয়ে যায়। আবার রাতবিরেতে মনখারাপ হলে কোলের কাছে যখন টেনে নেন নরম নরম তুলোর মতো বিড়ালছানাটিকে, মনখারাপও সেই সঙ্গে উধাও। বাড়িতে পোষ্য থাকা মানে কতশত মনখারাপ, হতাশা, বিরক্তি উধাও। কিন্তু কাজ? সেটা বেড়ে যায় বহু গুণ। কোনও প্রাণীর দেখভাল করার কাজটা মোটেও সহজ নয়। আর তার সঙ্গেই জড়িয়ে থাকে হাইজিনের প্রসঙ্গ। বাড়িতে পোষ্য থাকা মানে ঘর নোংরা হবেই। লোম থেকে নানা রোগও ছড়ায়। কিন্তু পোষ্য রেখেও কী ভাবে হাইজিন রক্ষা করবেন?
• পোষ্যকে যথাসম্ভব পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। অনেক সময়েই বাড়ির সামনের চত্বরে কুকুর-বিড়াল খেলতে বেরোয়। বাইরে থেকে পোষ্য এলে পা ধুইয়ে দিন। এতে মেঝে সর্বত্র নোংরা হয় না। পোষ্যকে স্নান করানোর পরে ড্রায়ার দিয়ে বা তোয়ালের সাহায্যে জল শুকিয়ে নিন। না হলে সেই জল পড়ে যত্রতত্র নোংরা হতে পারে।
• লোম পরিষ্কারের বিশেষ গ্লাভস কিনতে পাওয়া যায়। তা ব্যবহার করে তাদের খসতে থাকা লোম পরিষ্কার করুন। এতে লোম এক জায়গায় জড়ো করা সহজ হবে।
• পোষ্যকে পোশাক পরিয়ে রাখা মানে কিন্তু শুধুই তাকে ফ্যাশনদুরস্ত করে তোলা নয়। এতে অনেক সময়ে লোমও আটকে যায় পোশাকে।
• বাড়িতে পোষ্য থাকলে ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের উপরে ভরসা করা ছাড়া গতি নেই। তবে সে ক্ষেত্রে ভাল মানের ক্লিনার কিনুন। স্ট্রং সাকশন, ভাল মানের ফিল্টার এবং ব্রাশ থাকলে লোম ও ময়লা পরিষ্কারের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। সোফা, কার্পেট, আসবাব... সব কিছুই পরিষ্কার করুন নিয়মিত।
• পোষ্যের জন্য নির্দিষ্ট লিটার বক্স রাখুন। শুরু থেকে সেই বক্সেই মলত্যাগ করার অভ্যেস করান। প্রত্যেক দিন সেই বক্স পরিষ্কার করার দায়িত্ব আপনারই।
• পোষ্যের ঘুমোনোর জন্যও আলাদা বেডিংয়ের ব্যবস্থা করুন। সেই বেডিংও নিয়ম করে পরিষ্কার রাখুন। এমন বেডিংও কিনতে পারেন যা পরিষ্কার করা যায় সহজে।
• পোষ্যের খাবার প্যাকেটজাত হলে তা ঠিক ভাবে স্টোর করুন। ওদের নাগালে থাকলে তা ছড়িয়ে ঘর নোংরা হয়।
• পোষ্যের গ্রুমিং ও ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা দরকার। সে সুস্থ থাকবে, আবার জীবাণু ছড়িয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও অসুস্থ হবে না।
• পোষ্যের খাওয়ার জায়গা নির্বাচন করুন। এতে খাওয়ার সময়ে শুধুমাত্র সেই জায়গাটুকুই নোংরা হবে। পরিষ্কারের কাজও সহজ হবে।
• প্রত্যেক বার পোষ্যকে আদর করেই হাত ধোয়া সম্ভব নয়। হাতের কাছে স্যানিটাইজ়ার রাখুন। খাওয়ার আগেও হাত ধুয়ে নিন।
• পোষ্যের গায়ের গন্ধ থেকে রেহাই পেতে ব্যবহার করুন রুম ফ্রেশনার।
• অনেক পোষ্যেরই সোফা আঁচড়ানোর অভ্যেস থাকে। সে ক্ষেত্রে পেট স্ক্র্যাচিং পিস রাখুন ঘরে।
বাড়িতে পোষ্য থাকলে তার যত্নআত্তির পাশাপাশি বাড়িঘর পরিষ্কার রাখার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তবেই না সকলে মিলে একসঙ্গে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবেন!