HOME DECORATION

বাঙালিয়ানা দিয়ে ঘর সাজাতে চান? পকেটসই দামে কোথায় মিলবে উপকরণ?

সহজে মিলবে, পকেটসই এমনই কিছু ঘর সাজানোর উপাদানের হদিশ রইল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৯ ১৮:২৫
Share:

ঘর সাজান গ্রাম বাংলার নানা উপাদান দিয়ে।

ঘর সাজাতে ভালবাসেন সবাই। রুচির ফেরে এক এক জনের অন্দর হয়ে ওঠে এক একটা স্বতন্ত্র ভুবন। স্থপতিরা তো বলেই থাকেন আপনার অন্দরই আপনার ব্যক্তিত্বের দর্পণ। কিন্তু অনেকেই এই ঝকমারি এড়াতে চান। খরচের ভয় পান। তবে বুদ্ধি থাকলে আর চেনাজানার পরিধি বাড়লে, সস্তায় ঘর সাজানো খুব কঠিন কাজ নয়। আপামর বাংলার গ্রাম উঠে আসতে পারে আপনার ড্রয়িং রুমে।

Advertisement

লোকশিল্পের উপাদান দিয়ে ঘর সাজানোর চল নতুন নয়। আগেও বাঙালিয়ানার অঙ্গ হিসেবে ঘু্র্ণির মাটির পুতুল বা শীতলপাটি থাকতই। সহজেই ফিরিয়ে আনা যায় সেই ঐতিহ্য। খুব অল্প খরচে উৎসবের সময়ে আপনার প্রিয় ঘরটি হয়ে উঠতে পারে ষোলো আনা বাঙালিয়ানার প্রতীক।

কিন্তু কোথায় কোন জিনিস বিখ্যাত, কোন অঞ্চলের কোন কোন বিশেষত্ব দিয়ে সাজাবেন ঘর, এ চিন্তাও মনে ভিড় করে আসে বইকি। সহজে মিলবে, পকেটসই এমনই কিছু ঘর সাজানোর উপাদানের হদিশ রইল।

Advertisement

আরও পড়ুন: গরম থেকে বাঁচতে ব্যাগ, ছাতা, জলের বোতল ছাড়াও ব্যাগে রাখুন এ সব

ব্রোঞ্জ কাস্টিং করে নানা ডোকরার মূর্তি দিয়ে সাজাতে পারেন ঘর।

পিংলার পট: দিনের দিন ঘুরে চলে আসা যায় পিংলা। সেখানে নতুনগ্রামের পট বিক্রেতাদের সঙ্গে মোলাকাত সত্যি এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা হতে পারে। সস্তা দরে কিছু জড়ানো পটও কিনে আনতে পারেন।

কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুল: শোকেস বা ঘরের কোণের শেল্‌ফটি সেজে উঠুক ঘুর্ণির মাটির পুতুলে। কৃষ্ণনগর থেকে ঘুর্ণির দূরত্ব এমন কিছু নয়। ঘোরাও হবে আবার পুতুল কিনে পেরাও যাবে যদি হাতে একটু সময় লাগে। পুতুল পাবেন ১০০ টাকারও কম দামে।

নতুনগ্রামের পেঁচা: শহরের শীতকালীন মেলায় আসে নতুনগ্রামের প্যাঁচা। অগ্রদ্বীপের এই নতুনগ্রাম অঞ্চলের অধিবাসীরা কয়েক শতক ধরে বংশ পরম্পরায় নিমকাঠ চিড়ে এই প্যাঁচা বানিয়ে আসছন। শো পিস হিসাবে এদের জুড়ি নেই। ইদানীং মূল মোটিফটাকে রেখে নানা আসবাবও বানান নতুনগ্রামের শিল্লীরা। ব্যবহার করা যেতে পারে সেই আসবাবও। মেলাগুলিতে দরদাম করে কিনতে পারেন। তবে নিজে গিয়ে কিনলে বেশি ভাল।

আরও পড়ুন: মাড়ি থেকে রক্ত পড়ায় অবহেলা? বড় অসুখ ডেকে আনছেন না তো!

নিমকাঠ চিড়ে বানানো প্যাঁচায় ঘর সাজান।

বাঘমুন্ডির ছৌ নাচের মুখোশ: পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি অঞ্চলের চরিদা গ্রামে কয়েক ঘর মুখোশশিল্পী বাস করেন। অনুপম দক্ষতায় তাঁরা তৈরি করেন নানা ধরনের মুখোশ। প্রতিটি মুখোশের অভিব্যক্তি আলাদা। তিনশো টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা দামের মধ্যে নানা আকারের মুখোশ পাওয়া যায় শিল্পীদের ঘরগুলিতে। সরকারি মেলায় স্টলও দেন মুখোশশিল্পীরা। আপনার দেওয়াল সেজে উঠতে পারে একটি জমকালো মুখোশে।

বাঁকুড়ার ডোকরা: ডোকরা বাঁকুড়ার গর্ব। বাঁকুড়ার বিকনা গ্রামে ব্রোঞ্জ কাস্টিং করে নানা ডোকরার মূর্তি বানানো কয়েক শতক ধরে চলে আসছে। কর্মকারদের এই অনন্য সৃস্টি আপনার বাড়ির যে কোনও কোণে রাখলে তাতে আলাদা করে সকলের চোখ পড়তে বাধ্য।

কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুলে আস্থা রাখুন।

এ তো গেল মূল অনুষঙ্গের কথা। আরও ছোটখাটো জিনিসও সংগ্রহ করতে পারেন। পড়ার ঘরে টেবিলের এক কোণে বর্ধমানের তালপাতার সেপাই স্থান পেতে পারে। কার্পেটের বিকল্প হিসেবে জায়গা দিন শীতলপাটিকে। ঘরে ঝুলতে পারে তালপাতার পাখাও। কাঁসা পিতলের থালা উৎসবের দিনগুলিতে ব্যবহার হোক। লোডশেডিং হোক বা না হোক দেওয়াল সাজাতেই সহায় হতে পারে হ্যারিকেন। তোয়ালের জায়গা অনায়াসে দখল করতে পারে শান্তিপুরী গামছা।

ডিজিটাল যুগে মিশ্র সংস্কৃতির দাপটকে পাল্লা দিতে ঘর থেকেই শুরু করুন যুদ্ধটা। লোকশিল্পীদেরও খানিক বিত্রিবাটা বাড়বে, আপনার নিজের ঘরটাও হয়ে উঠবে পাঁচ জনের থেকে আলাদা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement